জার্মানির নির্বাচন: জয়ের পথে ফ্রিডরিখ মেৎসের সিডিইউ, দ্বিতীয় স্থানে উগ্র ডানপন্থি এএফডি
এতে বলা হয়, চ্যান্সেলর পদের জন্য এবার এএফডির প্রার্থী অ্যালিস ওয়েডেল বেশ উন্মুখ ছিলেন। তিনি তার সমর্থকদের বলেছেন, ভালো করলেও তারা আরও বড় ফলাফলের আশা করেছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কোনো উগ্র ডানপন্থি দলের সবচেয়ে ভালো ফলাফল করেছে এএফডি।
এদিকে ভরাডুবি হয়েছে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের দলের। তার ভাষায়- তিক্ত নির্বাচন ফলাফলের পর তার মধ্য বামপন্থী সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক (এসপিডি) দলের পরাজয় মেনে নিয়েছেন। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এআরডি এবং জেডডিএফ এর হিসেবে দেখা গেছে, চ্যান্সেলরের দল তৃতীয় স্থানে নেমে আসবে, যা হবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী যেকোনো জাতীয় সংসদীয় নির্বাচনে তাদের সবচেয়ে খারাপ ফলাফল। এসপিডি পেয়েছে ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট। এ ছাড়া পরিবেশবাদী সবুজ দল ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ এবং বাম দল দ্য লিঙ্কে ৮ দশমিক ৮ শতাংশে এগিয়ে রয়েছে।
এদিকে জোট গঠনের লক্ষ্যে দ্রুত কাজ শুরু করার অঙ্গীকার করেছেন এগিয়ে থাকা মেৎস। তবে এবার জোট গঠনের কাজটি বেশ কঠিন হতে পারে। কেননা সোমবার ভোরে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে আগের তুলনায় অন্যান্য দলগুলোর তুলনায় অনেকটা এগিয়ে রয়েছে এএফডি বা উগ্র ডানপন্থি দল। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের জরিপ অনুসারে দলটির পক্ষে ৩৪ শতাংশ ভোটের পূর্বাভাস রয়েছে।
অ্যালিস ওয়েডেল বলেছেন, জার্মানরা এবার পরিবর্তনের লক্ষ্যে ভোট দিয়েছে। তিনি আশা করছেন, ফ্রিডরিখ মেৎসের জোট গঠনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে। তিনি বলেন, আমার মনে হয়না যে আমাদের আরও চার বছর অপেক্ষা করতে হবে।
গত বছরের শেষের দিকে ওলাফ শলৎজের তিন দলীয় জোট ভেঙে যাওয়ার পর অন্য একটি দলের সঙ্গে একটি জোট গঠনের জন্য ভোটারদের কাছে শক্তিশালী ম্যান্ডেট চেয়েছিলেন মেৎস। তিনি মনে করেন এর মাধ্যমেই জার্মানির সমস্যা সমাধান করতে হবে। বিশেষ করে স্থবির অর্থনীতি থেকে শুরু করে সীমান্তে অভিবাসীদের ঠেকানোসহ সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার অঙ্গীকার জানিয়েছেন তিনি।
তবে এবার ভোটাররা ব্যাপক হারে ভোট দিয়েছেন। এবার দেশটিতে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৮৩ শতাংশ। যা ১৯৯০ সালের পর থেকে সবচেয়ে বেশি। কিন্তু মেৎসের দল ক্রিশ্চিয়ান গণতান্ত্রিক ইউনিয়ন এবং তাদের সহযোগীরা পেয়েছে মাত্র ২৮ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট। তবে তাদের প্রত্যাশা ছিল আরও অনেক বেশি। তিনি উগ্র ডানপন্থীদের সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়টি সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন।
মধ্য ইউরোপের বড় দেশ জার্মানির এ নির্বাচনকে এ মুহূর্তে ইউরোপে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, ইউরোপে কট্টর জাতীয়তাবাদীদের উত্থান ঘটছে। জার্মানিতে কট্টরপন্থিরা আলোচনায় ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা ইউরোপীয় রাজনীতি নিয়ে নানা কথাবার্তা বলছেন, আস্ফালন করছেন। ফলে জার্মানিতে কারা ক্ষমতায় আসছে, তা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এখন শুধু চূড়ান্ত ফলাফলের অপেক্ষা।

No comments