বেহাল সড়ক, মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ মানুষ

সংস্কারকাজের জন্য পো​স্তগোলার রাস্তার
ফুটপাত এভাবে বন্ধ করে রাখা হয়েছে
সড়কের পিচ-কংক্রিট উঠে ভেতরের ইট বেরিয়ে গেছে, কোথাও হা করে আছে বড় বড় গর্ত। ভেতরে বারোয়ারি বর্জ্য জমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বুড়িগঙ্গা প্রথম সেতুর পশ্চিমে পোস্তগোলা এলাকার এই সড়কটি এখন স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্ভোগের অন্যতম কারণ। এর সঙ্গে আছে মশার উৎপাত, ঘন ঘন বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের সমস্যাও।  গতকাল শনিবার বিকেলে এলাকায় গিয়ে নাগরিক দুর্ভোগের এসব চিত্র চোখে পড়ে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত পোস্তগোলার এই সড়কপথেই যাতায়াত করে করিমুল্লার বাগ, ফরিদাবাদ হয়ে সূত্রাপুর-শ্যামবাজারমুখী ট্রাকসহ সব ধরনের যানবাহন। পোস্তগোলার মোড়েই ঢাকা কটন মিল হাইস্কুল। শুষ্ক মৌসুমে ধুলা আর বৃষ্টি হলে কাদায় মাখামাখি হয়ে শিক্ষার্থীরা স্কুলে যায়। বছরের পর বছর সড়কটির এই বেহাল দশা।  সড়কের এক ধারে দুলালের চায়ের দোকান। তিনি জানান, চোখের সামনেই ছাত্রছাত্রী, পথচারীদের হোঁচট খেয়ে পড়তে দেখেন। রিকশা-অটোরিকশা উল্টে যায়। দিনের পর দিন এ ধরনের ঘটনা ঘটায় বিষয়টি এখন সবার কাছে চক্ষু সওয়া হয়ে গেছে।  দোকানে চা-বিস্কুট খাচ্ছিলেন এলাকার রিকশাওয়ালা ফজল মিয়া। থাকেন শ্মশানঘাট রোডে। বললেন, ‘ভোটের সমে নেতারা কইছিল সব সমস্যার সমাধান কইরা দিব। তয় এই রাস্তা কী দোষ করছে?’  খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ডিএসসিসির রাস্তা-ফুটপাত-নর্দমা উন্নয়ন প্রকল্পের তালিকায় এই সড়কটির নাম নেই। কেন? জানতে চাইলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মাসুদ বলেন, ইচ্ছা থাকলেও সড়কটির সংস্কার সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, এই সড়কসহ দোলাইরপাড় পর্যন্ত পুরো সড়ক মেরামতের দায়িত্ব নিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)।  ছুটির দিন বলে সওজের স্থানীয় কার্যালয় গতকাল বন্ধ ছিল। মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, সড়কটির মেরামতের জন্য দুটি ভাগে মোট ৪২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে এখন পর্যন্ত কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।  সড়কের ধারে এখানে-সেখানে জমে আছে পানি। সে পানিতে মশা। আলমবাগ, করিমুল্লার বাগ, কবরস্থান রোড, শ্যামপুর সব স্থানেই নালা-নর্দমাগুলো পরিণত হয়েছে মশার প্রজননক্ষেত্রে। করিমুল্লার বাগের বাসিন্দা শামসুল আলম বললেন, ‘মশার আর দোষ কি, নালা নর্দমা পরিষ্কার করে না। মশা জন্মানোর জায়গা ঠিক কইরা রাখছে সিটি করপোরেশনই।’ আলমবাগের দোকানি শহীদুল্লাহ, শ্মশানঘাট রোডের গ্রিল মিস্ত্রি আক্কাস আলীসহ অনেকেরই এক কথা, মাস খানেক হচ্ছে এলাকায় মশার ওষুধ ছিটাতে দেখেননি তাঁরা।  অস্বীকার করলেন না ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মাসুদও। বললেন, সিটি করপোরেশন থেকে যে ওষুধ দেওয়া হয়, তা তিন দিনেই শেষ হয়ে যায়। এক-দেড় মাসের আগে আর পাওয়া যায় না। এর ফলে মশার উপদ্রব বেড়ে যায়।  ডিএসসিসির স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বলা হয়, প্রতি ওয়ার্ডে দৈনিক গড়ে ২৫ লিটার ওষুধ দেওয়ার কথা। বর্তমানে ওষুধের মজুত ফুরিয়ে আসছে। তাই বরাদ্দও হচ্ছে কম।  খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এলাকায় কিছুদিন আগেও গ্যাস ও পানির সমস্যা ছিল। বর্তমানে নেই। তবে বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের ঘটনা নিয়মিতই ঘটছে।

No comments

Powered by Blogger.