খুলনা সিটি নির্বাচন: নিরাপত্তার শঙ্কায় ভোটাররা by রাশিদুল ইসলাম

খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার পরিবেশ থাকবে কি-না- এটা নিয়েই উদ্বেগ বেশি ভোটারদের। এরপর ভোট দিতে গিয়ে সংঘাত-সংঘর্ষের মধ্যে পড়তে হয় কি-না- তা নিয়েও দুশ্চিন্তা তাদের। আর প্রার্থীদের দুশ্চিন্তা নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে। ভোটাররা ভোট সঠিকভাবে দিতে পারবেন কি-না, সেই ভোট সঠিকভাবে গুনে-বুঝে নেয়া যাবে কি-না, কেন্দ্র দখল ও জাল ভোট কতটুকু নিয়ন্ত্রণে থাকবে- এসব নিয়ে উদ্বেগ তাদের। এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা আজ রোববার বিকেল তিনটায় বয়রাস্থ সরকারি মহিলা কলেজ অডিটোরিয়ামে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের  সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগদান করবেন। সভায় বিশেষ অতিথি থাকবেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। খুলনা মহানগরীর ৩১ নং ওয়ার্ডের ভোটার চায়ের দোকানদার মকবুল মোল্লা বলেন, দলে দলে সন্ধ্যার পরে যেভাবে মোটর সাইকেলে লোকজন আসে তাতে আমরা ভীতু হয়ে পড়ছি। আর এসব পোলাপান তো আমাদের এলাকার না। এদেরকে তো আমরা কেউ চিনি না। ভোটের দিন যদি এরা এইভাবে আসা যাওয়া করে তবে, বউ বাচ্চা দিয়ে ভোট দিতে যাব কি না তাই চিন্তা করছি।
একই এলাকার ভোটার ভ্যানে করে সবজি বিক্রেতা আবদুস সাত্তার ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে আস্তে আস্তে বলেন, ভোট দিতে না গেলেও নাকি ভোট হয়ে যাবে। পোলাপানরা বলছে-কাকা কষ্ট করে আর ভোট কেন্দ্রে যাওয়া লাগবে না। তবে, ধানের শীষের লিফলেট দিতে এসে এক যুবক বাড়িতে বলে গেছে- ‘ভয় নাই ভোট দিতে যাবেন’। জানি না কি করবো।
২৭ নং ওয়ার্ডের পূর্ব বানিয়া খামার এলাকার ভোটার বয়োবৃদ্ধ দিনমজুর নজু মিয়া বলেন, বাবা ভোট দিতে রাজি আছি। কিন্তু শেষ বয়সে ভোটের জন্য জীবন দিতে পারবো না। যদি কোন সমস্যা না থাকে তাহলে ভোট দিতে যাবো। কিন্তু মারামারি হলে আর যাবো না।
একইভাবে ইজিবাইক চালক খালেক তার সাথে সুর মিলিয়ে বলেন, ভোট হবে তো? যদি হয় তবে ভোটকেন্দ্রে যাবো। চাঁদাবাজদের চাঁদা দিয়ে যা আয় হয় তাই দিয়ে বাচ্চা কাচ্চাদের নিয়ে সংসার চালানো কষ্টকর। আমরা চাঁদাবাজদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবো কি না তা বর্তমান অবস্থাতে বোঝা যাচ্ছে না। দেখি আর কয়েকদিন যাক।
১৭ নং ওয়ার্ডের হাফিজ সড়কের ভোটার পান দোকানদার আবদুল কুদ্দুস বলেন, রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় অপরিচিত লোকের আনাগোনা বেড়ে যায়। এদের আচার-আচরণ দেখে তাদের নাম ঠিকানা জানতেও সাহস পাই না। কারণ অকারণে রাস্তায় জটলা করে চেঁচামেচি করতে থাকে। অনেক সময় একে অপরকে অকথ্য ভাষায় গালাগালিও দেয়। আগে এদেরকে কখনও দেখিনি। এলাকার মুরব্বীদের কাছে বললে তারা বলেন ১৫ তারিখ পর্যন্ত এ সব জ্বালা সহ্য করা লাগবে। বিএনপি’র নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান এজেন্ট ও জেলা সভাপতি এডভোকেট এসএম শফিকুল আলম মনা বলেন, কেসিসি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা বিভিন্নভাবে বিএনপি’র কর্মকাণ্ডে বাধা সৃষ্টি করছেন। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচনের মাঠে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দরকার। কিন্তু নির্বাচন কমিশন খুলনায় এখনও সে অবস্থা সৃষ্টি করতে পারেনি। উপরন্তু,  অকারণে বিএনপি নেতা-কর্মীদের গণগ্রেপ্তার করে নির্বাচনী কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। তাই নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে বিএনপিসহ সচেতনমহল শঙ্কায় রয়েছে।
আওয়ামী লীগের কেসিসি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও কেন্দ্রীয় নেতা এসএম কামাল হোসেন বলেন, নৌকার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে বিএনপি নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছে। বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু একের পর এক মিথ্যাচার করে জনগণের আস্থা অর্জনের ব্যর্থ চেষ্টা করছেন।  বিগত দিনে বিএনপির ব্যর্থতা সম্পর্কে নগরবাসী অবগত। তাই সাধারণ নাগরিকরা বিএনপি’র অপকৌশলের ফাঁদে পা দেবে না।
