রামগঞ্জে চুরির অপবাদে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে আনোয়ারা বেগম নামের এক গৃহবধূকে খেজুরের রস চুরির অপবাদ দিয়ে বিবস্ত্র করে বর্বর নির্যাতন চালানো হয়েছে। শুধু তাই নয় সালিশি বৈঠকে গ্রাম্য মাতব্বর মেম্বার মো. খিজির আহম্মেদ ও মো. বিল্লাল এবং নারায়ণপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি খোরশেদ আলম দুলুর উপস্থিতিতে বিচারের রায়ের ২০ হাজার টাকা দিতে না পারায় ওই গৃহবধূর ৪০ হাজার টাকার একটি গরু নিয়ে গেছে। অপরদিকে ওই গৃহবধূকে বিবস্ত্র করার ভিডিও চিত্র ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় উপজেলাব্যাপী ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্ট ঘটনায় ৫ই মার্চ  নির্যাতিতা গৃহবধূ আনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে রামগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় উপজেলার ৫নং চন্ডিপুর ইউনিয়নের ফকিরপুর গ্রামের গোল মাধের বাড়িতে। আনোয়ারা বেগম ওই বাড়ির দিনমজুর মো. মনিরের স্ত্রী।
সূত্রে জানা যায়, চন্ডিপুর ইউনিয়নের ফকিরপুর গ্রামের গোল মাধের বাড়ির দিনমজুর মনিরের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম নিজের কয়েকটি খেজুর গাছ পার্শ্ববর্তী নারায়ণপুর গ্রামের রাজের বাড়ির সোলেমানকে বর্গা দেয়। কিন্তু বর্গা দেয়ার পর সলেমান গৃহবধূ আনোয়ারাকে রস না দিয়ে নিজেই একাএকা ভোগ করতে থাকে। পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আনোয়ারা বেগম নিজেই একটি খেজুর গাছের রস আনতে যায়। এ সময় সোলেমান তার দলবল নিয়ে গৃহবধূ আনোয়ারা বেগমকে চোর আখ্যা দিয়ে ঘটনাস্থলে বেদম মারধর করে আটক করে পার্শ্ববর্তী নারায়ণপুর ওয়ার্ড মেম্বার মো. বিল্লাল, ফকিরপুর ওয়ার্ডের মেম্বার খিজির আহম্মেদ ও নারায়ণপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি খোরশেদ আলম দুলুর উপস্থিতিতে সালিশি বৈঠক বসিয়ে জোরপূর্বক আনোয়ারা বেগমকে চোর আখ্যা দিয়ে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু আনোয়ারা ওই টাকা দিতে অস্বীকার করায় শতশত গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে সোলেমানের নেতৃত্বে বাড়ির আহসান উল্যা, কাউনিয়া বাজারের আঃ মান্নান, এমরান, নারায়ণপুরের আঃ রব, মো. লিটন, মো. স্বপনসহ স্থানীয় লোকজন আনোয়রাকে বেদম মারধর করে বিবস্ত্র করে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়। পরে একপর্যায়ে তার গোয়ালঘর থেকে ৪০ হাজার টাকা মূল্যের একটি গরু নিয়ে যায়। এ ঘটনায় থানার এসআই মহসিন রোববার বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মহসিন জানান, তদন্তের স্বার্থে এখন বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন ভূঁইয়া জানান, মেম্বারের মুখে ঘটনাটি শুনেছি। তবে বিস্তারিত বলতে পারবো না।
রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. তোতা মিয়া জানান, এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। তদন্ত চলছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

No comments

Powered by Blogger.