সীমান্ত এলাকার ডিসিদের কাছে মাদক চোরাকারবারিদের তালিকা by দীন ইসলাম

মাদক চোরাকারবারিদের তালিকা সীমান্তবর্তী জেলার ডিসিদের কাছে পৌঁছে গেছে। ওই তালিকায় রয়েছে মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত অসাধু ব্যক্তিদের নাম, ঠিকানা ও ব্যক্তিগত পরিচয়। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলার মাদক চোরাচালানের রুট/ পয়েন্ট , বেচাকেনার স্পট ও স্থানগুলো সম্পর্কেও বিস্তারিতভাবে বলা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সারা দেশের মাদক চোরাকারবারিদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। জেলাওয়ারি ওই তালিকায় উল্লেখ করা মাদক চোরাচালানকারিদের নাম, পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করার পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। একাধিক ডিসি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সুরক্ষা সেবা বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী মাদক চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিবেদন পাঠাচ্ছেন তারা। ওই সব প্রতিবেদনের কপি তারা মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছেও পাঠাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের চার দিকে ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে ভারত থেকে ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদক চোরাকারবারিরা নিয়ে আসছে। অন্যদিকে মিয়ানমার থেকে দেদারসে ঢুকছে ইয়াবা। এসব মাদক চোরাকারবারি ও কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের তালিকা জয়পুরহাট, গাইবান্ধা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরা, দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার, জামালপুর, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার ডিসির কাছে পাঠানো হয়েছে। এদিকে গত মাসের প্রথম দিকে জামালপুরের ডিসি আহমেদ কবীর মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে ভারত ও মিয়ানমার থেকে বিধিবহির্ভূতভাবে আসা বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য চোরাচালানি ও ব্যবহারকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ সর্ম্পকে একটি চিঠি দেন। ওই চিঠিতে তিনি জানান, জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ এবং বকশীগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে ভারতের সীমান্ত রয়েছে। এর আগে পত্রের মাধ্যমে ওই সব সীমান্ত এলাকায় মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত অসাধু ব্যক্তিদের নাম ও ঠিকানা, মাদক চোরাচালানের পয়েন্ট বা রুট এবং মাদকদ্রব্য কেনাবেচার স্পট বা স্থানগুলো যাচাই বাছাই করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। এ ছাড়া এসব মাদক চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সামাজিকভাবে তাদের বয়কটের কথাও বলা হয়। এর ভিত্তিতে আকস্মিক অভিযান পরিচালনা করে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ বিভিন্ন সংস্থাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ বছরের মার্চ মাসে বিজিবি, পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, র‌্যাব ও টাস্কফোর্স ৮৯৬টি অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় তারা ৫০ লাখ ৭৬ হাজার ৫৮০ টাকার মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে। এ অভিযানে ২৪১ জন ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট আদালতে ১৭২টি মামলা করা হয়েছে। বিজিবি জামালপুর সীমান্ত এলাকায় প্রতিদিন টহল জোরদার করেছে। বিভিন্ন জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মাদক চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে নেয়া ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রতিমাসে তারা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে জানাচ্ছেন।

No comments

Powered by Blogger.