কেএমপি’র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া উইং-এর প্রধান) সোনালী সেন বলেন, ‘নির্বাচনকে ঘিরে পুলিশের কঠোর নজরদারি রয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। নির্বাচনকে কেউ প্রশ্নবিদ্ধ বা বাধাগ্রস্ত করতে সহিংসতার পথ বেছে নিলে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।’ গত বুধবার দিনগত রাতে পুলিশের অভিযানে বিএনপি’র ২১ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তারের পর সৃষ্ট পরিবেশ নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ পৃথক প্রেস ব্রিফিং করেছে। তাতে একে অন্যের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করা হয়। সেই সঙ্গে দুই দলের নেতাকর্মীদের মাঝে হামলা ও মামলার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।
খুলনার নাগরিক নেতা এডভোকেট কুদরত-ই-খুদা বলেন, ‘নির্বাচনের শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র বাকযুদ্ধ উত্তাপ ছড়াতে থাকে। যা নির্বাচনী প্রেক্ষাপটে স্বাভাবিকই ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার হঠাৎ করেই পাল্টে গেছে সেই পরিবেশ। এখন প্রশাসনের পক্ষে নির্বাচনের পরিবেশ রক্ষা করা চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। যা নগরবাসীর জন্য ভাবনার অন্যতম কারণে পরিণত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে আলমনগরে বিএনপি নেতাকর্মীর উপর হামলা করে। এতে বিএনপি নেতা আবদুস সামাদ ও ছাত্রদল নেতা আল আমিন তালুকদারসহ ৭ জন আহত হয়। এ ঘটনায় উল্টা আওয়ামী লীগ কর্মী আবদুুল হান্নান বাদী হয়ে বিএনপি’র ১১ নেতা-কর্মীর নামে খালিশপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় হান্নান অভিযোগ করেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রচারণার সময় তাকে মারধর ও নৌকা প্রতীক ভাঙচুর করে।
মহানগর বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ফখরুল আলম বলেন, ‘গণসংযোগ চলাকালে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ মিছিল বের করে বিএনপি’র গণসংযোগে চড়াও হয়। এ সময় বিএনপি’র সাত কর্মী আহত হন। পুলিশ সবই জানে। কারণ, তারাই পরিস্থিতি শান্ত করেছে। নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ততার কারণে তারা আইনি পদক্ষেপ নিতে বিলম্ব করছেন। বিএনপি অবশ্যই এ ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নেবে।’
বিএনপি’র  ৭ নেতা-কর্মী  গ্রেপ্তার: খুলনা জেলা পুলিশ শুক্রবার বিকালে এবং রাতে জেলার রূপসা ও দিঘলিয়া উপজেলা থেকে বিএনপি’র ৭ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। খুলনা জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও কেসিসি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক এডভোকেট এসএম শফিকুল আলম মনা জানান, গ্রেপ্তারকৃত নেতা-কর্মীরা গত কয়েকদিন যাবত কেসিসি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছিলেন। পুলিশ তাদেরকে প্রচারণায় অংশ নেয়া থেকে বিরত রাখার জন্যে গ্রেপ্তার  করেছে। তিনি এসব গ্রেপ্তারির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- জেলা বিএনপি’র ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রবি, রূপসা উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মুজিবর রহমান ঝনো, নৈহাটি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এবাদুল ইসলাম, রহিমনগরের বিএনপি কর্মী জহর আলী ও মনা, দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র যুগ্ম-সম্পাদক কামাল হোসেন এবং সেনহাটির ইউপি মেম্বর মোহাম্মদ আলী মিন্টু।
কেসিসিতে সংবাদ সম্মেলনে মেয়র মনিরুজ্জামান
