ব্যয়-সংকোচনের পথ উন্মুক্ত হলো গ্রিসের

আস্থা ভোটে টিকে গেলেন ঋণে জর্জরিত দেশ গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী জর্জ পাপানদ্রু। এর মধ্য দিয়ে সরকারের দুই হাজার ৮০০ কোটি ইউরো ব্যয়-সংকোচনসহ বেশ কিছু বিষয়ে সংস্কার আনার পথ উন্মুক্ত হলো।
গ্রিসের অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (্আইএমএফ) কাছ থেকে সহায়তা প্যাকেজ পেতে গ্রিসকে দুই হাজার ৮০০ কোটি ইউরো খরচ কমাতে বলা হয়। সরকার বিভিন্ন খাতে সংস্কারের মাধ্যমে খরচ কমাতে চাইলেও জনগণ এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।
গত মঙ্গলবার এথেন্সে পার্লামেন্ট ভবনের চারপাশে হাজার হাজার জনতা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছে। তারা ব্যয়-সংকোচনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়।
মঙ্গলবার রাতে অনুষ্ঠিত আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী পাপানদ্রু সরকারের পক্ষে ১৫৫ ভোট পড়ে। বিপক্ষে পড়ে ১৪৩ ভোট। দুজন পার্লামেন্ট সদস্য ভোট বর্জন করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র জানায়, সরকারি ব্যয়-সংকোচনের জন্য গতকাল বুধবার নতুন আইন বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক করেন পাপানদ্রু।
প্রধানমন্ত্রী পাপানদ্রু বলেন, ‘দেশে পরিবর্তন আনতে এখন আমাদের হাতে অনন্য এক সুযোগ এসেছে। এ সুযোগ নষ্ট করলে ইতিহাস নিষ্ঠুরভাবে আমাদের বিচার করবে।’ তিনি বলেন, সরকার এখন ‘অতি মানবীয় কাজের’ মুখোমুখি।
ইইউ ও আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ-সহায়তা পেতে ২৮ জুনের মধ্যে ব্যয়-সংকোচনের বিষয়টি পার্লামেন্টে পাস হতে হবে। গ্রিসের উপ-অর্থমন্ত্রী পানটেলিস ইকোনোমৌ বলেন, ‘চলতি মাসের বাকি দিনগুলো গ্রিসের ইতিহাসে গত ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
অর্থমন্ত্রী ইভানজেলোস ভেনিজেলোস বলেন, ‘ইউরো জোনের অর্থমন্ত্রীরা ৩ জুলাই বৈঠকে বসবেন। এর আগেই ৩০ জুনের মধ্যে আমাদের দুটি আইন পাস করতে হবে।’
ব্যয়-সংকোচনে ইইউ ও আইএমএফের প্রস্তাবের পর থেকেই গ্রিসে দেশজুড়ে বিক্ষোভ-ধর্মঘট চলছে। এ প্রস্তাব পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হলে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট আহ্বানের পরিকল্পনা করেছে দেশটির সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠন পাবলিক পাওয়ার করপোরেশন (পিপিসি)।
ইইউ ও আইএমএফের সহায়তা প্যাকেজের আওতায় আগামী জুলাইয়ে গ্রিসের এক হাজার ২০০ কোটি ইউরো পাওয়ার কথা। এ লক্ষ্যে ইউরো জোনের অর্থমন্ত্রীরা ৩ জুলাই বৈঠকে বসবেন।
গ্রিস সরকারের পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন মেটাতেই হিমশিম খাচ্ছে সরকার। মঙ্গলবার সরকারের মুখপাত্র ইলিয়াস মোসিয়ালোস বলেন, ‘মধ্য জুলাইয়ের পর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ও অবসর ভাতা দেওয়ার মতো অর্থ আমাদের হাতে থাকবে না।’
ব্যয়-সংকোচন ও সংস্কারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে হাজার হাজার জনতা পার্লামেন্ট ভবনের চারপাশে অবস্থান নেয়। তারা রাজনীতিবিদদের চোর আখ্যা দিয়ে স্লোগান দেয়।

No comments

Powered by Blogger.