চরাচর-পচে যায় মৌসুমি ফল by বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন
প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর মৌলভীবাজার দেশের অর্থনীতিতে দীর্ঘকাল ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এখানেই রয়েছে মৌসুমি ফলের একটি সুস্পষ্ট বিশাল সম্ভাবনার দিক। মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলসহ বিভিন্ন স্থানে লেবু, কাঁঠাল, আনারস, কলা প্রভৃতি প্রচুর পরিমাণে উৎপাদিত হয়ে থাকে।
কিন্তু নানা ধরনের পরিবহন জটিলতা, সুষ্ঠু সংরক্ষণের অভাব, উদ্যোক্তার অদক্ষতা, অব্যবস্থা এবং সর্বোপরি প্রক্রিয়াজাতকরণের অভাবে এ জেলায় প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ মৌসুমি ফল পচে বিনষ্ট হয়ে যায়।
এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, জেলার শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া, বড়লেখা ও সদর থানার প্রায় পাঁচ হাজার একর টিলাভূমিতে রয়েছে কাঁঠালবাগান। প্রতিটি বাগানে ১০০ থেকে এক হাজার কাঁঠালগাছ রয়েছে। প্রতিটি কাঁঠালগাছে ১০০ থেকে ১৫০ কাঁঠাল ফলে। অন্যদিকে জেলার প্রায় ১০ হাজার একর পাহাড়ি টিলাভূমিতে আনারস চাষ হয়ে থাকে। আর লেবু উৎপাদিত হয় প্রায় পাঁচ হাজার একর জমিতে। এসব মৌসুমি ফলের বেশির ভাগ বাগানই দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত। ফলে এই তিনটি ফল যখন পাকতে শুরু করে তখন এগুলো দ্রুত বাজারজাত করা সম্ভব হয় না। দুর্গম পাহাড়ি এলাকার রাস্তাগুলো সরু হওয়ায় এবং এ রাস্তাগুলোতে ট্রাক চলাচল করতে না পারায় কৃষকরা কাঁধে করে, সাইকেলে বেঁধে, ঠেলাগাড়ি করে এসব ফর স্থানীয় বাজারে নিয়ে আসেন। এসব ব্যবস্থা ব্যয়বহুল এবং কষ্টসাধ্য হয় বলে কৃষকরা বাগানে অনেক সময় নামমাত্র মূল্যে এসব ফল বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন। তার পরও রয়েছে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য।
বর্ষা মৌসুমে ফল যখন দ্রুত পাকতে থাকে তখন সময়মতো বাজারজাতকরণের অভাবে অনেক ফল পচে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে কৃষকরা মারাত্মকভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। জেলার এসব মৌসুমি ফলের বড় বাজার বসে শ্রীমঙ্গল, বড়লেখা, শমশেরনগর, আদমপুর, ব্রাহ্মণবাজার, বিয়ানীবাজার, মোকামবাজার, তাজপুর, নবীগঞ্জ প্রভৃতি স্থানে। এসব বাজার থেকে ব্যবসায়ীরা ফল কিনে দ্রুত দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রাকযোগে পাঠিয়ে দেন। উৎপাদনকারী কৃষকরা নামমাত্র মূল্যে বা লোকসান দিলেও এসব পাইকারি ব্যবসায়ী দ্রুত পরিবহনের মাধ্যমে মুনাফা অর্জনে সক্ষম হচ্ছেন। অন্যদিকে দ্রুত পরিবহন, বাজারজাতকরণ ও সংরক্ষণের অভাবে কৃষকরা তাঁদের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ অঞ্চলের মাটি, আবহাওয়া, বৃষ্টিপাত অনুকূল থাকায় গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে আনারস, লেবু, কাঁঠাল প্রচুর পরিমাণে উৎপন্ন হয়; কিন্তু জেলায় কোনো সংরক্ষণব্যবস্থা না থাকায় এসব মৌসুমি ফল সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের পাশাপাশি প্রবাসী বিত্তবানরাও দেশের কথা বিবেচনায় এনে বিভিন্ন ধরনের প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে পারেন। ফলে এখানকার কোটি কোটি টাকার অর্থকরী ফল বিনষ্ট হওয়া থেকে যেমন রক্ষা পাবে, তেমনি এগুলোকে কেন্দ্র করে অসংখ্য কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হবে। এই কর্মসংস্থানই দৈনন্দিন অভাব-অনটনকে দূর করে স্বনির্ভরশীল হতে সাহায্য করবে এলাকার বৃহত্তর বেকার জনগোষ্ঠীর। এই মহৎ কর্মযজ্ঞটি সুসম্পন্ন হলে এলাকার গুচ্ছ দারিদ্র্যপীড়িত পরিবারগুলো সচ্ছলতার হাসি মুখে নিয়ে জেগে উঠবে।
বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন
এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, জেলার শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া, বড়লেখা ও সদর থানার প্রায় পাঁচ হাজার একর টিলাভূমিতে রয়েছে কাঁঠালবাগান। প্রতিটি বাগানে ১০০ থেকে এক হাজার কাঁঠালগাছ রয়েছে। প্রতিটি কাঁঠালগাছে ১০০ থেকে ১৫০ কাঁঠাল ফলে। অন্যদিকে জেলার প্রায় ১০ হাজার একর পাহাড়ি টিলাভূমিতে আনারস চাষ হয়ে থাকে। আর লেবু উৎপাদিত হয় প্রায় পাঁচ হাজার একর জমিতে। এসব মৌসুমি ফলের বেশির ভাগ বাগানই দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত। ফলে এই তিনটি ফল যখন পাকতে শুরু করে তখন এগুলো দ্রুত বাজারজাত করা সম্ভব হয় না। দুর্গম পাহাড়ি এলাকার রাস্তাগুলো সরু হওয়ায় এবং এ রাস্তাগুলোতে ট্রাক চলাচল করতে না পারায় কৃষকরা কাঁধে করে, সাইকেলে বেঁধে, ঠেলাগাড়ি করে এসব ফর স্থানীয় বাজারে নিয়ে আসেন। এসব ব্যবস্থা ব্যয়বহুল এবং কষ্টসাধ্য হয় বলে কৃষকরা বাগানে অনেক সময় নামমাত্র মূল্যে এসব ফল বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন। তার পরও রয়েছে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য।
বর্ষা মৌসুমে ফল যখন দ্রুত পাকতে থাকে তখন সময়মতো বাজারজাতকরণের অভাবে অনেক ফল পচে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে কৃষকরা মারাত্মকভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। জেলার এসব মৌসুমি ফলের বড় বাজার বসে শ্রীমঙ্গল, বড়লেখা, শমশেরনগর, আদমপুর, ব্রাহ্মণবাজার, বিয়ানীবাজার, মোকামবাজার, তাজপুর, নবীগঞ্জ প্রভৃতি স্থানে। এসব বাজার থেকে ব্যবসায়ীরা ফল কিনে দ্রুত দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রাকযোগে পাঠিয়ে দেন। উৎপাদনকারী কৃষকরা নামমাত্র মূল্যে বা লোকসান দিলেও এসব পাইকারি ব্যবসায়ী দ্রুত পরিবহনের মাধ্যমে মুনাফা অর্জনে সক্ষম হচ্ছেন। অন্যদিকে দ্রুত পরিবহন, বাজারজাতকরণ ও সংরক্ষণের অভাবে কৃষকরা তাঁদের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ অঞ্চলের মাটি, আবহাওয়া, বৃষ্টিপাত অনুকূল থাকায় গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে আনারস, লেবু, কাঁঠাল প্রচুর পরিমাণে উৎপন্ন হয়; কিন্তু জেলায় কোনো সংরক্ষণব্যবস্থা না থাকায় এসব মৌসুমি ফল সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের পাশাপাশি প্রবাসী বিত্তবানরাও দেশের কথা বিবেচনায় এনে বিভিন্ন ধরনের প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে পারেন। ফলে এখানকার কোটি কোটি টাকার অর্থকরী ফল বিনষ্ট হওয়া থেকে যেমন রক্ষা পাবে, তেমনি এগুলোকে কেন্দ্র করে অসংখ্য কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হবে। এই কর্মসংস্থানই দৈনন্দিন অভাব-অনটনকে দূর করে স্বনির্ভরশীল হতে সাহায্য করবে এলাকার বৃহত্তর বেকার জনগোষ্ঠীর। এই মহৎ কর্মযজ্ঞটি সুসম্পন্ন হলে এলাকার গুচ্ছ দারিদ্র্যপীড়িত পরিবারগুলো সচ্ছলতার হাসি মুখে নিয়ে জেগে উঠবে।
বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন
No comments