বিশ্বের দীর্ঘতম রেল সুড়ঙ্গের উদ্বোধন

সুইজারল্যান্ডে নির্মিত বিশ্বের দীর্ঘ ও গভীরতম টানেল ফুঁড়ে
বেরিয়ে আসছে ট্রেন (উপরে)। গোথার্ড বেজ টানেল নামের
এ সুড়ঙ্গটি বুধবার উদ্বোধন করা হয়। ৫৩ দশমিক ৯
কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এ টানেলটি উদ্বোধনের সময় মুখোমুখি
কথা বলছেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল ও সুইস
প্রেসিডেন্ট জোহান শ্নাইডার আম্মান (ডানে)। ১৭ বছরের
দীর্ঘ পরিশ্রমে ১২ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে তৈরি হয়েছে এটি।
বুধবারের ছবি -রয়টার্স
বিশ্বের দীর্ঘতম ও গভীরতম রেলওয়ে সুড়ঙ্গ উদ্বোধন করল সুইজারল্যান্ড। টানা ১৭ বছর ধরে আল্পস পর্বতমালার মধ্যদিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে রেল চলাচলের এ সুড়ঙ্গ। বিবিসি অনলাইনের এক খবরে বুধবার এ তথ্য জানানো হয়েছে। গথার্ড বেস টানেল নামের এ সুড়ঙ্গের মাধ্যমে উত্তর ও দক্ষিণ ইউরোপের মধ্যে দ্রুত গতির রেলযোগাযোগের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হল। এ টানেলের কারণে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে পণ্য পরিবহন এবং মানুষের ভ্রমণ ব্যয় ও সময় অনেক কমে এল। সুইজারল্যান্ডের এরস্টফেল্ড থেকে বোইডো পর্যন্ত বিস্তৃত এ টানেল।
উদ্বোধন উপলক্ষে টানেলে বিভিন্ন ধর্মের পণ্ডিতদের মাধ্যমে প্রার্থনাসভার আয়োজন করা হয়। সুইজারল্যান্ড জানিয়েছে, এর মাধ্যমে পণ্য পরিবহনে ইউরোপে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হল। এতদিন ভূপৃষ্ঠের রেলওয়ে ব্যবহার করে বছরে লাখ লাখ লরি পণ্য পরিবহন করে আসছিল। এখন তার পরিবর্তে ট্রেনের মাধ্যমে পণ্য পরিবহন করা হবে। এটি সুইসদের অন্যতম অর্জন বলে আখ্যা দিয়েছেন পরিবহনমন্ত্রী পিটার ফুয়েগলিস্টলার। রয়টার্সকে তিনি জানান, এটি তাদের জন্য পর্বত জয় করার মতো। যেমনভাবে সাগরকে জয় করেছিল ডাচরা।
আগে বিশ্বের দীর্ঘতম রেল টানেল ছিল জাপানের সেইকান রেল টানেল। এর দৈর্ঘ ছিল ৫৩ দশমিক ৯ কিলোমিটার। কিন্তু সুইজারল্যান্ডের গথার্ড বেস টানেলের দৈর্ঘ ৫৭ দশমিক ১ কিলোমিটার। যে কারণে এটিই এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় রেল টানেল। আর ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সংযোগকারী ইউরোটানেল এখন তৃতীয় দীর্ঘতম রেলটানেল। এর দৈর্ঘ ৫০ দশমিক ৫ কিলোমিটার। উদ্বোধনী যাত্রায় বিপরীত দিক থেকে দুটি যাত্রীবাহী ট্রেন ছাড়া হচ্ছে। উদ্বোধনী যাত্রীরা র‌্যাফেল ড্রয়ের মাধ্যমে টিকিট পেয়েছেন। সুড়ঙ্গের বাইরে দীর্ঘতম রেল টানেলের উদ্বোধন করেন সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট স্নেইডার আম্মান। এ অনুষ্ঠানে ইউরোপের কয়েকজন শীর্ষ নেতা অংশ নেন।
* গণভোটের মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের জনগণ ১৯৯২ সালে টানেল নির্মাণের অনুমতি দেন।
* টানেল নির্মাণের কাজ শুরু হয় ১৯৯৬ সালে। নির্মাণকাল ১৭ বছর।
* ব্যয় হয়েছে ১২ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ডলার।
* টানেল নির্মাণে ৪ কোটি ঘন মিটার কনক্রিট ব্যবহার করা হয়েছে।
* ভূপৃষ্ঠ থেকে ২ দশমিক ৩ কিলোমিটার গভীর দিয়ে টানেলটি নির্মিত।
* আল্পস পর্বতমালার ৭৩ ধরনের কঠিন ও নরম পাথর কেটে এটি নির্মাণ করা হয়েছে।
* প্রতিদিন ২৬০টি মালবাহী ট্রেন এবং ৬৫টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করবে।
* একবার ভ্রমণে সময় লাগবে ১৭ মিনিট।
* এ খাতে ২ হাজার ৬০০ লোকের কর্মস্থান হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.