সরকারী চাকরি বাজারে 'ডাক' উঠেছে তবে আমলা চাতুর্যে পরাস্ত মন্ত্রীরা by মামুন-অর-রশিদ

 সরকারী চাকরির বাজারে আবার রীতিমত 'ডাক্' উঠেছে। বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে সরকারের বিভিন্ন পদে চাকরি মিলেছে।
বর্তমান মহাজোট সরকারের আমলেও প্রাথমিক শিৰক নিয়োগ থেকে শুরম্ন করে স্বাস্থ্যসহকারী নিয়োগ, ভূমি মন্ত্রণালয়ে এমএলএসএস নিয়োগ থেকে চিকিৎসক নিয়োগ কিংবা থানা পলস্নী উন্নয়ন কর্মকর্তা অথবা অডিটর এবং প্রতিরৰা অডিটর নিয়োগ- সর্বত্রই পূর্ববর্তী জোট সরকারের মতোই চলছে টাকার খেলা । যে পদে আয়ের সুযোগ (ঘুষ) বেশি সেই পদে নিয়োগে ডাকের অর্থের পরিমাণ বেশি। ৰেত্রভেদে পদের গুরম্নত্ব অনুযায়ী দর কষাকষির অর্থ চার/পাঁচ লাখ থেকে দশ/পনেরো লাখ পর্যনত্ম উঠছে। সরকারের মন্ত্রী ও আমলাদের মধ্যে লেনদেনের সুরাহা করতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। তবে চাকরি দেয়ার জন্য অর্থ লেনদেনের ৰেত্রে আমলাদের চাতুর্যের কাছে এমপি-মন্ত্রীরা একের পর এক হার মানছেন। ফলে অধিকাংশ পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া মাসের পর মাস ঝুলে থাকছে।
বর্তমান মহাজোট সরকারের আমলেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিৰক পদে নিয়োগের জন্য তিন থেকে পাঁচ লাখ, স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগের পাঁচ থেকে সাত লাখ, চিকিৎসক নিয়োগ ১০ থেকে ১৫ লাখ আর বিআরডিবি'র থানা কর্মকর্তা পদে সাত থেকে দশ লাখ টাকায় রফা হচ্ছে বলে সংশিস্নষ্ট বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। খাদ্য পরিদর্শক পদের ডাক নাকি আরও অনেক বেশি বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। বিভিন্ন পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে প্রভাবশালীদের ঘনিষ্ঠ যারা অর্থ লেনদেন করছেন তারা নগরীর নির্ধারিত কয়েকটি এলাকায় আনাগোনা করছে। দেশের দৰিণাঞ্চলের কয়েকটি জেলার স্বাস্থ্যসহকারী ও প্রাথমিক শিৰকের চাকরি প্রার্থী অনেক যুবক-যুবতী এই প্রতিবেদকের কাছে টাকার অফার নিয়ে এসেছিল। চাকরি না হলেও টাকাটা ফেরত পাবে এই নিশ্চয়তা থেকেই তারা সাংবাদিকদের মাধ্যমে লেনদেন করতে চান বলে জানিয়েছেন। এৰেত্রে ব্যর্থ হয়ে তারা চাকরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় টাকা দেয়ার কথা জানিয়েছেন। যারা চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তারা এমপি, মন্ত্রী ও আমলাদের ঘনিষ্ঠজন হিসাবে নিজেদের পরিচয় তুলে ধরছেন। এককালীন সব টাকা পরিশোধ না করে বিভিন্ন সত্মরে এই টাকা দেয়ার চুক্তি হচ্ছে। লিখিত পরীৰার সময় মোট চুক্তির এক-তৃতীয়াংশ দিতে হয়,মৌখিক পরীৰার সময় দিতে হবে এক-তৃতীয়াংশ এবং চূড়ানত্ম নিয়োগপত্র পেলে চুক্তির বাকি অর্থ পরিশোধ করতে হবে- দালালদের সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীদের এমনই চুক্তি হচ্ছে। চাকরি প্রার্থী অনেকে যারা দালালদের টাকা দিয়েছেন তারাই জনকণ্ঠকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। আবার টাকায় কাজ হওয়ার প্রমাণও পাওয়া গেছে। সাতবার মেট্রিক পরীৰা দিয়ে যাকে মেট্রিক পাস করতে হয়েছে,স্বাস্থ্যসহকারী পরীৰা দিয়েই সে ঘোষণা দেয়-লিখিত পরীৰায় সে টিকবেই। পরীৰার ফলে দেখা গেছে, আসলেই সে টিকেও গেছে। এখন এই প্রার্থী বলছে, চাকরিও এবার তার হবে। তার এই বক্তব্যে এখন আর কেউ অবাক হচ্ছেন না।
