বিদ্রোহীরা দখল নিলে ত্রিপোলি উড়িয়ে দেবেন গাদ্দাফি

লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি ‘আত্মঘাতী পরিকল্পনা’ নিয়েছেন। বিদ্রোহীরা রাজধানী ত্রিপোলি দখল করে নিলে তিনি এ শহর উড়িয়ে দেবেন। লিবিয়ায় নিযুক্ত রাশিয়ার বিশেষ দূতের বরাত দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাশিয়ার একটি সংবাদপত্রে এ খবর প্রকাশিত হয়।
সমঝোতার মাধ্যমে গাদ্দাফিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া ও বিদ্রোহীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে কয়েকটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আজ শুক্রবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে আলোচনায় বসছেন।
লিবিয়ায় নিযুক্ত রাশিয়ার বিশেষ দূত মিখাইল মারগেলভ রাশিয়ার ইজভেস্তিয়া পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমার ধারণা, গাদ্দাফি সরকারের আত্মঘাতী পরিকল্পনা রয়েছে। এখনো তাদের হাতে প্রচুর ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলাবারুদ মজুদ রয়েছে।’ তিনি বলেন, গাদ্দাফির সেনারা এখনো ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপণযোগ্য একটি ক্ষেপণাস্ত্রও ব্যবহার করেনি। তাদের ট্যাংকের জন্য রাখা গোলা ও রাইফেলের গুলি ফুরিয়ে যেতে পারে। কিন্তু ক্ষেপণাস্ত্র ও বিস্ফোরকের প্রচুর মজুদ রয়েছে।
গত ১৬ জুন ত্রিপোলিতে লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী বাগদাদি আল মাহমুদির সঙ্গে বৈঠক করেন মারগেলভ। তবে তিনি গাদ্দাফির সঙ্গে দেখা করতে পারেননি।
আজ ইস্তাম্বুলে লিবিয়ার বিষয়ে আলোচনায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আঁলা জুপ্পে, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হগ ও ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঙ্কো ফ্রাত্তিনি অংশ নেবেন বলে জানা গেছে। এতে সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব আন্দ্রেস ফগ রাসমুসেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান ক্যাথেরিন অ্যাস্টন ও আরব লিগের প্রধান নাবিল আল আরবিরও অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
এই আলোচনায় অংশ নিতে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে রাশিয়া ও চীনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে তাদের অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত নয়।
তুরস্কের একজন কূটনীতিক জানান, ইস্তাম্বুলের আলোচনায় লিবিয়ায় নিযুক্ত জাতিসংঘের দূত আবদুল ইলাহ সম্প্রতি তাঁর ত্রিপোলি ও বেনগাজি সফরের বিষয় তুলে ধরবেন। এ ছাড়া মুসলমানদের জন্য আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে লিবিয়ায় মানবিক সহায়তা বাড়ানো ও বিদ্রোহীদের সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।
লিবিয়ার বিদ্রোহীদের গঠিত অন্তর্বর্তী জাতীয় পরিষদের (টিএনসি) জ্যেষ্ঠ সদস্য মাহমুদ জিবরিল ইস্তাম্বুলের আলোচনায় যোগ দেবেন। তিনি বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় অংশ নেবেন।
ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাউরিজিও মাসারি বলেন, জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় লিবিয়া পরিস্থিতির রাজনৈতিক সমাধানের পরিকল্পনা এগিয়ে চলছে।
গত মঙ্গলবার ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আঁলা জুপ্পে বলেন, ‘আমরা লিবিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তাঁরা আমাদের বলেছেন, গাদ্দাফি ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছেন। সে বিষয় নিয়ে আলোচনা হোক।’

No comments

Powered by Blogger.