সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় সেনাপ্রধান-সীমান্তে পাকিস্তানের গুলির কড়া জবাব দেওয়ার নির্দেশ

কাশ্মীর সীমান্তে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে যেকোনো ধরনের হামলার 'আগ্রাসী' জবাব দিতে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল বিক্রম সিং। গতকাল সোমবার দুই দেশের ব্রিগেডিয়ার পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পতাকা বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগে এ নির্দেশ দেন তিনি।
তিনি সেনাদের শিরচ্ছেদের ঘটনাকে 'ক্ষমার অযোগ্য' কাজ বলে অভিহিত করেন।
গতকাল দুপুরে জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলওসি) পুঞ্চ সেক্টরের চাকান দা বাগ ক্রসিংয়ে পতাকা বৈঠক কোনো ধরণের অগ্রগতি ছাড়াই শেষ হয়েছে। বৈঠকে ভারত তাদের দুই সেনার শিরচ্ছেদের কড়া প্রতিবাদ জানায়। পাকিস্তানকে নিয়ন্ত্রণ রেখায় অস্ত্রবিরতির নীতি মেনে চলারও আহ্বান জানান তাঁরা। তবে পাকিস্তানও তাদের সীমান্তে ঢুকে ভারতীয় সেনাদের হামলার কঠোর প্রতিবাদ জানায়।
কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখায় গত ৬ জানুয়ারি থেকে কয়েক দফা 'হামলা' ও গুলিবিনিময়ে দুই দেশের দুজন করে চার সেনা মারা যান। এ ঘটনায় উভয় দেশেই তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমন ও সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনার পর দুই দেশের ব্রিগেডিয়ার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানায় ভারত। বিপরীতে পাকিস্তান গত রবিবার এ ঘটনায় জাতিসংঘের তদন্তের দাবি জানায়।
নয়াদিল্লিতে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে ভারতের সেনাপ্রধান বিক্রম বলেন, 'আমরা চাই আমাদের কমান্ডাররা আগ্রাসী হোক। এই নির্দেশ অত্যন্ত স্পষ্ট। যেকোনো ধরনের উসকানির বিরুদ্ধে আমাদের কমান্ডাররা পাল্টা গুলি ছুড়বে।' তিনি ভারতীয় সেনাদের শিরচ্ছেদের ঘটনাকে 'ক্ষমার অযোগ্য' বলে অভিহিত করেন। জানান, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণ রেখায় পরিকল্পিতভাবে গুলি চালিয়েছে। 'জানুয়ারির ৮ তারিখে পাকিস্তান পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে। এ ধরনের হামলা চালাতে সাধারণত প্রতিপক্ষের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার ও পূর্ব পরিকল্পনার প্রয়োজন। আমরা চাই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের নিহত সেনাদের মাথা ফেরত দেবে।' বিক্রম সিং বলেন, 'আমরা আলোচনা চালিয়ে যেতে চাই। এর বাইরেও পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগের ভালো উপায় খুঁজে দেখা হবে। তবে তার আগে অবশ্যই হামলা বন্ধ করতে হবে।'
গতকাল সীমান্তে দুই দেশের ব্রিগেডিয়াররা প্রায় ২৫ মিনিট বৈঠক করেন। ভারতীয় দলের নেতৃত্ব দেন ১০ কৃষ্ণঘাটি ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার টি এস সানধু। ভারতীয় কর্মকর্তারা জানান, রবিবার রাতেও পাকিস্তানি সেনারা সীমান্তে গুলি চালিয়েছেন।
অনশন ভেঙেছে নিহত সেনার পরিবার
কাশ্মীর সীমান্তে গুলিতে নিহত ভারতীয় সেনা ল্যান্স নায়েক হেমরাজের পরিবার অনশন ভেঙেছে। হেমরাজের সম্পূর্ণ দেহ ফেরত পাওয়ার দাবিতে গত ছয়দিন ধরে অনশন চালিয়ে আসছিল উত্তর প্রদেশ রাজ্যের খৈরাইর গ্রামের এই পরিবারটি। তাদের দাবি, হেমরাজ দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন। তাই যথাযোগ্য সম্মান তার প্রাপ্য। গতকাল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব হেমরাজের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন এবং তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা অনশন ভাঙেন। সূত্র : এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.