পাকিস্তান-ভারত সংলাপে মোদিই সবচেয়ে বড় বাধা: কুরেশি

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি বৃহস্পতিবার বলেছেন, পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে কার্যকর সংলাপের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে বিরাজ করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

একটি বেসরকারি নিউজ চ্যানেলে আলাপকালে শাহ মাহমুদ কুরেশি বরেন, ক্ষমতায় আসার জন্য মোদি কাশ্মীর নিয়ে জুয়া খেলছেন।  গত ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে জয়ের জন্য তিনি সেখানে উত্তেজনা বাড়াতে উৎসাহিত করেছেন।

কাশ্মীর বিরোধ নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক আহবান করার ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুরেশি বরেন, ৫০ বছর পর কাশ্মীর ইস্যুটির সমাধান করতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক অর্জন। ভারত এই সিদ্ধান্তে খুবই উদ্বেগে পড়েছে। তারা কাশ্মীর বিরোধ নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক আহ্বানের তীব্র বিরোধিতা করছে।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন

শাহ মাহমুদ কুরেশি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে কাশ্মীর প্রশ্নে পাকিস্তান তার অবস্থান তুলে ধরেছে। তিনি উল্লেখ করেন, পাকিস্তানের অবস্থানের প্রশংসা করেছেন রুশ নেতৃত্ব।

তিনি বলেন, রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভ আমার সাথে টেলিফোন আলাপে বলেছেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তানের অবস্থান সমর্থন করবে রাশিয়া।

তিনি ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা ওআইসির নেতৃত্ব ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ওআইসির ভূমিকা কোটি কোটি লোক পর্যবেক্ষণ করছে।

কাশ্মীরী মুসলিমদের ওপর জাতিগত শুদ্ধি অভিযান

কুরেশি বলেন, কাশ্মীরী মুসলিমদের ওপর গণহত্যা চালানোর প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে মোদি প্রশাসন। আর তা তারা করতে যাচ্ছে কাশ্মীরী জনসংখ্যার জনম্যাতিক অবস্থান পরিবর্তনের জন্য।

তিনি বলেন, পাকিস্তান কখনো যুদ্ধকে উৎসাহিত করে না। তবে কেউ আমাদের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিলে আমরা নিজেদের রক্ষার জন্য আমাদের অধিকার প্রয়োগ করব।

নয়া দিল্লির জন্য বৈশ্বিক প্রত্যাঘাত?

উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়ার সিনিয়র এসোসিয়েট ও এশিয়া প্রগ্রামের উপপরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান মনে করেন, কাশ্মীরীদের স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন যোগার করার পাকিস্তানের কার্যক্রম এখন দানা বাঁধছে, তবে তাতে সফল হওয়া কঠিন।

তিনি বলেন, তবে কাশ্মীরে চলমান ও গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ কভারেজ স্থগিত করে রাখার ফলে দিল্লি বৈশ্বিক প্রত্যাঘাতের মুখে পড়তে পারে। আর এটিই পাকিস্তানের প্রয়াসকে বেগমান করতে পারে।

প্রখ্যাত রাজনৈতিক বিশ্লেষক জান আচাকজাই বলেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তানের সফলভাবে লবি করার ফলে ভারতের বিরুদ্ধে তারা অনেক কূটনৈতিক সাফল্য পেয়েছে। এখন ভারতের ওপর নানামুখী চাপ সৃষ্টি হবে। পর্দার আড়াল থেকে চীপের পর রাশিয়াও ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে। যুক্তরাষ্ট্রও পরিস্থিতি শান্ত করতে চায়।

No comments

Powered by Blogger.