শৃঙ্খল ভেঙে সার্বজনীন উৎসবে by ইসমাইল হোসেন

স্বাধীনতার চার দশক পরও যখন অপশক্তিগুলো দেশকে শৃঙ্খলায় আবদ্ধ করতে চায়, ১৪২০ বঙ্গাব্দের প্রথম দিনটি নারী-পুরুষের বাধভাঙা ঢেউ সেই শৃঙ্খল ভেঙে সার্বজনীন উৎসবে পরিণত করেছে রমনা বটমূল।
পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে প্রতি বছরই রাজধানীর রমনা বটমূলে ছায়ানট আয়োজন করে বর্ষবরণের উৎসব।
 
রোববার ভোরের আলো ফোটার আগেই নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসতে থাকে সব বয়সী, সব শ্রেণীর মানুষ। সকাল ৭টার আগেই বটমূলের মূলমঞ্চ পূর্ণ হয় উৎসবে আসা মানুষের উপস্থিতিতে।Ramna

রমনা পার্কের সবকটি প্রবেশ পথ দিয়ে দলে দলে প্রবেশ করছে শত সহস্র মানুষ। বয়স-শ্রেণী-পেশা-ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে সবাই এসেছেন বাঙালির চিরায়ত দিনটিকে বরণ করতে। বিদেশিরাও শামিল হয়েছেন বাঙালির প্রাণের উৎসবে।

সাত সকালে নগরীর উত্তরা থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে বর্ষবরণ উৎসবে এসেছেন সাত বছর বয়সের অর্ণব। সাদা পাঞ্জাবি পরা অর্ণব জানায়, নববর্ষকে বরণ এবং দেশের গান শুনতে এসেছি।

অর্ণবের বাবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইকবাল বলেন, “বাঙালির প্রাণের উৎসবে যোগ না দিতে পারলে অপূর্ণতা থেকে যায়। আজকের উৎসবে যোগ দেওয়া মানুষের ভাষাই বলে দেয় মৌলবাদীরা দেশকে যে শৃঙ্খলে আবদ্ধ করতে চাইছে তা এদেশের মানুষ কোনো দিন মানবে না।”

বাঙালির চিরায়ত পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণ কায়মনে বাঙালি হয়ে ফুটেছে এ দিনের ভোরের আলো।

রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রোকসানা পারভীন বলেন, “পহেলা বৈশাখ আমাদের সার্বজনীন উৎসব। এই দিনটি সব ভেদাভেদ ভুলে সব শ্রেণী-পেশার মানুষকে এক সুতোয় বাঁধে।”
 Ramna
নিরাপত্তার কোনো কমতি নেই সার্বজনীন এ উৎসবে। সকালেই পুলিশের মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা রমনায় এসেছেন নিরাপত্তা তদারকি করতে।

একদল পুলিশ সদস্যকে উপস্থিত সমবেতদের মাঝে মিঠাই বিতরণ করতেও দেখা গেছে।

সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামকেও দেখা গেছে ছায়ানটের অনুষ্ঠানস্থলের পাশে।

অন্যদিকে সকাল থেকেই নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে সঙ্গীত এবং কবিতা পরিবেশন করছেন ছায়ানটের শিল্পীরা। তাদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, উপস্থিত হাজার হাজার মানুষের পরনে লাল-সাদা-সবুজ কাপড় অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার প্রত্যয় ফুটিয়ে তুলেছে রমনার বটমূলে।

No comments

Powered by Blogger.