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও বর্তমান মেয়র পদপ্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক ৯৫ কোটি ৬২ লাখ ৩৭ হাজার ৮৪৫ টাকা ৭২ পয়সা রেখে গিয়ে ৭শ্থ কোটি টাকার বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।  গতকাল শনিবার নগর ভবনের শহীদ আলতাফ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে কেসিসি’র মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, কেসিসি’র নির্বাচন উপলক্ষে প্রার্থীদের কাছ থেকে নগরবাসী সত্য ভাষণ ও কমিটমেন্ট আশা করেন। নগরবাসী তথা ভোটারদের কাছে অসত্য তথ্য উপস্থাপন করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা থেকে সকলকে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি। মেয়র মনিরুজ্জামান লিখিত বক্তব্যে বলেন, খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন ২০১৮ প্রচারণাকালে মেয়র প্রার্থীগণ নাগরিকদের উদ্দেশ্যে অনেক প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। নির্বাচিত হওয়ার পর এ সকল প্রতিশ্রুতি বা অঙ্গীকার বাস্তবায়ন হলে খুলনা মহানগরীর নাগরিক সুবিধা আরো বৃদ্ধি পাবে এবং বিভাগীয় শহর খুলনা অর্থনৈতিক, সামাজিক, অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলে সামগ্রিকভাবে এই এলাকার গুরুত্ব বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে মহানগরী উন্নয়নের পরিকল্পনাগুলি টেকসই হতে হবে। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে খুলনা মহানগরীকে মানুষের বসবাসের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পাবে। তিনি জনপ্রতিনিধিদের এ সকল বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনী প্রচারণাকালে সম্প্রতি কেসিসি’র সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক তার দায়িত্ব পালনের শেষ দিনে ৭শ’ কোটি টাকা রেখে গেছেন বলে প্রচার করছেন। কথাটি সত্য নয়। তিনি ২০১৩ সালের ৯ই মে মেয়র পদ হতে পদত্যাগ করেন। ১৩ সালের ১৫ই জুন অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন। তবে পরিষদের কাউন্সিলরগণ একই বছর ২৪শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দায়িত্বে বহাল ছিলেন। ঐ সময়ে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২৮ নং ওয়ার্ডের পরাজিত কাউন্সিলর আজমল আহমেদ তপন মেয়রস প্যানেলের এক নম্বর সদস্য থাকায় আইনগত কারণেই দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ১৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর নির্বাচিত মেয়র হিসেবে আমি বিজয়ী সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরবৃন্দদের সাথে নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করি। দায়িত্ব হস্তান্তরের স্বাক্ষরিত কাগজে সিটি করপোরেশনের ক্যাশভল্টে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ব্যাংক বিবরণী অনুযায়ী ৯৫ কোটি ৬২ লাখ ৩৭ হাজার ৮৪৫ টাকা ৭৩ পয়সা স্থিতির উল্লেখ ছিল। এ সম্পর্কিত সেই দিনকার দায়িত্ব অর্পণ ও গ্রহণকারী সভায় উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তপন কুমার ঘোষ। পরে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগকালে কেন্দ্রীয় নেতারা
বিএনপি’র কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজউদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের ইতিহাসে জিয়া পরিবারের অবদান কেউ মুছে ফেলতে পারবে না। দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন বিশেষত নারী ও শিক্ষার উন্নয়নে বেগম খালেদা জিয়ার অবদান ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আজ অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে রাখা অপশক্তি মিথ্যা মামলায় সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী ও বর্ষীয়ান একজন নারী খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রেখেছে। মিথ্যা বানেয়াট প্রচারণায় তারেক রহমানকে বিতর্কিত করছে। তিনি বলেন, দেশমাতার মুক্তি ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সংগ্রামকে তরান্বিত করতেই বিএনপি সিটি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। আর এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য দক্ষিণ বঙ্গের সর্বাধিক জনপ্রিয় নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি