৩০০ মোটরসাইকেল ও ৭৫টি গাড়ি নিয়ে মহড়া

আগামী সংসদ নির্বাচনে যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে ৩০০ মোটরসাইকেল ও ৭৫টি ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে গতকাল শনিবার ঝিকরগাছা উপজেলা সদরে মহড়া দিয়েছেন মেজর জেনারেল (অব.) নাসির উদ্দীন। এ কর্মসূচি ঠেকাতে বর্তমান সাংসদ মনিরুল ইসলামের অনুসারীরা গতকাল সকালে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আগে থেকেই মহড়া দিয়ে মাঠ দখলের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাল্টাপাল্টি মহড়ায় গত শক্রবার রাত থেকে ঝিকরগাছা সদরে দুই পক্ষের অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ ও র্যা ব সদস্যরা সকাল থেকেই ঝিকরগাছা সদরে অবস্থান নিয়েছিলেন। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে যশোর বিমানবন্দর থেকে নাসির উদ্দীন মোটরসাইকেল ও গাড়ির বহর নিয়ে ঝিকরগাছা সদরে ঢোকেন। এ সময় সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। গাড়ির ছাদ খুলে হাতমাইকে স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি এই এলাকার সন্তান। এখান থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছি। সরকারি দায়িত্বে থাকার কারণে এত দিন আপনাদের কাছে আসতে পারিনি। এখন থেকে আমাকে আপনাদের মাঝে পাবেন। আমি আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে চাই।’ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আজকের কর্মসূচি বানচাল করতে বর্তমান সাংসদ মনিরুল ইসলামের লোকজন সকাল থেকে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে আমার লোকজনের মধ্যে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা সন্ত্রাসের মোকাবিলা করব।’
মাসখানেক আগে নাসির উদ্দীন আরেকবার ঝিকরগাছায় মহড়া দিয়েছিলেন। রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচি নিয়ে তিনি এর আগে কখনো ঝিকরগাছায় আসেননি। নাসির উদ্দীন নিজেকে ঝিকরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য দাবি করেন। গতকালের মহড়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে নাসির উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঝিকরগাছার লোকজন আমার সঙ্গে রয়েছে। যে কারণে ৩০০টি মোটরসাইকেল ও ৭৫টি প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসে করে এলাকার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমার কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে। তারা এখানে আর সন্ত্রাসীদের দেখতে চায় না।’ জানতে চাইলে সাংসদ মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তিনি (নাসির উদ্দীন) আওয়ামী লীগের কেউ নন।’ স্থানীয় রাজনীতিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ঝিকরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগ দুই অংশে বিভক্ত। একাংশের নেতৃত্ব দেন সাংসদ মনিরুল, অপর অংশ নাসির উদ্দীনকে সমর্থন করছে। উপজেলা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলামসহ কমিটির বড় অংশ মেজর জেনারেল (অব.) নাসির উদ্দীনের সঙ্গে বর্তমানে সভা-সমাবেশ করছে। অপরদিকে দলের সাধারণ সম্পাদক মুসা মাহমুদসহ অপর অংশ সাংসদ মনিরুল ইসলামের সঙ্গে আছে।

No comments

Powered by Blogger.