নির্বাচনের মাধ্যমে সংকটের সমাধান হবে :ইংলাক

বিরোধীদের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও ২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা। চলমান সংকট নিরসনে নির্বাচনই সর্বোত্তম পন্থা বলেও গতকাল বুধবার মন্তব্য করেন তিনি। এদিকে, প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী অভিজিত ভেজ্জাজিভার বাসভবনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। খবর :এএফপি, রয়টার্স ও এপি। চলমান সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে থাইল্যান্ডের নির্বাচন কমিশন নির্বাচন স্থগিতের পরামর্শ দেয়। তাদের এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করতে গতকাল বৈঠক ডেকেছিলেন নির্বাচনকালীন প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা। তবে বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও স্বাধীনচেতা নির্বাচন কমিশনাররা এতে অংশ নেননি। ইংলাকের বৈঠকে তার মন্ত্রিসভার সদস্য, নিবন্ধিত প্রার্থী ও শীর্ষ নির্বাচনী কর্মকর্তারা যোগ দেন। এ বৈঠকে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের জন্য নির্বাচন পেছানোর কোনো আইনি উপায় নেই। ২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনটি স্থগিতকরণ সংবিধান সমর্থন করবে না বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। ইংলাক বলেন, 'জনগণ যদি এই সরকারকে না চায় তবে তাদের ভোটে যাওয়া উচিত।' মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর প্রধান অর্থনৈতিক এলাকায় সরকারবিরোধী র‌্যালিতে অজ্ঞাত বন্দুকধারীর গুলিতে দুই ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এ ছাড়া অভিজিত ভেজ্জাজিভার বাসভবনে ছোট আকারের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে অবশ্য কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণে বাসার ছাদের অংশবিশেষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় বাসায় কেউ ছিলেন না।
ইংলাকের বিরোধীরা ফেব্রুয়ারির এ নির্বাচনটি চায় না। কারণ এতে ইংলাকেরই সহজ জয়লাভের সম্ভাবনা খুব বেশি। বিগত সময়ের নির্বাচনগুলোয় তাই-ই দেখা গেছে। প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টিসহ সরকারবিরোধীরা চাচ্ছে ইংলাক সরকারের পরিবর্তে অনির্বাচিত একটি গণপরিষদকে ক্ষমতায় আনতে। তাদের দাবি, কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে রাজনৈতিক সংস্কার করতে হবে এবং এজন্য ইংলাক সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। ইংলাক পদত্যাগে অস্বীকার করে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করেন। কিন্তু নির্বাচনে অংশ নিতেও আপত্তি জানিয়েছে বিরোধীরা। থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে ইংলাকের ভাই ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার প্রভাব কমানোই বিরোধীদের প্রধান লক্ষ্য।
গতকাল তৃতীয় দিনের মতো 'ব্যাংকক অচল' কর্মসূচি পালন করে বিরোধীরা। তবে রাস্তায় আগের দু'দিনের তুলনায় অনেক বেশি গাড়ি চলতে দেখা যায়। এতে আন্দোলন গতি হারাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। গতকালও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বক্তব্য দিয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা সুথেপ থাউগসুবান। এদিকে, গতকালই এক টেলিভিশন বক্তব্যে থাই উপপ্রধানমন্ত্রী সুরাপং তোভিচাকচাইকুল অবিলম্বে সুথেপ ও সহযোগীদের গ্রেফতারে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। অভিজিত, সুথেপসহ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে হত্যা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ২০১০ সালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে সেনাবাহিনী অভিযান চালালে শতাধিক লোক নিহত হয়। সে সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন অভিজিত এবং উপপ্রধানমন্ত্রী ছিলেন সুথেপ।

No comments

Powered by Blogger.