সিলেটে ছাত্রলীগের তুলকালাম ব্যবসায়ীদের সড়ক অবরোধ

সিলেটে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের চাঁদা দাবির ঘটনায় তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। চাঁদা না পেয়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা প্রথমে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এ নিয়ে পরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ কর্মীদের ধাওয়া-পালটা ধাওয়া হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে ব্যবসায়ীরা। পরে পুলিশের আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল বিকালে সিলেট নগরীর শাহজালাল উপশহর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এদিকে, ব্যবসায়ীরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক জাকারিয়া মাহমুদ। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, জাকারিয়া মাহমুদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের শিবগঞ্জ গ্রুপের কর্মীরা প্রায়ই ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করে। চাঁদা না দিলে ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে হেনস্থা হতে হয় ব্যবসায়ীদের। এ অবস্থায় কয়েক দিন ধরে ছাত্রলীগ নেতা জাকারিয়া মাহমুদ ও তার গ্রুপের কর্মীরা উপশহরের বি ব্লকের মসজিদ মার্কেটের আল বারাকা টেলিকমের স্বত্বাধিকারী জাকির হোসেনের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। কিন্তু বারবারই ব্যবসায়ী জাকির চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান। বলেন, এত টাকা তিনি দিতে পারবেন। এতে ক্ষুব্ধ হয় ছাত্রলীগের কর্মীরা। তারা গতকাল বেলা দেড়টার দিকে আল বারাকা টেলিকমে যায়। এ সময় তারা ওই ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে এবং দা, রামদা দিয়ে ব্যবসায়ীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। হামলার ঘটনায় ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা একত্রিত হয়ে ছাত্রলীগের কর্মীদের ধাওয়া দিলে এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা উপশহর দিয়ে পালিয়ে যায়। এদিকে, ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ব্যবসায়ীরা। তারা শিবগঞ্জ-মেন্দিবাগ সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। একপর্যায়ে শতাধিক ব্যবসায়ী রাস্তায় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় তারা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অগ্নিসংযোগ এবং ক্ষোভ প্রদর্শন করে। এভাবে প্রায় দুই ঘণ্টা রাস্তা  অবরোধ করে রাখে। ওই সময় সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এদিকে, বিকেল ৪টার দিকে পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। তারা চাঁদাবাজ ছাত্রলীগ নেতা জাকারিয়া মাহমুদকে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়। এর আগে ব্যবসায়ীরা সব চাঁদাবাজকে গ্রেপ্তারের দাবিতে পুলিশ কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
সিলেটে ১৫০ ব্যাটারিচালিত রিকশা আটক
সিলেটে জোরেশোরে শুরু হয়েছে ব্যাটারিচালিত রিকশা আটক অভিযান। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে নগরীর সব পয়েন্টে ব্যাটারিচালিত রিকশা আটক শুরু করেছে ট্রাফিক পুলিশ। বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত অভিযানে দেড় শতাধিক অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা আটক করা হয়। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার নিকোলিন চাকমা বলেন, উচ্চ আদালতে রিট খারিজ হওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অভিযান শুরু হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। এদিকে উচ্চ আদালতে গত ১৯ জানুয়ারি খারিজ হওয়া রিট ১৩৯৯৬/১২-এর নিষ্পত্তি সংক্রান্ত কাগজপত্র সিলেট রিকশা মালিক সমাজকল্যাণ সমিতির সভাপতি এমএএম শাহজাহান সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, সিলেটের জেলা প্রশাসক ও সিলেট সিটি করপোরেশনে রোববার দুপুরে হস্তান্তর করেন। এ সময় লিখিত আবেদনে উল্লেখ করা হয়, আদালত রিট আবেদনের রুল জারি করলেও কোথাও ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের অনুমতি দেননি। রিট খারিজ হওয়ায় বর্তমানে ব্যাটারিচালিত রিকশা উচ্ছেদে কোনো বাধা নেই। সিলেট রিকশা মালিক সমাজকল্যাণ সমিতির সভাপতির প্রধান উপদেষ্টা সহিদুল হোসেন আহমদ মামুন বলেন, আমরা রিট খারিজ সংক্রান্ত কাগজপত্র প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছি। রিট ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের অনুমতি নয়। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব বলেন, সিলেট নগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে এসএমপির সহায়তায় সিসিক অভিযান চালাবে। গত ১৯শে জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি এসএম মজিবুর রহমানের যৌথ বেঞ্চ শুনানি শেষে সিলেট ব্যাটারি চালিত রিকশা মালিক সমিতির রিট খারিজ করে দেন। এরপর থেকে রোববার অভিযান শুরু করে এসএমপির ট্রাফিক বিভাগ।

No comments

Powered by Blogger.