তিন পার্বত্য জেলায় শান্তিপূর্ণ হরতাল

পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইনের সংশোধনী বাতিল করাসহ বিভিন্ন দাবিতে বাঙালিদের দুটি সংগঠনের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল গতকাল সোমবার খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। বাঙালি ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য নাগরিক পরিষদ এই হরতাল আহ্বান করে। স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাঙামাটি শহরের কলেজ গেট, বনরূপাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বাঙালি ছাত্র পরিষদের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নেন। হরতাল চলাকালে দূরপাল্লার ও অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন রুটের বাস চলেনি। শহরে অটোরিকশাও চলাচল করেনি। হরতাল চলাকালে রাঙামাটি শহরের অফিস-আদালত খোলা ছিল। তবে বিপণিবিতান ও ছোটখাটো দোকানপাট বন্ধ ছিল। সকাল ১০টায় হরতালের সমর্থনে বাঙালি ছাত্র পরিষদের নেতা-কর্মীরা রাঙামাটি শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি শহরের কাঁঠালতলী ও বনরূপা এলাকা প্রদক্ষিণ করে। বিকেল পাঁচটায় বাঙালি ছাত্র পরিষদের নেতা-কর্মীরা শহরের বিএম বিপণিবিতানের সামনে থেকে আবারও মিছিল বের করেন। মিছিলটি বনরূপা পেট্রলপাম্প এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। রাঙামাটি জেলা বাঙালি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বাঙালি ছাত্র পরিষদের সহসভাপতি মো. হাবিবুর রহমান, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাজিম উদ্দিন, জেলা বাঙালি ছাত্র পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মো. শফি উল্লাহ ও লংগদু উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. বকুল। সমাবেশে মো. জাহাঙ্গীর বলেন,
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে চাকরির ক্ষেত্রে ও শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে পার্বত্য কোটা চালু না করা পর্যন্ত বাঙালি ছাত্র পরিষদ আন্দোলন চালিয়ে যাবে। পার্বত্য নাগরিক পরিষদের সভাপতি মো. আলকাছ আল মামুন ভূঁইয়া বলেন, ‘দাবি পূরণ না হলে পার্বত্যবাসী আরও কঠোর কর্মসূচি দেবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের সব সম্প্রদায়ের মানুষ আমাদের কর্মসূচির সঙ্গে একমত।’ কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, হরতালে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল শেষ হয়েছে। তিনি জানান, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহরের বনরূপা, কলেজ গেটসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। এদিকে খাগড়াছড়িতেও শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল শেষ হয়েছে। হরতাল চলাকালে খাগড়াছড়ি শহর থেকে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন ছেড়ে যায়নি। তবে শহর এলাকায় অটোরিকশা চলাচল করেছে। দুপুরের পর থেকে দোকানপাটও খোলা ছিল।খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি তারেক মোহাম্মদ আবদুল হান্নান জানান, কোথাও কোনো ধরনের পিকেটিং হয়নি। পুলিশ ছিল সতর্ক অবস্থায়। বান্দরবান প্রতিনিধি জানান, হরতালে বান্দরবান শহর থেকে দূরপাল্লার যানবাহন ছেড়ে যায়নি। তবে শহরে জীবনযাত্রা ছিল স্বাভাবিক।

No comments

Powered by Blogger.