যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে সিরিয়ায় ধ্বংসযজ্ঞ চলছেই

জাতিসংঘ ঘোষিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব লঙ্ঘন করে সিরিয়ায় ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রেখেছে সরকারি বাহিনী। তথাকথিত যুদ্ধবিরতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে বৃহস্পতিবারও ইস্টার্ন ঘৌটায় নির্বিচারে বোমা নিক্ষেপ করেছে তারা। এদিন সিরিয়া সরকার ও এর মিত্র বাহিনীর চালানো বিমান হামলায় শিশুসহ অন্তত পাঁচজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ খবর দিয়েছে আল-জাজিরা। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা বলেছে, বৃহস্পতিবার ইস্টার্ন ঘৌটার কয়েকটি স্থানে বোমা নিক্ষেপ করে সরকারি বাহিনী। এতে পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
আহত হয়েছেন আরো প্রায় ডজনখানেক মানুষ। যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস-এর মুখপাত্র ফায়েজ ওরাবি পাঁচ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হোয়াইট হেলমেটস বলেছে, নিহতদের মধ্যে এক শিশুও রয়েছে। স্থানীয় এক মানবাধিকারকর্মী জানিয়েছেন, হামলা বন্ধ হওয়ার খবরকে ইস্টার্ন ঘৌটার মানুষ উপহাস মনে করে। তারা এক সেকেন্ডের জন্যও এই খবর বিশ্বাস করে না। হামলা বন্ধ হওয়ায় সরকার তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। সিরিয়া সরকার বা রাশিয়া, কোনো পক্ষই বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা বন্ধ করতে চায় না।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ইস্টার্ন ঘৌটায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে দফায় দফায় প্রচেষ্টা চালানো হলেও তা ব্যর্থ হয়েছে। এই অঞ্চলটি রাজধানী দামেস্কের উপকণ্ঠে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সর্বশেষ অঞ্চল। ২০১৩ সাল থেকে এই অঞ্চল বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ওই বছরে সরকার বিরোধীরা প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। কিন্তু আসাদ বলপ্রয়োগ করে এই আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করেন। পরে বিরোধীরা সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করে। তারা পুরো দেশের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ২০১৫ সালে রাশিয়ার সহায়তায় আসাদ সরকার সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত শহরগুলো পুনর্দখল করতে শুরু করে। তবে ইস্টার্ন ঘৌটা এখনো বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। সিরিয়ার সরকার ও রুশ বাহিনী অঞ্চলটি অবরুদ্ধ করে রেখেছে। সেখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীও পৌঁছতে দেয়া হচ্ছে না। সবশেষে ১৮ই ফেব্রুয়ারি সেখানে বড় ধরনের অভিযান শুরু করে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ও রাশিয়া। তবে হামলাকারীদের দাবি, তারা শুধু সন্ত্রাসীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, সরকারি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত ১৯টি মার্কেট, ৭টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ৬টি স্কুল, ৩টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও ১০টি সিভিল ডিফেন্স সেন্টার ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.