ফটিকছড়িতে মরিচের ফলন ভালো, দামে হতাশ চাষিরা

ফটিকছড়ি উপজেলায় এবার মরিচ চাষ হয়েছে ৩৫০ একর জমিতে। ফলনও হয়েছে ভালো। কিন্তু দাম নিয়ে হতাশ চাষিরা। এখনো লাভের মুখ দেখছেন না তঁারা। চাষিরা বলেন, উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় এবার মরিচের চাষাবাদ হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে চাষিরা খেত থেকে নতুন মরিচ তুলে বাজারে বিক্রির জন্য আনতে শুরু করেছেন। বিশেষ করে উপজেলা সদর, নাজিরহাট হাট, আজাদী বাজার, নানুপুর বাজার, কাজীরহাট, নারায়ণহাট ও মীর্জারহাটে এখন মরিচের বাজার জমে উঠেছে। সরেজমিনে নাজিরহাট পৌর এলাকার দৌলতপুরে গিয়ে দেখা যায়, খেত থেকে মরিচ তোলায় ব্যস্ত চাষিরা। মরিচ তুলে কেউ বড় ঝুড়িতে রাখছেন, কেউ বস্তায় ভরছেন। দৌলতপুর এলাকার মরিচচাষি নুরুল আলম (৪২) বলেন, ‘১ হাজার মরিচের চারা ৩০০ টাকায় কিনেছি। প্রতি একরে ৭ হাজার চারা রোপণ করা হয়। বেশি দামে কিনতে হয়েছে সার ও কীটনাশক। শ্রমিকের মজুরি দ্বিগুণ হয়েছে। সব মিলিয়ে এক একর জমিতে মরিচ চাষে খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। ইতিমধ্যে এক একর জমিতে মরিচ উৎপাদিত হয়েছে ৩০০ কেজি, যা বিক্রি করে ১২ হাজার টাকা পাওয়া গেছে।
বাকি মরিচ বিক্রি করলে হয়তো খরচ উঠবে, কিন্তু লাভের মুখ দেখার সম্ভাবনা নেই।’ উপজেলা সদর বিবিরহাট বাজারের পাইকারি মরিচ ব্যবসায়ী ছৈয়দ আহাম্মদ (৫২) বলেন, ‘ফটিকছড়ি উপজেলায় এবার মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। যদি বাইরের মরিচ বাজারে না আসে, তাহলে বর্তমান মূল্যেও লোকসানের মুখে পড়বেন না চাষিরা। তবে বাইরের মরিচ বাজারে এলে দাম আরও কমে যাবে। এতে চাষিরা লোকসানের মুখে পড়তে পারেন।’ চাষিরা বলেন, ফটিকছড়িতে উৎপাদিত মরিচ মূলত বিক্রি হয় উপজেলার নাজিরহাট, বিবিরহাটসহ উত্তর চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও রাউজানের বিভিন্ন হাটবাজারে। সেখানে মরিচ পরিবহন করে নিয়ে যান চাষিরা। এখন প্রতি কেজি কঁাচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। অথচ গত বছর প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। এর আগের দুই বছরও প্রায় একই দামে বিক্রি হয় মরিচ। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লিটন দেব নাথ প্রথম আলোকে জানান, ফটিকছড়িতে চাষিরা গত এক মাস ধরে নতুন মরিচ তুলতে শুরু করেছেন। প্রতি একর জমিতে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ কেজি পর্যন্ত মরিচ উৎপাদিত হয়েছে, যা আগে কখনো হয়নি। পরিবেশ অনুকূলে থাকায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। দাম কম হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন যে দামে মরিচ বিক্রি হচ্ছে, তাতে চাষিদের লোকসানের আশঙ্কা আছে বলে মনে হয় না। কারণ মরিচের উৎপাদন তো বেশি হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.