নিরাপত্তার ঘেরাটোপে শোয়েবরা

স্কুলের ছেলেমেয়েরা কোনো মন্ত্রী বা সাংসদকে অভ্যর্থনা জানাতে সারি বেঁধে যেভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে, দৃশ্যটা তেমনই। কাল পড়ন্ত দুপুরে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের মূল ফটক পেরিয়ে ভেতরে ঢুকতেই দেখা মিলল সেই সারির। শুধু স্কুলশিক্ষার্থীদের বদলে এখানে ‘অভ্যর্থনা’ জানাতে দাঁড়িয়ে আছে পুলিশ!এমনিতে বিশ্বকাপ উপলক্ষে গোটা মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম চত্বর নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা। তার ওপর মাঠে পাকিস্তান দলের অনুশীলন। বাড়তি নিরাপত্তা তো থাকবেই। এর সঙ্গে যুক্ত হলো নিরাপত্তা মহড়াও। কেমন জানি যুদ্ধ-যুদ্ধ ভাব! পুলিশ, র্যাাব, ডগ স্কোয়াড, সেনা কমান্ডো—কারা নেই সেখানে। পরিবেশটা একসময় ‘ভীতিকর’ হয়ে উঠল। পাকিস্তান দল যখন মাঠে ফিটনেস অনুশীলন করছিল, হঠাৎ বিকট আওয়াজে ফাটল এক বোমা। যারা জানত না, তারা চমকে গেল। যারা জানত, এটা আসলে মহড়ার অংশ, প্রথম প্রথম হকচকিয়ে গেল তারাও।পাকিস্তান দলকেও আগেই জানানো হয়েছিল। তার পরও বোমার শব্দে একটু যেন চমকেই গেলেন শহীদ আফ্রিদিরা। ছোটাছুটি শুরু হলো নিরাপত্তাকর্মীদের। সবার হাতে উঁচিয়ে ধরা অস্ত্র। কমান্ডোর সেনা সদস্যরা তাঁদের করণীয় সারলেন। কেউ একজন রসিকতা করলেন, ‘এলাকার সন্ত্রাসীরা এই শব্দ শুনে নির্ঘাত পালাবে।’এই সময় স্টেডিয়ামের ওপর দিয়ে চক্কর দিল হেলিকপ্টার। পাশের অনুশীলন মাঠে অবতরণ করে জরুরি অবস্থায় কীভাবে খেলোয়াড়দের তুলে নেওয়া হবে, সেটির মহড়াও হলো।উপস্থিত অনেকে বললেন, এই মহড়া আগে বা পরে করা যেত। বিদেশি একটা দল অনুশীলন করার সময়টা আদর্শ সময় নয়। খোদ বিসিবির এক কর্মকর্তারও একই অভিমত ছিল। সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, এমন কিছু করা ঠিক হয়নি যাতে আতঙ্ক ছড়ায়।বিশ্বকাপের মতো আয়োজনে নিরাপত্তার ঘেরাটোপ থাকবে সেটিই স্বাভাবিক। তারই অংশ হিসেবে চার-পাঁচ শ নিরাপত্তাকর্মীর উপস্থিতি। তার পরও একটু ঢিলেঢালা। ব্যাগ-ট্যাগ তল্লাশির ব্যবস্থা নেই। একজন জানালেন, এটা হয়তো পরে হবে।নিরাপত্তার কথা ছেড়ে চোখ ফেরানো যাক পাকিস্তানের অনুশীলনে। ঘণ্টা তিনেক নিবিড় অনুশীলন করল আফ্রিদির দল। নেট প্র্যাকটিসের এক ফাঁকে শোয়েব আখতার টুকটাক কথা বললেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। কৌতূহল নিয়ে নিজেই জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তামিম কাঁহা হ্যায়?’ মানে তামিম ইকবাল কোথায়? তামিম চট্টগ্রামে অনুশীলন ম্যাচ খেলছেন কানাডার বিপক্ষে, জানানো হলো তাঁকে।আগের মতো এখন ১০০ মাইল বেগে বল করতে পারবেন? জানতে চাইলে খানিক রসিকতার সুর গতিতারকার মুখে, ‘৩৬ বছর বয়সেও!’ বোঝালেন এখন বয়স হয়ে গেছে, আগের মতো কি আর পারেন! অনুশীলন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কথা বলতে চাইলেও শোয়েবকে হতাশ করেছে পুলিশ। তাঁকে টেনে নিয়ে দলের সঙ্গে মাঠের দিকে পাঠিয়ে দেন নিরাপত্তাকর্মীরা।

No comments

Powered by Blogger.