নারায়ণগঞ্জে মডেল কন্যার লাশ উদ্ধার

নারায়ণগঞ্জে তালাবদ্ধ ঘর থেকে মাহমুদা আক্তার (৩০) নামে এক মডেল ও অভিনেত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। লাশটি কয়েক দিন আগের বলে পুলিশ জানিয়েছে। সোমবার রাতে সদর থানার গোগনগর আলামীননগর এলাকার মোহাম্মদ আলী আকবরের তিনতলা ভবনের নিচ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত মাহমুদা শহরের দেওভোগ নাগবাড়ী এলাকার আক্কাছ আলীর মেয়ে। শহরের উকিলপাড়া এলাকার ‘টপটেন’ নামে একটি মেগাশপে কাজ করতেন তিনি। ইতিপূর্বে তিনি একাধিক শর্টফিল্মেও কাজ করেছিলেন বলে জানা গেছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম জানান, সোমবার রাতে নিচ তলার ওই ফ্ল্যাট থেকে পচা দুর্গন্ধ ছড়ালে এলাকাবাসী পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ গিয়ে ফ্ল্যাটের দরজার বাইরের তালা ভেঙে প্রথমে অজ্ঞাত হিসেবে মাহমুদার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
এদিকে ওই নারীর ফ্ল্যাট তল্লাশি করে উদ্ধার করা হয় তার একটি পরিচয়পত্র। সেই পরিচয়পত্রের সূত্র ধরেই পুলিশ তার পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। খবর পেয়ে মঙ্গলবার বিকালে মাহমুদার পরিবারের লোকজন মর্গে ছুটে যায়। তবে কেন এবং কী কারণে মাহমুদাকে হত্যা করা হয়েছে তারা তার কিছুই বলতে পারেননি। এমনকি মাহমুদা যে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিল, তাও তারা জানেন না।
ওসি কামরুল ইসলাম আরো জানান, ইতিপূর্বে মাহমুদার বিয়ে হয়েছিল। সেই সংসারের সাত বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তানও রয়েছে। প্রায় দুই মাস আগে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক বয়ফ্রেন্ডকে স্বামী পরিচয় দিয়ে আলামীননগর এলাকার মোহাম্মদ আলী আকবরের বাড়ির ওই ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিল মাহমুদা। ধারণা করা হচ্ছে, দুই-তিন দিন আগে দ্বিতীয় স্বামী মাহমুদাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ফ্ল্যাটের দরজার বাইরে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছে। তবে তার সেই কথিত স্বামীর পরিচয় এখনো জানা যায়নি। পুলিশ তার পরিচয় জানার চেষ্টা করছে। তাকে গ্রেপ্তার করতে পারলে মাহমুদার মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তিনি আরো জানান, এ ব্যাপারে তদন্তের পাশাপাশি মামলার প্রস্তুতি চলছে।
তবে নিহত মাহমুদার পারিবারিক একটি সূত্র জানায়, মাহমুদার একমাত্র সন্তান জারা (৭)-এর জন্মের পর স্বামী হাবিবের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এরপর জারা তার নানা আক্কাস ও নানী সুফিয়ার সঙ্গেই বড় হয়ে উঠছে। মাহমুদা কখনো মেগা শপ ‘টপটেন’ আবার কখনো অনেক দিনের জন্য সুটিংয়ের কথা বলে বাড়ির বাইরে থাকত। বাবা-মা কিংবা পরিবারের কেউ জানতো না মাহমুদা পৃথক বাসা ভাড়া নিয়ে নারায়ণগঞ্জে থাকতো। এদিকে মাহমুদার মৃত্যুর কথা শুনে শিশু জারা খুঁজে বেড়াচ্ছে মাকে ।
অপরদিকে মাহমুদার ফেসবুক আইডির কিছু ছবিতে অনেক বন্ধুদের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ানো ও আড্ডার অসংখ্য চিত্র পাওয়া গেছে। হয়তো এদের মধ্যেই লুকিয়ে আছে মাহমুদার হত্যাকারী। যা পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসবে। এমনটাই বলছেন এলাকাবাসী। তার ফেসবুক আইডি ঘেঁটে দেখা যায় ৩রা জুলাইয়ের পর ২০শে জুলাই সে তার তিনটি ছবি আপলোড দিয়েছে। এবং ২৬শে জুলাই তাকে ফেসবুকে অ্যাকটিভ দেখা যায়। এরপর তাকে আর ফেসবুকে অ্যাকটিভ দেখা যায়নি।

No comments

Powered by Blogger.