আন্দোলন-নির্বাচনের জন্য তৃণমূলকে প্রস্তুতের নির্দেশনা

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায়ে চলমান আন্দোলন ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য বিএনপির দৃষ্টি এখন নেতাকর্মীদের দিকে। দলের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে তৃণমূলকে উজ্জীবিত ও সক্রিয় করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত টিম প্রধানদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ৫১ টিম প্রধানের সঙ্গে বৈঠককালে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হাইকমান্ডের এ নির্দেশনার কথা জানান। একই সঙ্গে বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে সফর শেষ করে প্রতিবেদন দেয়ার অনুরোধ জানান তিনি। এ ছাড়া টিম প্রধানদের পরিবর্তন করে ১৫ মে থেকে দ্বিতীয় দফা তৃণমূল সফরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে দলের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে। নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে সারা দেশে দলের সাংগঠনিক অবস্থা ও টিম প্রধানদের করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে টিম প্রধানদের মধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, জয়নুল আবদিন ফারুক, মিজানুর রহমান মিনু, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী, মজিবর রহমান সারোয়ার, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, আসাদুল হাবিব দুলু, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কর্নেল (অব.) আনোয়ারুল আজীম, মাহবুবুর রহমান শামীম, শামা ওবায়েদ, বিলকিস জাহান শিরিন, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল আউয়াল খান ও তাইফুল ইসলাম টিপু উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, মাঠপর্যায়ে দলের বর্তমান অবস্থা, আন্দোলন ও নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং করণীয় নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে টিম প্রধানরা ঘরোয়া আলোচনা করবেন। কোনো এলাকায় বিরোধ থাকলে সে ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য নিতে হবে। জেলা সফর শেষে বর্তমান টিম প্রধানরা একটি সাংগঠনিক প্রতিবেদন কেন্দ্রে জমা দেবেন।
এরপর ১৫ মে থেকে দ্বিতীয় ধাপে জেলা সফরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ ক্ষেত্রে শুধু টিম প্রধান পরিবর্তন হবে। তারাও কেন্দ্রে একটি প্রতিবেদন জমা দেবেন। উভয় প্রতিবেদনই হাইকমান্ডে জমা দেয়া হবে। তা পর্যালোচনা শেষে একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেয়া হবে। সরকারের নির্যাতনের শিকার, গুম, খুন ও কারাবন্দি নেতাকর্মীদের পরিবারের খোঁজ নেয়া, মামলা ও তাদের পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থাসহ সার্বিক বিষয় নজরে আনা উচিত বলে বৈঠকে একাধিক নেতা সুপারিশ করেন। জেলা সফরকালে ২০ দলীয় জোট বিশেষ করে জামায়াত প্রসঙ্গে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি- এমন বক্তব্য দিতে দলের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার দাবিটি জোরালোভাবে তুলে ধরতে তৃণমূল নেতাদের আহ্বান জানাতে বলা হয়েছে। আন্দোলনসহ যে কোনো পরিস্থিতিতে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের জন্য নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে হবে এমন বার্তাও দিতে হবে টিম প্রধানদের। বৈঠকের পর মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, ৫১টি দল সারা দেশের বিভিন্ন জেলায় যাবেন। সেখানে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে ও অনানুষ্ঠানিকভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মিলিত হবেন। আন্দোলন, নির্বাচনসহ সব বিষয় নিয়েই আলোচনা হবে। ২২ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি শেষ হবে ৭ মে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, এ সফরে দলের শক্তি আরও বৃদ্ধি পাবে এবং ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের জন্য নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হবেন।

No comments

Powered by Blogger.