‘এক কলমের খোঁচায় ৪০ লাখ মানুষকে রাষ্ট্রহীন করে দেয়া হয়েছে’

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল এমপি সুখেন্দ শেখর রায় বলেছেন, ‘এক কলমের খোঁচায় ৪০ লাখ মানুষকে রাষ্ট্রহীন করে দেয়া হয়েছে।’ ভারতের অসমে জাতীয় নাগরিকপঞ্জিতে (এনআরসি) ৪০ লাখ মানুষের নাম থাকা প্রসঙ্গে তিনি গতকাল (মঙ্গলবার) সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় ওই মন্তব্য করেন।
সুখেন্দু বাবু বলেন, ‘গত ছয় মাস আগে সরকারি হিসাবে অসমে দুই লাখ চল্লিশ হাজার লোককে ‘ডি-ভোটার’ বা সন্দেহজনক ভোটারের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু মাত্র ৬ মাসের মধ্যে ২ লাখ ৪০ হাজার সংখ্যাটা কীভাবে, কোন জাদুবলে, কোন মায়াবলে, চল্লিশ লাখে পৌঁছল তা আমরা সরকারের কাছে জানতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিশালসংখ্যক মানুষকে আসলে রাষ্ট্রহীন করা হচ্ছে। যেভাবে এক কলমের খোঁচায় চল্লিশ লাখ মানুষকে রাষ্ট্রহীন করে দেয়া হয়েছে, তা আজ পর্যন্ত পৃথিবীর বুকে কোথাও কখনো ঘটেনি।’
সুখেন্দু বাবু এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে বিবৃতি দেয়ার দাবি জানান।
তিনি উল্লেখ করেন, জাতিসঙ্ঘ সনদ, যেখানে ভারত সই করেছে, ১৯৫১ সালের, ১৯৬৭ সালের জাতিসঙ্ঘের প্রোটোকল এবং ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর জাতিসঙ্ঘের যে প্রস্তাব নেয়া হয়েছিল তাতে ভারত সই করেছে। নাগরিকত্ব বাতিলের ঘটনায় জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত কনভেনশন লঙ্ঘিত হয়েছে।
এদিকে, আজ (বুধবার) বেলা ১১ টায় সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার অধিবেশন শুরু হলে চেয়ারম্যান এম বেঙ্কইয়া নাইডু সবাইকে শান্ত থেকে সভার কাজ চালানোর জন্য সহায়তা করার আবেদন জানান। 
গতকাল (মঙ্গলবার) এনআরসি ইস্যুতে বিরোধীদের তুমুল হট্টগোলের জেরে অধিবেশনের কাজ কয়েক দফায় স্থগিত হয়ে যায় এবং অবশেষে সারাদিনের জন্য অধিবেশন মুলতুবি করে দিতে হয়।
বিজেপি সভাপতি ও রাজ্যসভার সদস্য অমিত শাহ গতকাল সংসদে বিরোধী সদস্যদের তীব্র প্রতিবাদ বিক্ষোভের মুখে তার ভাষণ দিতে পারেননি। চেয়ারম্যান আজ তাকে বক্তব্য রখার কথা বলতেই বিরোধীসদস্যরা হৈ চৈ শুরু করে দেন। চেয়ারম্যান সদস্যদের শান্ত হওয়ার আবেদন জানান কিন্তু তাতে সাড়া না মেলায় অবশেষে তিনি অধিবেশনের কাজ বেলা ১২ টা পর্যন্ত মুলতুবি করে দিতে বাধ্য হন।

No comments

Powered by Blogger.