‘দেশে ফের গুম-খুন শুরু হয়েছে’

দেশে ফের গুম-খুন শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৬  বিএনপি নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও তাদের আদালতে পাঠানো হয়নি। অবিলম্বে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ারও দাবি জানিয়েছে দলটি। একইসঙ্গে সংঘটিত সব গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হতাকাণ্ডের বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে দলটি। আজ দুপুরে নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে  আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন দলের মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন। তিনি বলেন, ২২শে আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসার পথে রাজশাহীর তানোরের মুন্ডুমালা থেকে আবদুল লতিফের ছেলে বিএনপি কর্মী রব্বানী, শমসের আলীর ছেলে আবু আলী ও কাউসার আলীর ছেলে নুরুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ। এরপর গত ২৩শে আগস্ট একই স্থান থেকে এনামুল হকের ছেলে আপেল ও ৩০শে আগস্ট শাহাবুদ্দিনের ছেলে বাবু এবং ফজলু  মোল্লার ছেলে টুটুলকে ঢাকার খিলক্ষেত থেকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের সবার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের রানীহাটি ইউনিয়নে। অবিলম্বে এসব নেতাকর্মীকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে  দেয়ার দাবি জানিয়ে রিপন বলেন,  আমরা গুম-খুনের ঘটনায়  বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।  পাশাপাশি দোষীদেরকে আইনের আওতায় এনে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার আাহ্বান জানাচ্ছি।  তিনি বলেন, ছাত্রলীগের নেতা আরজু মিয়ার ক্রসফায়ারের ঘটনার পরপরই আমরা এ ব্যাপারে আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলাম। আমরা বলেছিলাম, সরকারি দলের ক্যাডারদের লোক দেখানো কয়েকটি ক্রসফায়ারের পর তারা বিরোধীদল দমনে একে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবে। আমাদের সে আশঙ্কা সত্যি পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, যখন আওয়ামী লীগের গায়ে লাগে তখন তাদের দলের নেতারা এর বিরুদ্ধে কথা বলে। আর বিএনপি সকল বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- ও গুমের  প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। রিপন বলেন, মহাজোট সরাকরের দোসর প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত সাবেক  স্বৈরাচার  এরশাদ রোববার বলেছেন, দেশ অন্ধকারে নিমজ্জিত। চারদিকে শুধু আতঙ্ক’। সরকারের অংশীদার যখন অভিযোগ তোলেন তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া উচিত। এরশাদ যে অভিযোগ করেছেন সেই অভিযোগ থেকে সরকার বাঁচতে পারবে না। বিএনপির মুখপাত্র বলেন, সিরীয় শিশু আয়লান সারা বিশ্বকে নাড়া দিলেও বাংলাদেশে মায়ের গর্ভে শিশু গুলিবিদ্ধের ঘটনায় সরকারকে নাড়া দেয়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এতটাই অবনতি হয়েছে যে তা সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। দেশে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে দাবি করে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, গণমাধ্যমসহ কোন প্রতিষ্ঠানই বর্তমানে ভীতির বাইরে কাজ করতে পারছেন না। সামরিক মার্শাল ল’ সরকার যতটা সহ্য করতো বর্তমান সরকার তাও করে না। প্রতিবাদ করলেই গুম, গুলি করছে। তিনি বলেন, বিএনপির নেতকর্মীদেরকে আটকের দুই তিন মাস পর গ্রেপ্তার  দেখানো হয়। এটা সংবিধান স্বীকৃত নয়। এসব অধিকার সংবিধানে দেয়া নেই। সংবিধান লঙ্ঘন করে প্রতিনিয়ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এসব কাজ করে যাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে এই সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস  চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী,  চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.