অতীত ভোলার ম্যাচ

ফুটবলে বেশ এগিয়েছে মধ্য এশিয়ার দেশ তাজিকিস্তান। বাংলাদেশের তুলনায় তো বটেই। অতীত ইতিহাস তাই বলে। শক্তিশালী এই দলটির বিপক্ষে একবার জিতেছে লাল-সবুজরা। আবার ড্রও করেছে দু’বার। সেই তুলনায় হারের সংখ্যা একটু বেশিই (পাঁচবার)। তবে অতীত ভুলে এবার ভালো কিছু করে দেখানোর স্বপ্ন দেখছেন মামুনুলরা। গুরু যখন ডাচ ডি ক্রুইফ, আর শিষ্যদের নেতৃত্বে মামুনুল- তখন স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে বদ্ধপরিকর বাংলাদেশের ফুটবলাররা। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের পর আরও একবার তাজিকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের প্লে-অফ ম্যাচে আজ দুশানবেতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে মাঠে নামবে লাল-সবুজের দল। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় ম্যাচটি শুরু হবে। তাজিকিস্তান নামটা শুনলেই হয়তো মনের পর্দায় দুঃসহ স্মৃতি আর কনকনে ঠাণ্ডা আবহাওয়া ভেসে ওঠে। গত নভেম্বরে অ্যাওয়ে ম্যাচে ০-৫ গোলে বিধ্বস্ত হওয়াটা তো দুঃসহ স্মৃতিই। সেবার লড়তে হয়েছে প্রচণ্ড ঠাণ্ডার সঙ্গেও।
এবার এর কোনোটিই নেই মামুনুলদের চিন্তায়। কারণ দুশানবেতে এখনকার আবহাওয়া অনেকটাই স্বাভাবিক। আর এবারের লাল-সবুজের দলটিও বেশ উজ্জীবিত। শুনুন বাংলাদেশ দলের ডাচ কোচ ডি ক্রুইফের মুখ থেকেই, ‘ম্যাচটি সামনে রেখে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছি। ফুটবলাররা বেশ উজ্জীবিত এই আবহাওয়ায়। কিছু দিনের জন্য আমি দলের সঙ্গে ছিলাম না। তবে আবার ফিরে এসেছি। বাংলাদেশের ফুটবলে কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছি। এবার তাজিকিস্তানে ভালোমানের ফুটবলার সঙ্গে নিয়ে এসেছি। ফল কী হল তা দেখার বিষয় নয়। আমরা ইতিবাচক ফুটবল খেলতে চাই। আমি আশাবাদী, ছেলেরা ভালো কিছু করে দেখাবে।’ এই তাজিকিস্তানের সঙ্গে জুনে ডি ক্রুইফের অধীনে ড্র করলেও লোপেজের তত্ত্বাবধানে নভেম্বরে দুশানবেতে ০-৫ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। সেটি মনে করিয়ে দিয়ে ডি ক্রুইফ বলেন, ‘ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের হোম ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করেছিল বাংলাদেশ, তখন আমি ছিলাম। যেখানে অতিরিক্ত সময়ে গোল হজম করে ড্র করেছিল মামুনুলরা। নইলে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ত তারা। আমি জানি, ১০ বছর ধরে তোমাদের (তাজিকিস্তান) দেশ ফুটবল উন্নয়নে কাজ করছে। আমি জানি, তাজিকিস্তান অনেক শক্তিশালী তাদের ফুটবলারদের দক্ষতার জন্য। কারণ এ ফুটবলাররা রাশিয়ান লীগে খেলে। তবে আমরাও কম যাই না। ম্যাচের শেষ পর্যন্ত দেখতে চাই। লড়াই করতে প্রস্তুত আমার ফুটবলাররা।’ এবার কিছুটা পেশাদারিত্বের সুরেই বলেন এ ডাচম্যান,
‘মনে রাখতে হবে, এটা ফুটবল। যে কোনো কিছুই ঘটতে পারে এখানে। যেমন একটি লাল কার্ডেই ম্যাচের মোড় ঘুরে যেতে পারে।’ গুরুর এমন কথায় যেন কিছুটা সাহস পেলেন অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম। একই সুর তার কণ্ঠেও, ‘আমাদের দল একটি ভালো অবস্থানে এসেছে। দীর্ঘদিন আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি এবং লড়াই করতে প্রস্তুত। অ্যাওয়ে ম্যাচ সব সময়েই কঠিন সফরকারীদের জন্য। যার প্রমাণ গত দু’বারের দেখায়। প্রথমবার ঢাকায় তাজিকিস্তান হারতে হারতে ড্র করেছিল আমাদের সঙ্গে। দ্বিতীয়বার আমরা তাজিকিস্তানে এসে ০-৫ গোলে হেরেছিলাম।’ তিনি যোগ করেন, ‘তাজিকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামতে আমরা শংকিত নই। কারণ তাদের আগের সেই মান এখন আর নেই। আমার জানা মতে, তাজিকিস্তানের নুরুদ্দিন অনেক ভালোমানের ফুটবলার। এটা নিশ্চিত যে, আমরা নিজেদের সবটুকু দিয়ে লড়াই করব এ ম্যাচে। আমি বলতে চাই, আমরাও পারি ভালো কিছু করে দেখাতে।’ তাজিকিস্তানের বিপক্ষে কঠিন এক লড়াইয়ে নামার আগে বুধবারও ক্রুইফের তত্ত্বাবধানে অনুশীলন করেছেন মামুনুলরা।
হেড টু হেড
সাল বাংলাদেশ তাজিকিস্তান
২০০৩ ০ ২
০ ২
২০০৬ ১ ৬
২০০৭ ১ ১
০ ৫
২০১০ ২ ১
২০১৫ ১ ১
০ ৫

No comments

Powered by Blogger.