পুলিশের অপরাধের শাস্তি দৃশ্যমান চায় সংসদীয় কমিটি

পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খ্যাতি পাওয়া পুলিশ বাহিনীর ইমেজ নষ্ট করার ষড়যন্ত্র চলছে বলে মনে করছে সংসদীয় কমিটি। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশ এত সফলতা অর্জন করলেও দুই-চার জন পুলিশ সদস্যের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড জনগণের কাছে পুরো বাহিনীকেই বিতর্কিত করে তুলছে। কমিটি পুলিশের ইমেজ রক্ষায় অপরাধের সঙ্গে জড়িত সদস্যদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত ও সেই শাস্তি দৃশ্যমান করার সুপারিশ করেছে। গতকাল সংসদ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। কমিটির পক্ষ থেকে তল্লাশির নামে কোনো নাগরিক যেন অহেতুক হয়রানির শিকার না হন সেবিষয়ে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের জন্য বলা হয়েছে। আর প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তল্লাশি কার্যক্রম নিয়মিত মনিটরিং করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, পুলিশ বাহিনী অনেক ভালো কাজ করছে, তবে দুই/চার জন সদস্য অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। তাদের শাস্তি নিশ্চিত ও দৃশ্যমান করার সুপারিশ করা হয়েছে। তিনি বলেন, পুলিশ বাহিনীর ইমেজ নষ্ট করার একটা প্রচেষ্টা চলছে, এ জন্য পুলিশ বাহিনীকে আরও বেশি সতর্ক হওয়ার তাগিদ দেয়া হয়েছে। কমিটির আরেক সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, তল্লাশির ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে যেন হয়রানি করা না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে আরও ভালোভাবে তল্লাশি চালানোর জন্য পুলিশ বাহিনীকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। টিপু মুনশির সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, মো. শামসুল হক টুকু, মো. ফরিদুল হক খান, আবুল কালাম আজাদ, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ফখরুল ইমাম ও কামরুন নাহার চৌধুরী এবং সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তা গোলাম রাব্বী, সিটি করপোরেশনের এক কর্মকর্তা এবং অতি সমপ্রতি এক ছাত্রী হয়রানির বিষয়টি সামনে এনে কমিটিতে আলোচনা হয়। বৈঠকে বলা হয়, এ ধরনের ঘটনা পুলিশ বাহিনীর ইমেজকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এই দু’য়েকজনের দায় পুরো পুলিশ বাহিনী নিতে পারে না বলে কমিটিকে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে কমিটি পুলিশের ইমেজ ফিরিয়ে আনতে অপরাধীদের কোনোভাবেই ছাড় না দেয়ার পরামর্শ দেয়। এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে রোডের নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি পরিবহন মালিক কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসার এবং ড্রাইভার নিয়োগে পুলিশের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণের সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড বিল, ২০১৬ এর প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে। সমুদ্রসীমায় নজরদারি বৃদ্ধি, মানবপাচার রোধ, চোরাচালান প্রতিরোধ ও অবৈধ মৎস্য আহরণ বন্ধে  কোস্টগার্ড বহরের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে চূড়ান্ত করা বিলটি চলতি সংসদেই পাসের সুপারিশ করেছে কমিটি।

No comments

Powered by Blogger.