ঋণভারে জর্জরিত ট্রাম্প

রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ৬৫ কোটি টাকা ঋণ করেছে। অন্যদিকে নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে এসে প্রচারণা ব্যয় দ্বিগুণ করেছেন ট্রাম্প। কিন্তু বিবিসি জানায়, ডেমোক্রেটিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনের নির্বাচনী খরচের তুলনায় এ ব্যয় কিছুই নয়। গত মাসে নির্বাচনী প্রচারণায় নিজের ব্যয় দ্বিগুণ করেও হিলারির অর্ধেকে পড়ে আছেন ট্রাম্প। জুলাই মাসে এ কোটিপতি ব্যবসায়ীর প্রচারণা শিবির থেকে খরচ করা হয় ১ কোটি ৮৫ লাখ ডলার। যা জুন মাসের ৭৮ লাখ ডলারের নির্বাচনী ব্যয়ের তুলনায় দ্বিগুণ পরিমাণ বেশি। মার্কিন কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রচারণা ব্যয় দ্বিগুণের বেশি পরিমাণ বৃদ্ধি করেও সাবেক ফার্স্ট লেডি হিলারির কাছেও ঘেঁষতে পারেননি ট্রাম্প। গত মাসে হিলারির নির্বাচনী প্রচারণায় খরচ হয়েছে ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার; যা ট্রাম্পের ব্যয়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, নির্বাচনী প্রচারণায় গত দুই মাসে টেলিভিশন বিজ্ঞাপনের পেছনে ইতিমধ্যে ৬ কোটি ডলার খরচ করেছেন হিলারি। কিন্তু এ মাসেই সর্বপ্রথম টেলিভিশন বিজ্ঞাপনের জন্য অর্থ বিনিয়োগ করেন ট্রাম্প। গত সপ্তাহে টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে ৫০ লাখ ব্যয় করেন তিনি। তবে এ পর্যন্ত নিজের প্রচারণার জন্য শুধুমাত্র হ্যাট বিতরণ করে ট্রাম্প খরচ করেছেন ৪ লাখ ২০ হাজার ডলার। বিবিসি জানায়, নির্বাচনী ব্যয়ের হিসেবে ২০১২ সালের মার্কিন নির্বাচনে অংশ নেয়া বারাক ওবামা ও মিট রমনির স্বল্প ব্যয়ের রেকর্ডকেও হার মানিয়েছেন ধনকুবের ট্রাম্প।
সব দিকে থেকে হিলারির চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছেন তিনি। শুধু নির্বাচনী ব্যয়ে নয়, হিলারির কর্মী সংখ্যাও ট্রাম্পের তুলনায় ১০ গুণ বেশি। হিলারির ৭০০ জন প্রচারণা কর্মীর বিপরীতে ট্রাম্পের আছে মাত্র ৭০ জন। এদিকে তহবিল সংগ্রহেও পিছিয়ে আছেন সাবেক এ রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী। এ মাসে হিলারির তুলনায় ১ কোটি ৫০ লাখ ডলার কম জমা পড়েছে ট্রাম্পের তহবিলে। হিলারির ৫ কোটি ২০ লাখের বিপরীতে ট্রাম্পের ফ্রান্ডে এসেছে মাত্র ৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার। তবে এখন পর্যন্ত নিজের নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যক্তিগত তহবিল থেকে মোট ৫ কোটি ডলার খরচ করেছেন ট্রাম্প। এদিকে দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিভিন্ন সময়ের হিসাব অনুসারে ইতিমধ্যে মোট ৬৫ কোটি টাকা ঋণ করেছে ট্রাম্পের রিয়েল এস্টেট কোম্পানি। তবে প্রকাশ্যে তিনি এ পরিমাণ অর্থ ঋণের কথা স্বীকার করেননি। তার দেয়া হিসাবের তুলনায় এই ঋণের পরিমাণ দ্বিগুণ বলে জানা যায় প্রতিবেদনে। ডেমোক্রেট নেত্রী ওয়ারেন বাফেট ট্রাম্পকে বারবার সম্পদের বিবরণী প্রকাশ করার আহ্বান জানালেও তাতে পাত্তা দেননি এ রিপাবলিকান প্রার্থী। নিজের কর প্রদানের প্রতিবেদন এবং মোট আয়-ব্যয়ের তথ্য পর্যন্ত প্রকাশ্যে ঘোষণা করেননি ট্রাম্প। প্রতিবেদনে বলা হয়, হোয়াইট হাউসের জন্য নির্বাচনী দৌড় শুরু করার সময় ট্রাম্প তার ঋণ সংক্রান্ত যে তথ্য দিয়েছেন তার সঙ্গে বাস্তবের হেরফের আছে বলে মনে করা হচ্ছে। ১০৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে ট্রাম্প জানান, নিজের রিয়েল এস্টেট কোম্পানির নামে ৩১ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ঋণ আছে তার। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে দেখা যায় সেই ঋণ ৬৫ কোটি ডলারের সমান।

No comments

Powered by Blogger.