রাসায়নিক অস্ত্রের অভিযোগ মিথ্যারকাফেলা

বিদ্রোহীদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগকে ‘মিথ্যার কাফেলা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে সিরীয় সরকার। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাহিনী যুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে—এ অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্র বিদ্রোহীদের অস্ত্র দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর সিরিয়া এ প্রতিক্রিয়া জানাল। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বিদ্রোহীদের সামরিক সহায়তা দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার কড়া সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ ও সিরিয়ার মিত্র রাশিয়া। রাশিয়া বলেছে, রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ বিশ্বাসযোগ্য নয় এবং দেশটির অভ্যন্তরে ‘উড্ডয়ন নিষিদ্ধ এলাকা’ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হবে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিদ্রোহীদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়াকে ন্যায্য বলে প্রতিষ্ঠিত করতে ওয়াশিংটন রাসায়নিক অস্ত্রের ‘বানানো তথ্য’ হাজির করেছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের ‘সস্তা ফন্দি’ ও ‘মিথ্যার কাফেলা’। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ গত শনিবার মস্কো সফররত ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমা বোনিনোর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে তাঁরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে লাভরভ বলেন, জর্ডানে রাখা প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ও এফ-১৬ জঙ্গি বিমান দিয়ে সিরিয়ার অভ্যন্তরে ‘উড্ডয়ন নিষিদ্ধ এলাকা’ বলবৎ করার চেষ্টা করা হলে তা হবে আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে যে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হবে তা বোঝার জন্য আপনাকে বিরাট কোনো বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার নেই।’ এদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বলেছেন, সামরিক পদক্ষেপ সিরিয়া-সংকটের অবসান ঘটাতে পারবে না। একমাত্র রাজনৈতিক উপায়েই তা সম্ভব। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সিরিয়া নিয়ে এ বিতর্কের প্রেক্ষাপটেই আগামীকাল সোমবার উত্তর আয়ারল্যান্ডে শিল্পোন্নত আট দেশের জি-৮ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ সম্মেলনে সিরিয়ার বিরুদ্ধে ‘ব্যবস্থা নেওয়ার’ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হওয়ার কথা। যুক্তরাষ্ট্র গত সপ্তাহে জর্ডানে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ও এফ-১৬ বিমান নিয়ে গেছে। এটিকে নিয়মিত বার্ষিক মহড়ার অংশ দাবি করা হলেও এটি স্পষ্ট যে, সিরিয়ার যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেগুলো ফিরিয়ে নেওয়া হবে না। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে জেনেভায় সিরিয়ার সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে প্রথমবারের মতো আলোচনা হওয়ার কথা। রুশ প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ইউরি উসাকোভ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সিরিয়াবিরোধী তৎপরতা জেনেভা আলোচনাকে বাধাগ্রস্ত করবে। দুজন শীর্ষস্থানীয় পশ্চিমা কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে বলেছেন, জর্ডানের সীমান্তসংলগ্ন সিরিয়ার দক্ষিণ সীমান্ত এলাকায় যুক্তরাষ্ট্র ‘উড্ডয়ন নিষিদ্ধ এলাকা’ বলবৎ করার চেষ্টা করছে।ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, জর্ডানের সীমান্তবর্তী সিরিয়ার প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ‘উড্ডয়ন নিষিদ্ধ এলাকা’ ঘোষণা করা হবে।
নিউইয়র্ক টাইমস বলেছে, সিরিয়ার বিদ্রোহীদের কাছে যুক্তরাষ্ট্র আপাতত যেসব অস্ত্র পাঠাচ্ছে তার মধ্যে থাকবে হালকা অস্ত্র, গুলি ও ট্যাংকবিধ্বংসী অস্ত্র। বিবিসি, এএফপি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.