বার্সেলোনা আর মেসির গোল উৎ সব

এক লিওনেল মেসিরই তিনটা শট বারে নয়তো পোস্টে লেগে ফিরে এসেছে। ওসাসুনার গোলরক্ষক আন্দ্রেস ফার্নান্দেজ পাঁচ-ছয়টা দুর্দান্ত সেভ করেছেন। সাধারণত গোলপোস্ট আর গোলরক্ষক এমন দেয়াল গড়ে তুললে ম্যাচ শেষে প্রতিপক্ষ কোচের কণ্ঠে হতাশা ঝরে। কিন্তু পরশু বার্সেলোনা সেই সুযোগটা কোচ পেপ গার্দিওলাকে দেয়নি। এতগুলো গোল মিস করেও যে ওসাসুনাকে ৮-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বার্সেলোনা!
তিনবার বল পোস্টে লাগিয়েও হ্যাটট্রিক করেছেন লিওনেল মেসি। দুটো গোল করিয়েছেন জাভি ও ফ্যাব্রিগাসকে দিয়ে। ডেভিড ভিয়ার জোড়া গোলের পাশাপাশি ওসাসুনাকে তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরাজয়ের লজ্জায় ডুবিয়েছে একটি আত্মঘাতী গোল।
আগের দুই ম্যাচে এগিয়ে থেকেও ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ার হতাশা সঙ্গী ছিল বার্সেলোনার। বার্সার রক্ষণভাগে ফাঁকফোকর খুঁজে পেয়েছিলেন সমালোচকেরা। সেই কারণেই কি না কে জানে, খোদ রিয়াল মাদ্রিদ যে সাহসটা পায় না, সাহস পায়নি এসি মিলানও; সেটাই দেখাতে গিয়েছিল ওসাসুনা। দাঁতে দাঁত কামড়ে কোথায় রক্ষণাত্মক খেলে একটা পয়েন্ট অন্তত কুড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে তা না, উল্টো আক্রমণাত্মক হতে গেল। আর বার্সাকে তাদের মতো করে খেলতে দিলে যে কী হয় সেটা শুরু থেকেই বুঝিয়ে গেলেন মেসিরা।
প্রথম গোলটা পেতে একদমই অপেক্ষা করতে হয়নি। পঞ্চম মিনিটেই গোল এনে দিয়েছেন মেসি। প্রথমার্ধের শেষের দিকে করেছেন নিজের দ্বিতীয় গোলটি। মেসির মাঝখানে ফ্যাব্রিগাস, ভিয়া আর রোভারসিওর আত্মঘাতী গোলে প্রথমার্ধেই ৫-০। ৫৭ মিনিটে জাভি, ৭৬ মিনিটে ভিয়া আর ৭৯ মিনিটে মেসির হ্যাটট্রিক পূর্ণ করা গোল বিশাল জয় এনে দেয় চ্যাম্পিয়নদের।
মনে হলো, আগের দুই ম্যাচের জ্বালা মেটাতেই যেন মাঠে নেমেছিল বার্সা। এমন খবরও শোনা গিয়েছিল, এগিয়ে থেকেও ওই দুই ম্যাচে ড্র করায় গার্দিওলা নাকি বকেছিলেন শিষ্যদের। এদিন অবশ্য ম্যাচ শেষে কোচ জানালেন, ‘আমি মোটেও রাগ করিনি। কেউ কেউ বলছে আমি রেগে গিয়েছিলাম, কিন্তু আসলে সে রকম কিছু হয়নি। আসলে মিডিয়ার একটা অংশ আছে যারা চায় বার্সেলোনা খারাপ করুক। একইভাবে আরেকটা অংশ আছে যারা চায় রিয়াল মাদ্রিদ খারাপ করুক। ওরাই এসব ছড়ায়। আমি রাগ করিনি, কারণ আমার খেলোয়াড়েরা আমাকে সেই সুযোগই দেয় না।’ এএফপি, রয়টার্স।
আগামী বুধবারই ভ্যালেন্সিয়ার সঙ্গে বড় ম্যাচ আছে বার্সার। এই ম্যাচের আগে এমন জয় বাড়তি আত্মবিশ্বাস এনে দেবে তাদের। ওদিকে ইতালিয়ান লিগে পরশুই একটা বড় ম্যাচ হয়ে গেছে। যদিও ইন্টার মিলান আর রোমার সেই ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছে। বাজেভাবে মৌসুম শুরু করা দুই দলই সান্ত্বনার একটি পয়েন্ট পেয়েছে। এবং দুই দলের কোচই এক এক পয়েন্টে সন্তুষ্ট।
বাজেভাবে মৌসুম শুরু করেছে আর্সেনালও। ইংল্যান্ডের এই দলটি পরশু নিজেদের জালে দুটো আত্মঘাতী গোল করে হেরেছে ব্ল্যাকবার্ন রোভার্সের বিপক্ষে। লিগে পাঁচ ম্যাচে মাত্র ৪ পয়েন্ট কুড়িয়ে নিয়েছে আর্সেনাল। কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গার পরশু ম্যাচের আগপর্যন্তও দলের পক্ষে সাফাই গাইছিলেন। এদিন ম্যাচ শেষে প্রচণ্ড হতাশ ছিলেন ফরাসি ভদ্রলোকও। এই পাঁচ ম্যাচে যে এরই মধ্যে ১৪টা গোলও হজম করেছে তাঁর দল। এটাই প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসে আর্সেনালের সবচেয়ে বাজে শুরু। প্রথম পাঁচ ম্যাচে ১৪ কিংবা এর বেশি গোল খাওয়া দলও আছে মাত্র দুটি।

No comments

Powered by Blogger.