বইয়ের মেলা প্রাণের মেলা-উটকো ঝামেলায় দুর্ভোগ by আশীষ-উর-রহমান
রাত আটটা। তখনো লম্বা লাইন মেলার আর্চওয়ের সামনে। শুক্রবার সাধারণত বইমেলায় লোকসমাগম বেশিই হয়। সামনেই অমর একুশে। ভিড়টা সে কারণে আরও বেশি। মেলায় প্রবেশ ও নির্গমনে প্রচণ্ড দুর্ভোগ। তার কারণ অবশ্য যতটা না লোকসংখ্যাধিক্য, তার চেয়ে বেশি পথ ও ফুটপাতজুড়ে বসা দোকানপাট।
বইমেলা পুরো জমে ওঠায় এখন ছুটির দিন ছাড়াও প্রতিদিনই বিকেল থেকে এমন লোকসমাগম হবে, সেটা জানা কথাই। অথচ নিরাপত্তারক্ষীরা লোক চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী এসব ঝামেলা সরিয়ে ফেলতে খুব আন্তরিক বলে মনে হয় না। বিষয়টি নিয়ে একাডেমী কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তারক্ষীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তবে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। কারণ অজ্ঞাত।
আনিসুজ্জামানের সংবর্ধনা
গতকাল বেলা ১১টা থেকেই মেলা খুলেছিল। বাংলা একাডেমীর সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক বরেণ্য চিন্তাবিদ আনিসুজ্জামানকে তাঁর ৭৫তম জন্মবার্ষিকীর সংবর্ধনা দেওয়া হলো একাডেমী কার্যালয়ে। আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি ৭৫ বছর পূর্ণ হবে তাঁর।
শিল্পী পাপিয়া সারোয়ারের গাওয়া রবীন্দ্রসংগীতের মধ্য দিয়ে সেমিনার কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান শুরু হয়। সভাপতিত্ব করেন বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান। শুরুতেই আনিসুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রী সিদ্দিকা জামানকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। একাডেমীর পক্ষ থেকে দেওয়া হয় জন্মদিনের উপহার। জাতীয় কবিতা পরিষদ ও জাতীয় গীতিকবি সংসদের পক্ষ থেকেও তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
স্বাগত বক্তৃতায় বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, ‘আলংকারিক অর্থে নয়, প্রকৃতই অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এ অঞ্চলের একজন পথিকৃৎ বুদ্ধিজীবী। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস পুনর্গঠন, বাংলা সাময়িকপত্রের গবেষণা ও বাঙালি জাতিসত্তার স্বরূপসন্ধানী রচনার মধ্য দিয়ে জাতিকে তিনি কৃতজ্ঞতার বন্ধনে আবদ্ধ করেছেন।’
জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় অধ্যাপক মুস্তাফা নূরউল ইসলাম, কবি সৈয়দ শামসুল হক ও হাবীবুল্লাহ সিরাজী, অধ্যাপক ভুঁইয়া ইকবাল, ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন ও কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক।
বক্তারা বলেন, এক অন্ধকার সময়ে আনিসুজ্জামানের যাত্রা শুরু। কিন্তু তাঁর লক্ষ্য ছিল নির্দিষ্ট। সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রগতিশীল রূপান্তরের সার্থক অভিযাত্রীর ভূমিকা পালন করেছেন। সাহিত্যকে তিনি শুধু ব্যক্তিক চর্চা ও অর্জনের বিষয়ভুক্ত না করে সমষ্টি-মানুষের কল্যাণে নিবেদন করেছেন। ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে তাঁর সংশ্লিষ্টতা কোনো বিচ্ছিন্ন বিষয় নয়, বরং তাঁর সামগ্রিক সাহস ও দেশপ্রেমের প্রকাশ।
সংবর্ধনার জবাবে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘সব সময় বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থেকে পথ চলেছি। মানুষের অপরিসীম ভালোবাসাই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।’
সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আনিসুজ্জামানকে যথার্থই বাঙালি মনীষার উজ্জ্বল প্রতিকৃতি বলা চলে। কারণ, বুদ্ধিবৃত্তি ও হূদয়বৃত্তির যথাযথ সমন্বয় সাধন করেছেন তিনি। সাহিত্যচর্চার সীমানা ছাড়িয়ে জাতির বৃহত্তর পরিসরে যুক্ত করেছেন নিজেকে।’
আনিসুজ্জামানের জন্মদিন উপলক্ষে আজ শনিবার সকাল আটটায় চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় ‘যে ধ্রুপদ দিয়েছ বাঁধি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে অধ্যাপক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর নেতৃত্বে গঠিত জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন পরিষদ।
নতুন বই
গতকাল নতুন বই এসেছে ২১৯টি। প্রথমা প্রকাশনের নতুন বই নজরুল ইসলামের প্রবন্ধ আগামী দিনের বাংলাদেশ। গতকাল সকাল থেকেই প্রথমার স্টলে গ্রন্থানুরাগীদের ভিড় ছিল প্রচুর। প্রথমা প্রকাশিত বইয়ের বিষয়ও বৈচিত্র্যময়। মুক্তিযুদ্ধ, সৃজনশীল সাহিত্য, ইতিহাস ও সংস্কৃতিবিষয়ক প্রবন্ধ, অনুবাদ, শিশুতোষ, রান্নাসহ নানা ধরনের বইয়ের সম্ভার থেকে ক্রেতারা তাঁদের পছন্দের বইটি কিনেছেন।
অন্য বইয়ের মধ্যে ছিল: বাঁধন থেকে হাসান আজিজুল হকের উপন্যাস শিউলী, সেলিনা হোসেনের উপন্যাস ক্ষরণ, জাগৃতি থেকে ফরহাদ মজহারের প্রবন্ধ ডিজিটাল ফ্যাসিবাদ, অ্যাডর্ন থেকে কবীর চৌধুরীর স্মৃতিচারণা আমার ছেলেবেলা, পাঠক সমাবেশ থেকে রাজু আলাউদ্দিনের রাজনৈতিক প্রবন্ধ আলাপচারিতা, শুদ্ধস্বর থেকে আসাদুজ্জামান নূরের আত্মজীবনী নিরালা নীলে, মাহমুদ আল জামানের সাহিত্য সমালোচনা জসীমউদ্দীন, সাদ কামালীর কবিতা নিগূঢ় প্রেম, বিশ্বসাহিত্য ভবন থেকে জাফরুল আহসান ও জাকির আবু জাফর সম্পাদিত মুক্তিযুদ্ধের কবিতা, জয়তী থেকে জাহিদ হায়দারের কবিতার বই স্বপ্ন পাড়ানি, রোদেলা থেকে মোহিত কামালের উপন্যাস উড়াল বালক, রয়েল পাবলিশার্স থেকে সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলালের ভ্রমণবিষয়ক কানাডা যাবেন কেন যাবেন, মুক্তধারা থেকে আবুল আহসান চৌধুরীর প্রবন্ধ কালান্তরের পথিক লালন, নবযুগ থেকে জ্যোতিপ্রকাশ দত্তের গল্প যে আসে যে যায়, পূরবী বসুর স্মৃতিকথা ধলেশ্বরী মিসিসিপি, বাঁধন থেকে কাওসার রহমানের উপন্যাস দানব বৃক্ষ, বিদ্যা থেকে দন্ত্যস রওশনের গল্প ক্যাম্পাসের কবি, ডা. ফারহানা মোবিনের স্বাস্থ্যবিষয়ক শরীর স্বাস্থ্য ও পুষ্টি।
আজও মেলা সকাল থেকে খোলা।
আনিসুজ্জামানের সংবর্ধনা
গতকাল বেলা ১১টা থেকেই মেলা খুলেছিল। বাংলা একাডেমীর সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক বরেণ্য চিন্তাবিদ আনিসুজ্জামানকে তাঁর ৭৫তম জন্মবার্ষিকীর সংবর্ধনা দেওয়া হলো একাডেমী কার্যালয়ে। আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি ৭৫ বছর পূর্ণ হবে তাঁর।
শিল্পী পাপিয়া সারোয়ারের গাওয়া রবীন্দ্রসংগীতের মধ্য দিয়ে সেমিনার কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান শুরু হয়। সভাপতিত্ব করেন বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান। শুরুতেই আনিসুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রী সিদ্দিকা জামানকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। একাডেমীর পক্ষ থেকে দেওয়া হয় জন্মদিনের উপহার। জাতীয় কবিতা পরিষদ ও জাতীয় গীতিকবি সংসদের পক্ষ থেকেও তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
স্বাগত বক্তৃতায় বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, ‘আলংকারিক অর্থে নয়, প্রকৃতই অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এ অঞ্চলের একজন পথিকৃৎ বুদ্ধিজীবী। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস পুনর্গঠন, বাংলা সাময়িকপত্রের গবেষণা ও বাঙালি জাতিসত্তার স্বরূপসন্ধানী রচনার মধ্য দিয়ে জাতিকে তিনি কৃতজ্ঞতার বন্ধনে আবদ্ধ করেছেন।’
জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় অধ্যাপক মুস্তাফা নূরউল ইসলাম, কবি সৈয়দ শামসুল হক ও হাবীবুল্লাহ সিরাজী, অধ্যাপক ভুঁইয়া ইকবাল, ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন ও কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক।
বক্তারা বলেন, এক অন্ধকার সময়ে আনিসুজ্জামানের যাত্রা শুরু। কিন্তু তাঁর লক্ষ্য ছিল নির্দিষ্ট। সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রগতিশীল রূপান্তরের সার্থক অভিযাত্রীর ভূমিকা পালন করেছেন। সাহিত্যকে তিনি শুধু ব্যক্তিক চর্চা ও অর্জনের বিষয়ভুক্ত না করে সমষ্টি-মানুষের কল্যাণে নিবেদন করেছেন। ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে তাঁর সংশ্লিষ্টতা কোনো বিচ্ছিন্ন বিষয় নয়, বরং তাঁর সামগ্রিক সাহস ও দেশপ্রেমের প্রকাশ।
সংবর্ধনার জবাবে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘সব সময় বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থেকে পথ চলেছি। মানুষের অপরিসীম ভালোবাসাই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।’
সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আনিসুজ্জামানকে যথার্থই বাঙালি মনীষার উজ্জ্বল প্রতিকৃতি বলা চলে। কারণ, বুদ্ধিবৃত্তি ও হূদয়বৃত্তির যথাযথ সমন্বয় সাধন করেছেন তিনি। সাহিত্যচর্চার সীমানা ছাড়িয়ে জাতির বৃহত্তর পরিসরে যুক্ত করেছেন নিজেকে।’
আনিসুজ্জামানের জন্মদিন উপলক্ষে আজ শনিবার সকাল আটটায় চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় ‘যে ধ্রুপদ দিয়েছ বাঁধি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে অধ্যাপক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকীর নেতৃত্বে গঠিত জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন পরিষদ।
নতুন বই
গতকাল নতুন বই এসেছে ২১৯টি। প্রথমা প্রকাশনের নতুন বই নজরুল ইসলামের প্রবন্ধ আগামী দিনের বাংলাদেশ। গতকাল সকাল থেকেই প্রথমার স্টলে গ্রন্থানুরাগীদের ভিড় ছিল প্রচুর। প্রথমা প্রকাশিত বইয়ের বিষয়ও বৈচিত্র্যময়। মুক্তিযুদ্ধ, সৃজনশীল সাহিত্য, ইতিহাস ও সংস্কৃতিবিষয়ক প্রবন্ধ, অনুবাদ, শিশুতোষ, রান্নাসহ নানা ধরনের বইয়ের সম্ভার থেকে ক্রেতারা তাঁদের পছন্দের বইটি কিনেছেন।
অন্য বইয়ের মধ্যে ছিল: বাঁধন থেকে হাসান আজিজুল হকের উপন্যাস শিউলী, সেলিনা হোসেনের উপন্যাস ক্ষরণ, জাগৃতি থেকে ফরহাদ মজহারের প্রবন্ধ ডিজিটাল ফ্যাসিবাদ, অ্যাডর্ন থেকে কবীর চৌধুরীর স্মৃতিচারণা আমার ছেলেবেলা, পাঠক সমাবেশ থেকে রাজু আলাউদ্দিনের রাজনৈতিক প্রবন্ধ আলাপচারিতা, শুদ্ধস্বর থেকে আসাদুজ্জামান নূরের আত্মজীবনী নিরালা নীলে, মাহমুদ আল জামানের সাহিত্য সমালোচনা জসীমউদ্দীন, সাদ কামালীর কবিতা নিগূঢ় প্রেম, বিশ্বসাহিত্য ভবন থেকে জাফরুল আহসান ও জাকির আবু জাফর সম্পাদিত মুক্তিযুদ্ধের কবিতা, জয়তী থেকে জাহিদ হায়দারের কবিতার বই স্বপ্ন পাড়ানি, রোদেলা থেকে মোহিত কামালের উপন্যাস উড়াল বালক, রয়েল পাবলিশার্স থেকে সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলালের ভ্রমণবিষয়ক কানাডা যাবেন কেন যাবেন, মুক্তধারা থেকে আবুল আহসান চৌধুরীর প্রবন্ধ কালান্তরের পথিক লালন, নবযুগ থেকে জ্যোতিপ্রকাশ দত্তের গল্প যে আসে যে যায়, পূরবী বসুর স্মৃতিকথা ধলেশ্বরী মিসিসিপি, বাঁধন থেকে কাওসার রহমানের উপন্যাস দানব বৃক্ষ, বিদ্যা থেকে দন্ত্যস রওশনের গল্প ক্যাম্পাসের কবি, ডা. ফারহানা মোবিনের স্বাস্থ্যবিষয়ক শরীর স্বাস্থ্য ও পুষ্টি।
আজও মেলা সকাল থেকে খোলা।
No comments