বলেন, খুলনার সার্বিক উন্নয়নে নজরুল ইসলাম মঞ্জুর কোনো বিকল্প নেই। আগামী ১৫ই মে নগরবাসী তাদের যোগ্য প্রতিনিধিকে বেছে নেবে। মেজর হাফিজ শুক্রবার সন্ধ্যায় নগরীর নিউ মার্কেট এলাকায় কেসিসি নির্বাচনে বিএনপি’র মনোনীত ও ২০ দলীয় জোট সমর্থিত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে গণসংযোগকালে এসব কথা বলেন। মাগরিবের নামাজের পর কর্মসূচি শুরু হয়। তিনি পায়ে হেঁটে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যান এবং ব্যবসায়ী, ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেন। গণসংযোগের এক পর্যায়ে কর্মসূচিতে এসে যোগ দেন কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মশিউর রহমান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, সাবেক এমপি কাজী আলাউদ্দিন, যশোর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু।
শুক্রবার বিকেলে নগরীর ২৬ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম বানিয়া খামার ক্লাবের মোড়ে অনুষ্ঠিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। এ সময় কাউন্সিলর প্রার্থী মনিরুল ইসলাম ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী শামসুন নাহার লিপিকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক চিফ হুইপ জয়নাল আবদীন ফারুক শুক্রবার বিকাল ৫টা থেকে মাগরিব পর্যন্ত ৩১ নং ওয়ার্ডের লবণচরা, বান্দাবাজার, ক্ষেত্রখালী খালপাড়, চুমকি রোড, ইসলামপাড়া ও জিন্নাহ্‌ পাড়া এলাকায় গণসংযোগ করেন। এরপর বউবাজার ও মুক্তার খালপাড়ে পৃথক দুই পথসভায় বক্তৃতা করেন। পাটকল শ্রমিকদের মজুরি কমিশন ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। শুক্রবার বিকালে নগরীর খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের ক্রিসেন্ট জুটমিল গেটে অনুষ্ঠিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ দাবি জানান তিনি। কেসিসি নির্বাচন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এ পথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী নিতাই রায় চৌধুরী, সাবেক হুইপ মুজিবর রহমান সারোয়ার, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, জোট নেতা সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন ঈসা, এসএম আরিফুর রহমান মিঠু, মুজিবর রহমান এইচএম ডালিম, আবু তাহের মজুমদার, দীন মোহাম্মদ, বিপ্লবুর রহমান কুদ্দুস, আবুল কালাম জিয়া, আসাদুজ্জামান আসাদ, মোহাম্মদ হোসেন, মোকসেদুল আলম প্রমুখ। এর আগে নেতৃবৃন্দ বিআইডিসি রোড এলাকায় ধানের শিষের পক্ষে ব্যাপক গণসংযোগ করেন। ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে শুক্রবার সকাল ৯ টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত জিয়া পরিষদ খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি হুমায়ূনের নেতৃত্বে জেলা ও মহানগর জিয়া পরিষদ খালিশপুর পিপলস গোল চত্ব্বর, ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশুপার্ক ও হাজী মো. মহসিন কলেজের সামনে গণসংযোগ লিফলেট বিতরণ করেন এবং ধানের শীষ মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য ভোটারদের মাঝে বিভিন্নভাবে যুক্তি উপস্থান করেন। নজরুল ইসলাম মঞ্জুর পক্ষে শুক্রবার নগরীর ডাকবাংলো, সিমেট্রি রোড, পিকচার প্যালেস ও থানার মোড়, কেডি ঘোষ রোড এবং হেলাতলা এলাকায় কয়েকজন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র শিল্পী গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেন। শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন, জাসাসের সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক হেলাল খান, জাকির হোসেন রোকন, খলনায়ক আজাহার আলী চৌধুরী শিবা সানু, মোহাম্মদ ফেরদৌস ফকির, আমির হোসেন বাবু, ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুর মিয়া, চিত্র নায়িকা শাহ নূর, শেখ তরিকুল ইসলাম তরু, শাহনাজ পারভীন, সরোয়ার হোসেন, আক্তার হোসেন লাবু, মাহবুব হোসেন প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.