শরণার্থীতে এবার খড়্গহস্ত জার্মানি

এবার শরণার্থীদের ওপর খক্ষহস্ত হচ্ছে জার্মানি ও ফিনল্যান্ড। শরণার্থীদের ঢল প্রতিরোধে আইন কঠোর করছে জার্মানি। আর ফিনল্যান্ড চাইছে সেখানে আশ্রয় নেয়া শরণার্থীদের দুই- তৃতীয়াংশকেই দেশে ফেরত পাঠাতে। সুইডেনে ৮০ হাজার শরণার্থীকে বিতাড়নের ঘোষণার একদিনের মাথায় বৃহস্পতিবার দেশ দুটির পক্ষে এ ঘোষণা এল। জার্মানির ভাইস চ্যান্সেলর সিগমার গ্যাব্রিয়েল জানিয়েছেন, আলজেরিয়া, মরক্কো ও তিউনিসিয়াকে ‘নিরাপদ উৎস দেশের’ তালিকায় স্থান দিয়েছে। এর মানে হচ্ছে এখন থেকে এসব দেশ থেকে কাউকে শরণার্থী হিসেবে গ্রহণ করা হবে না। যাদের সীমিত শরণার্থী নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে, তাদের আগামী দুই বছর জার্মানিতে পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে আসার অনুমতি দেয়া হবে না। এছাড়া যেসব শরণার্থী দ্রুত আশ্রয় আবেদন করতে ব্যর্থ হয়েছেন, তাদের ফেরত পাঠানো হবে।
গত বছর জার্মানি প্রায় ১১ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। এদের অধিকাংশই যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে আসা। সম্প্রতি শরণার্থী ইস্যুতে অভ্যন্তরীণ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের চাপের মুখে রয়েছে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল। এক জরিপে জানা গেছে, শরণার্থী সংকটের জের ধরে ৪০ শতাংশ জার্মান মার্কেলের পদত্যাগ চায়। আগামী মার্চে জার্মানির তিনটি রাজ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া আগামী বছর দেশটিতে অনুষ্ঠিত হবে সাধারণ নির্বাচন। আসন্ন এ দুটি নির্বাচনে ভোটারদের মন রক্ষা করতেই মার্কেলের রক্ষণশীল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটস দল শরণার্থী ইস্যুতে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে ফিনল্যান্ডে আশ্রয় নেয়া ৩২ হাজার শরণার্থীদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশকেই ফেরত পাঠাতে চাইছে দেশটি। বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক পাইভি নের্গ এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন,
‘আমরা দুই-তৃতীয়াংশের কথা নীতিগতভাবে বলেছি। এর মানে হচ্ছে ৩২ হাজার শরণার্থীর দুই-তৃতীয়াংশ নেতিবাচক জবাব পেতে যাচ্ছে।’ এর আগে বুধবার সুইডেন জানিয়েছে, তারা ৮০ হাজার শরণার্থীকে জোর করে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেবে। জার্মানির প্রস্তাবিত এ পরিকল্পনার ব্যাপারে ইতিমধ্যে মরক্কো সাড়া দিয়েছে। দেশটির কোনো নাগরিক অবৈধভাবে জার্মানিতে গিয়ে থাকলে তারা তাকে ফিরিয়ে নেবে বলে জানিয়েছে। ক্ষমতাসীন জোটের তৈরি এ প্রস্তাবনায় কঠোর আশ্রয়নীতির কথা বলা হয়েছে। সেটি অনুমোদিত হলে আশ্রয় পাওয়া ব্যক্তি দুই বছরের মধ্যে তার কোনো আত্মীয়কে জার্মানি নিয়ে আসতে পারবেন না। নয়া এ পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, দেশটিতে যাদের অভিবাসনের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হবে তাদের দ্রুত নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। খসড়া এ প্রস্তাবনাটি আইনে পরিণত হতে সরকার এবং সংসদের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।

No comments

Powered by Blogger.