নিয়মবহিভর্ূত পরীৰা অনুষ্ঠান এবং নিয়োগদানে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে স্থানীয় সরকার পলস্নী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ 'বাংলাদেশ রম্নরাল ডেভেলপমেন্ট বোর্ড' (বিআরডিবি) থানা পলস্নী উন্নয়ন কর্মকর্তা,সহকারী থানা পলস্নী উন্নয়ন কর্মকর্তা, থানা হিসাব রৰক এবং সহকারী থানা হিসাব রৰকের চারটি পদে চার শতাধিক নিয়োগ মন্ত্রণালয় থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার পলস্নী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক জনকণ্ঠকে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, নিয়োগবিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বিভাগীয় প্রার্থীদের যেখানে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা সেখানে তাদের পরীৰাই দিতে দেয়া হয়নি। আবার সংশিস্নষ্ট বিভাগীয় অভ্যনত্মরীণ প্রার্থীর অনেক কর্মকর্তার বয়স পার হয়ে যাওয়ার পরও তাদের ইন্টারভিউ কার্ড ছাড়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, নিয়োগ পরীৰার সঙ্গে জড়িত ও দায়িত্বশীলদের অনেকেরই পরিবারের সদস্যরা নিয়োগ পরীৰায় অংশ নিয়েছেন যা সাধারণ নিয়োগ নিয়মের পরিপন্থী। এ কারণে বিআরডিবি'র নিয়োগ বন্ধ রাখা হয়েছে বলে সংশিস্নষ্ট একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগ শাসনের প্রথম দিকে তদ্বিরবাজরা খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। তবে হালে তাদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে।
মহাজোট সরকারের এক বছরের মাথায় নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়ছে সরকারের সংশিস্নষ্ট এমপি মন্ত্রীদের ঘনিষ্ঠজন, পারিবারিক সদস্য, পিএস, এপিএস এবং দায়িত্বশীল আমলাদের সহযোগী থেকে পিয়ন- ড্রাইভার পর্যনত্ম। তবে অর্থের বিনিময়ে চাকরি প্রত্যাশী প্রার্থীদের ভাষ্য, রাজনৈতিক লবিতে টাকা দিয়ে খুব একটা কাজ হচ্ছে না। তাই তারা আমলাতন্ত্রের পেছনেই ছুটছেন। এৰেত্রে আমলাদের সঙ্গে চাকরি প্রার্থীদের সেতুবন্ধনের কাজ করছেন দায়িত্বশীল আমলাদের শ্বশুর পৰের আত্মীয়-স্বজন, আমলাদের অফিসসহকারী, পিয়ন এবং ব্যক্তিগত ড্রাইভাররা। সচিবালয়, মন্ত্রীপাড়া কিংবা বিভিন্ন শিৰা প্রতিষ্ঠানে চাকরি প্রার্থীদের ব্যক্তিগত আলাপচারিতা এবং ঢাকার বিভিন্ন নামীদামী হোটেলে পেশাদার তদ্বিরবাজদের আড্ডায় চাকরি প্রার্থীদের বিপুল অর্থ লেনদেনের কথা এখন বাতাসে ভাসছে। জোট আমলের মতোই গড়ে উঠেছে 'পেশাদার তদ্বিরবাজ' গ্রম্নপ। পেশাদার তদ্বিরবাজদের অনৈতিক লেনদেন মহাজোট সরকারের ভাবমূর্তি ধুলোয় মিশিয়ে দিচ্ছে। বিগত জোট আমলে বিশেষ ভবনের মাধ্যমে চাকরির লেনদেনের অভিযোগ ছিল। এবার তেমন কোন ভবন নেই।
আওয়ামী লীগ সরকারের গত এক বছরে বিআরডিবিতে চার শতাধিক কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগ পরীৰা, খাদ্য মন্ত্রণালয়ে ১২শ' কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগ পরীৰা হয়েছে। এছাড়া কাস্টমস ইন্সপেক্টর পদে ২শ' নিয়োগ, অডিট ইন্সপেক্টর নিয়োগ পরীৰা হতে যাচ্ছে ক'দিন বাদে। জানুয়ারির শুরম্নতেই অনুষ্ঠিত হয় সারাদেশে ৬ হাজার ৩শ' স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগ পরীৰা। স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগ পরীৰার এক সপ্তাহ পর অনুষ্ঠিত হয় সারাদেশে ৩০ হাজার প্রাথমিক শিৰক নিয়োগ পরীৰা। এছাড়া সারাদেশে ৪ হাজার ১শ' ৩৩ চিকিৎসক নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া কাস্টমস ইন্সপেক্টর নিয়োগ, অডিট ইন্সপেক্টর নিয়োগ পরীৰা হওয়ার কথা রয়েছে কয়েক দিনের মধ্যে। আগামী ২৬ ফেব্রম্নয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দু'শতাধিক পদে প্রতিরৰা অডিটর নিয়োগ পরীৰা। সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে মেধার ভিত্তিতে চাকরি নিশ্চিত করার কথা বলা হলেও আমলারা চাতুর্যপূর্ণ কৌশলে বিশেষ পারিতোষিকের বিনিময়েই নিজেদের খেয়াল-খুশিমতো নিয়োগ দিচ্ছেন বলে সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রীদের অভিযোগ। আর এই অভিযোগের কারণেই নিয়োগ পরীৰা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ছয় মাসের বেশি সময় ধরে আটকে আছে বিআরডিবি'র চার শ' কর্মকর্তা নিয়োগ প্রক্রিয়া।
চতুর আমলারা 'ফেয়ার' নিয়োগের কথা বলেই ৰমতাসীন রাজনৈতিক দলের এমপি, মন্ত্রীদের পাশ কাটিয়ে যাচ্ছেন। ফলে রাজনৈতিক লবিতে কনট্যাক্ট করে চাকরি প্রত্যাশীরা খুব কোন ফল পাচ্ছেন না। তার চেয়ে বরং আমলাদের লেজ ধরেই অনেকে কাঙ্ৰিত চাকরি নিশ্চিত করতে পেরেছেন। সেজন্য চাকরি পাওয়ার জন্য চাকরি প্রত্যাশীদের প্রদেয় অর্থ এখন অধিকাংশ ৰেত্রে আমলামুখী। বিভিন্ন চাকরির ৰেত্রে শিৰাগত যোগ্যতা সম্পন্ন দলীয় কর্মীদের তালিকা স্থানীয় সংসদ সদস্য কিংবা মন্ত্রীরা সংশিস্নষ্ট কর্তৃপৰকে হসত্মানত্মর করছেন সেসব তালিকার কেউই চাকরি পাচ্ছেন না। সর্বশেষ নিম্ন আদালতে ২শ'১৯ বিচারক নিয়োগের ৰেত্রে ঘটেছে এই ঘটনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩ ছাত্র যারা ছাত্রলীগ কর্মী হলেও লিখিত পরীৰায় পাস করেছে। তাদের ব্যাপারে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে সুপারিশ ছিল। কিন্তু সরকারী সুপারিশের কারণে কারওই চাকরি হয়নি। উল্টো রাজশাহী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিহ্নিত শিবির ক্যাডাররা নিয়োগ পেয়েছে বলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। বর্তমান মহাজোট সরকারের আমলে অর্থের লেনদেনে চাকরি হচ্ছে তবে এই চাকরি দেয়ার ৰেত্রে কোন দলবাজি হচ্ছে না।
তদ্বিরবাজিতে ৰমতাসীনদের আত্মীয়স্বজন এবং পরিবার পরিজনই প্রাধান্য পাচ্ছে। ৰমতাধর এমপি, মন্ত্রী আর আমলাদের প্রভাবশালী আত্মীয়দের কাছে ভোগ পাচ্ছে টাকাওয়ালা বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা। দলীয় কর্মীরা টাকা দিতে পারবে না কিংবা দিতে চাইবে না বলে এমপি, মন্ত্রী আর বড় আমলাদের কাছে দলীয় কর্মীরা এখন অনেকটা চৰুশূল হয়ে পড়েছে। ৰমতাধরদের এখন প্রিয়জন পুত্র-কন্যা, ভাই কিংবা শ্যালক ও শ্বশুর বাড়ির আত্মীয়স্বজন। দেশের দৰিণাঞ্চলসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় নিবেদিতপ্রাণ আওয়ামী লীগ কর্মীদের সাথে কথা বলে এই চিত্র পাওয়া গেছে। ৰমতাধরদের এমন আচরণে সরকারী দলের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা যারপরনাই ৰুব্ধ।
