টালিউড অভিনেতা সোহমের ভাগ্যে কী?

সোহম
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার প্রথম দফার দ্বিতীয় পর্বের ভোট আজ সোমবার স্থানীয় সময় সকাল সাতটা থেকে শুরু হয়েছে। এই পর্বে ভোট নেওয়া হবে তিনটি জেলার ৩১টি আসনে। এর মধ্যে রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ১৩টি, বাঁকুড়ার নয়টি ও বর্ধমান জেলার নয়টি আসন। আজকের নির্বাচনে টালিউড অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীর ভাগ্য নির্ধারিত হবে। সোহম লড়ছেন তৃণমূলের টিকিটে। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বামফ্রন্টের সুজিত চক্রবর্তী। গত বছরের নির্বাচনে এই আসনে তৃণমূল প্রার্থী সামান্য ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছিলেন সিপিএম প্রার্থী সুস্মিতা বিশ্বাসকে। এবার সেই আসনের প্রার্থী সোহম। অভিনেতা হিসেবে তাঁর একটা বাড়তি সুবিধা থাকলেও জয়ের জন্য তাঁকে তীব্র লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হবে। এর আগে প্রথম পর্বে ভোট নেওয়া হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলার ১৮টি আসনে। এবারের প্রার্থী সংখ্যা ১৬৩। এর মধ্যে নারী ২১ জন। প্রার্থীদের ৩৭ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। সব আসনে তৃণমূলের প্রার্থী রয়েছে। তাঁদের মধ্যে বাম দলের ২২, কংগ্রেসের ৮, ডিএসপির একজন ও স্বতন্ত্র রয়েছে ৪৬ জন। এবার ভোট দেবেন ৬৯ লাখ ৯০ হাজার ৯০০ জন। আর আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্য থাকছে ৩৬ হাজার ৫১১ জন। রাজ্য পুলিশ থাকছে ১৭ হাজার ৫১৭ জন। ২০১১ সালের নির্বাচনে ৩১টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ২৩টি আসন। বাম দল আটটি আসন। আর ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে এই আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ২৪টি, বিজেপি ছয়টি আর বাম দল একটি আসন। প্রথম পর্বের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর গাফিলতি নিয়ে বিরোধীরা সরব হলে এবার দ্বিতীয় দফার ভোট আরও অবাধ ও নিরপেক্ষ করার জন্য নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। এই ভোটে কোনো ভোটকেন্দ্রে পুলিশ প্রবেশ করতে পারবে না। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তারা ভোটকেন্দ্রে থাকবে। পুলিশ থাকবে ভোটকেন্দ্রের বাইরে নিরাপত্তার দায়িত্বে। তবে আজকে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও বাইরে তাদের দেখা যায়নি। সকালে আজ রসুলপুরে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। পাত্রসায়রে বন্দুকধারীরা গুলি ছুড়েছে। জামুরিয়ায় বাম-কংগ্রেস জোটের অন্তত ১০ জন পোলিং এজেন্টকে শাসক দলের সমর্থকেরা মারধর করেছে। তবে অন্যান্য কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট শুরু হয়েছে। আজকের ভোটে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের ভাগ্য নির্ধারণ হবে। তিনি পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় কেন্দ্র থেকে লড়বেন। এই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হলেন প্রদ্যোৎ ঘোষ আর বিজেপির প্রার্থী কৃষ্ণপদ রায়। সূর্যকান্ত মিশ্র ২০১১ সালের নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকেই সিপিএমের প্রার্থী হিসেবে জিতেছিলেন। তবে লোকসভা নির্বাচনের ভোটের নিরিখে হেরেছিল এই আসনে সিপিএম। এবার এই আসনে তীব্র চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন তিনি। এই পর্বের ভোটে আরও ভাগ্য নির্ধারিত হবে কংগ্রেসের সাবেক রাজ্য সভাপতি, সাবেক মন্ত্রী ও বিধায়ক মানস ভূঁইয়ারও। মানস ভূঁইয়া লড়ছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের সব কেন্দ্র থেকে। গত নির্বাচনে এই আসন থেকে জয়ী হয়েছিলেন মানস ভূঁইয়া। এবারও তিনি প্রার্থী হয়েছেন কংগ্রেস-বাম জোটের। আর মানস ভূঁইয়ার সঙ্গে লড়ছেন তৃণমূলের নির্মল ঘোষ। লড়াই এখানে তীব্র হলেও জয়ের সম্ভাবনা বেশি মানস ভূঁইয়ার। এ দিন আরও ভাগ্য নির্ধারিত হবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষেরও। এই কেন্দ্রে জোট প্রার্থী রয়েছেন জ্ঞানসিং সোহন পাল। দীর্ঘদিনের এই বিধায়কের বয়স এখন ৯৩ বছর। আরও একজন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ হবে আজকের নির্বাচনে। তিনি সাবেক মন্ত্রী মলয় ঘটক। তিনি লড়ছেন উত্তর আসানসোল কেন্দ্রে তৃণমূলের টিকিটে। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস-বাম জোটের প্রার্থী ইন্দ্রানী মিশ্র। ইন্দ্রাণী কংগ্রেস দলীয় প্রার্থী। মলয় ভৌমিককে নিয়ে এলাকায় বিতর্ক, সমালোচনা থাকায় তিনি এবার অত সহজে পার পাবেন না। তীব্র লড়াইয়ের মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে ইন্দ্রাণীর কাছে।

No comments

Powered by Blogger.