কাশ্মীর নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন ইমরান

কাশ্মীরের চলমান সংকট নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি) বৈঠকে বসার আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি জানিয়েছেন জানায়, কাশ্মীরের স্বায়ত্ত্বশাসন কেড়ে নিতে ভারতের একতরফা সিদ্ধান্তের পর উদ্ভূত পরিস্থিতির বিষয়ে শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দীর্ঘ ফোনালাপ করেছেন।

দীর্ঘসময়ের এ ফোনালাপে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইমরান খান আশ্বস্ত করতে সক্ষম হয়েছেন বলেও দাবি করেন পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সোশ্যাল মিডিয়ায় দেয়া এক ভিডিও বক্তব্যে মাহমুদ কোরেশি বলেন, কাশ্মীর ইস্যুতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বৈঠকে বসার আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কাশ্মীরের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কথা বলেছেন। ভারতের এমন একতরফা সিদ্ধান্তের ফলে এ অঞ্চলে যেসব অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, তা মার্কিন প্রেসিডেন্টকে অবহিত করেছেন তিনি।

কাশ্মীর ইস্যুর পাশাপাশি আফগানিস্তানের শান্তি প্রক্রিয়া নিয়েও ডোনাল্ড ট্রাম্প কথা বলেছেন বলে জানান পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের অনুরোধ ও চীনের সমর্থনে কাশ্মীরের চলমান সংকট নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক ডেকেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি)।

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় কাশ্মীর সংকট নিয়ে এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। যেখানে কাশ্মীরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন বিশ্বনেতারা।

গত ৫ আগস্ট নরেন্দ্র মোদির সরকার কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা (ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ) বাতিল করে দিয়েছে। একই সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরকে ভেঙে দুটি অঞ্চল কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করা হয়েছে।

কাশ্মীরী সংগঠনগুলো বলেছে, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের অর্থ হলো সেখানকার অধিবাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা। আইনটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপত্যাটিকে কয়েক দিন আগে থেকেই কড়া নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে।

সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের কারণে স্বায়ত্বশাসন হারায় কাশ্মীরিরা। স্থানীয় বাসিন্দা নন এমন নাগরিকদের সম্পত্তি কেনা ও বিয়ে করার সুযোগ করে দিয়েছে ভারত। এর প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে কাশ্মীরি জনগণ। তারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে। অবরোধও চলছে।

এদিকে ওই দিনটি থেকে কাশ্মীরের টেলিফোন লাইন, ইন্টারনেট ও টেলিভিশন নেটওয়ার্ক বন্ধ করে রেখেছে দিল্লি এবং লোকজনের অবাধ চলাচল ও জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে। দুইজন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আব্দুল্লাহসহ কয়েকশ কাশ্মীরি নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।

এই মুহূর্তে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীর বিশ্বের সবচেয়ে সামরিকীকৃত এলাকায় পরিণত হয়েছে। সেনাবাহিনী, আধা-সামরিক বাহিনী ও পুলিশ সদস্য মিলিয়ে সেখানে ৭ লক্ষাধিক নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

অস্থায়ী কারাগার বানানো হয়েছে হোটেল, গেস্ট হাউস, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ভবনকে। কাশ্মীরের পুরো উপত্যকাটি যেন পরিণত হয়েছে একটি কারাগারে।

No comments

Powered by Blogger.