অবশেষে ময়লা পানি অপসারণ

কামরাঙ্গীরচরের ছাতা মসজিদ সড়কের সৃষ্টি স্কুলের সামনের পয়োনিষ্কাশন
লাইনের সেই ময়লা পানি অপসারণ করা হয়েছে৷ এখন বিদ্যালয়ে আসা-
যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের কোনো সমস্যা হয় না৷ ছবিটি গতকাল তোলা
কামরাঙ্গীরচরের ছাতা মসজিদ সড়কের সৃষ্টি স্কুলের সামনের পয়োনিষ্কাশন লাইনের ময়লা পানি অপসারণ করা হয়েছে। কিন্তু পয়োনিষ্কাশন লাইনটি এখনো স্থায়ীভাবে সংস্কার করা হয়নি। বেশি বৃষ্টি হলে আবার সড়কে জলাবদ্ধতা হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পয়োনিষ্কাশন লাইন বন্ধ হয়ে এই সড়কে প্রায় ১০ মাস ধরে ময়লা পানি জমে ছিল। প্রতিদিন তা মাড়িয়েই বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হতো শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের। ৩ এপ্রিল ‘সেই স্কুল ফটকে ১০ মাস ধরে জলাবদ্ধতা’ শিরোনামে প্রথম আলোতে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর কয়েক দিন পরই পানি অপসারণে পাইপ বসান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইদুল ইসলাম। গতকাল শনিবার সাইদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ছাতা মসজিদ সড়ক এলাকায় পয়োনিষ্কাশন লাইনের মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছিল। এখন সড়কের পানি অপসারণের জন্য সাময়িকভাবে এই পাইপ বসানো হয়েছে। পয়োনিষ্কাশন লাইনটি স্থায়ীভাবে সংস্কার করতে ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। বর্ষা মৌসুমের আগেই তা সম্পন্ন করা হবে। সরেজমিন দেখা যায়, সৃষ্টি স্কুলের প্রধান ফটকের সামনে সেই পয়োনিষ্কাশন লাইনের কোনো ময়লা পানি নেই। একটি পাইপ দিয়ে পানি বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলা হচ্ছে। বিদ্যালয়ের সামনের দেয়ালে ময়লা পানির ছাপ লেগে আছে। বেলা দুইটার দিকে স্কুল ছুটির পর সড়কে হেঁটে বাসায় যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। পথচারীরাও যাতায়াত করছে স্বচ্ছন্দে। তবে ভাঙাচোরা সড়কে উড়ছে ধুলাবালি। ছাতা মসজিদ সড়কের বাসিন্দা আবদুল জলিল বলেন, আগে এই সড়কে ময়লা পানি মাড়িয়েই স্কুলের শিক্ষার্থীসহ সবাই চলাচল করত। প্রায়ই রিকশা উল্টে ঘটত দুর্ঘটনা। এ ছাড়া জলাবদ্ধতার কারণে সড়কের দুই পাশে প্রায় ১৫টি দোকান দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। অবিলম্বে এই সড়কের পয়োনিষ্কাশন লাইন ও সড়কটি সংস্কার করতে হবে।
এই ময়লা পানি মাড়িয়েই বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া
করতে হতো শিক্ষার্থীদের৷ ছবিটি গত ৩০ মার্চের
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রায় এক বছর আগে পয়োনিষ্কাশনের লাইন বন্ধ হয়ে এই সড়কে পানি জমতে থাকে। প্রায় ছয় মাস আগে সড়কের পানি সেচ দিতে একটি পানির পাম্প দেন সাইদুল ইসলাম। এই পাম্প দিয়ে দিনে অন্তত সাত থেকে আটবার পানি সেচ দিতে হয়। তা না করা হলে আশপাশের বাসাবাড়ির ভেতর ঢুকে পড়ে ময়লা পানি। গত ২৫ মার্চ সড়কের এই ময়লা পানি অপসারণ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দা রিকশাচালক মো. জসিম। গত ৩০ মার্চ নিহত জসিমের স্ত্রী কুলসুম বেগমের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়েছিল৷ তিনি বলেছিলেন, সৃষ্টি স্কুলের সামনেই তাঁদের বাসা। সড়কের পানি বেড়ে যাওয়ায় গত ২৫ মার্চ সেচ দিতে গিয়েছিলেন জসিম। তখন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিনি মারা যান। তাঁদের দুই ছেলে। বড় ছেলে রবিউল ইসলাম ওই স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। সৃষ্টি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বি এম মনির হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের সামনে ময়লা পানি থাকায় প্রায় দেড় শ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে গেছে। বছরের শুরুতে শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যাও আগের তুলনায় অর্ধেক। কিন্তু এখন আর বিদ্যালয়ে আসতে শিক্ষার্থীদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। পয়োনিষ্কাশন লাইনটি স্থায়ীভাবে সংস্কার করা দরকার।

No comments

Powered by Blogger.