বিগত জোট আমলে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দেয়া,যোগাযোগ ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাজ স্বরাষ্ট্র্র্র মন্ত্রণালয়ে পুলিশের বদলি পদোন্নতি এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া, শিৰা মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া, প্রাথমিক শিৰা ও গণশিৰা মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া, ভূমি মন্ত্রণালয়ে সরকারী খাস জমির মালিকানার নিশ্চয়তা, অর্পিত সম্পত্তির লিজ পাইয়ে দেয়া, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ্জ ব্যবস্থাপনা, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ বণ্টনে স্থানীয় এনজিও নির্বাচনসহ নানা প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন সত্মরে তদ্বিরবাজদের দৌরাত্ম্য ছিল অপ্রতিরোধ্য। তখন বাতাসে ভেসে বেড়াত 'টাকায় বাঘের চোখ মিলে।' টাকা দিলেই চাকরি মিলেছে, মিলেছে বদলি ও পদোন্নতি। যে কারণে দুর্নীতির বাতাস তখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। শতাধিক সু্যটকেস নিয়ে কথিত যুবরাজের সৌদি ভ্রমণের কাহিনী দুর্নীতির ইতিহাসের অংশ হয়ে আছে সাধারণ মানুষের কাছে। তখন স্থানীয় সংসদ সদস্যের ডিও লেটার দিয়ে টিআর কাবিখা'র শত শত টন চাল- গম নিয়ে অনেকে শূন্য অবস্থা থেকে রাতারাতি লাখপতি আবার কেউ কেউ লাখপতি থেকে কোটিপতি হয়েছেন। অনেকে ঢাকায় গাড়ি,বাড়ি করে চূড়ানত্মভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।
বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ কেলেঙ্কারী, জোট আমলের সব বিসিএসে'র প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নিয়োগ কেলেঙ্কারী, বনখেকো ওসমানের নিয়োগসহ নানা ধরনের নিয়োগ কেলেঙ্কারী এখনও বিভিন্ন পর্যায়ের আড্ডায় মুখরোচক আলোচনার ইসু্য প্রাথমিক ও গণশিৰা মন্ত্রণালয়ের উপ-আনুষ্ঠানিক শিৰা প্রকল্পে ১৩শ' কোটি টাকার কাজ দেশীয় এনজিওকে বন্টনের নামে কমিশন বাণিজ্যের কারণে বিশ্বব্যাঙ্ক অর্থায়ন বন্ধ করে দিলে সরকার প্রকল্প কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। এই পেশাদার তদ্বিরবাজরাই বিশেষ কমিশনে ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দেয়া, প্রশাসনে নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি, নানা কৌশলে সরকারী ভূমির মালিকানা পাইয়ে দেয়া আর সরকারী চাকরি পাইয়ে দেয়ার ৰেত্রে জোট আমলে 'হাওয়া ভবন নেটওয়ার্কে' যে পেশাদার তদ্বিরবাজ গ্রম্নপ গড়ে উঠেছিল তারা এখন নতুন করে সংগঠিত হয়েছে। জোট শাসনামলে শুধু কথার জাদুতে বিনা চালানে ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে অনেকে। যারা গণকঠাকুরের মতো চাকরি প্রাপ্তির শতভাগ নিশ্চয়তা, প্রশাসনে নিয়োগ বদলি আর পদোন্নতির আশ্বাস-প্রশ্বাস দিয়ে নিঃস্ব করেছে অনেককে। তারাই আবার নানা কৌশলে মহাজোট সরকারের প্রভাবশালীদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে নিজেদের প্রকাশ করে নেমে পড়েছে চাকরির তদ্বির বাণিজ্যে। তদ্বিরবাজদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় সচিবালয়ে পেশাদার 'সুন্দরী ললনাদের' ভিড়ও বেড়েছে। চাকরির জন্য যারা নানা জনের কাছে অর্থ ছাড়ছেন তাদের প্রতারিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে শতভাগ। একই সঙ্গে সরকার তদ্বিরবাজদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে না পারলে বদনামের দায় কোনভাবেই এড়াতে পারবে না বলে মনে করছেন সরকারের শুভাকাঙ্ৰী মহল।

No comments

Powered by Blogger.