তারেকের পক্ষে লড়বেন ঢাকা বারের পাঁচ আইনজীবী!

আলোচিত সাত খুন মামলার অন্যতম আসামি র‌্যাবের সাবেক কর্মকর্তা লে. কর্নেল (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) তারেক সাঈদের পক্ষে মামলা লড়তে চান ঢাকা আইনজীবী সমিতির পাঁচ সদস্য। রোববার তারা নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম এ এইচ এম শফিকুল ইসলামের আদালতে  এ-সংক্রান্ত একটি আবেদন করেন। নিয়মিত হাজিরার অংশ হিসেবে আসামিদের রোববার আদালতে আনার পর ঢাকা বারের সদস্য সারোয়ার মিয়া, আজিজুল হক ভূঁইয়া, আবদুস সালাম, এ এস এম দেলোয়ার হোসেন ও মৌসুমী আবেদনটি করেন। আদালত থেকে বের হয়ে আইনজীবী সারোয়ার মিয়া বলেন, “আদালতকে আমরা বলেছি, এ ঘটনায় নিহতদের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে নারায়ণগঞ্জের একজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রয়েছেন। এ কারণে নারায়ণগঞ্জ বার থেকে কোনো আইনজীবী এ মামলায় কোনো আসামির পক্ষে আদালতে না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী, প্রত্যেক ব্যক্তিরই আইনি লড়াইয়ের জন্য আইনজীবী নিয়োগের অধিকার রয়েছে। আমরা নারায়ণগঞ্জ বার থেকে একজন আইনজীবীকে আমাদের সঙ্গে অংশ নিতে বলেছি। আদালত আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। পরবর্তী শুনানির দিন আগামী ৭ অক্টোবর শুনানিতে অংশ নিয়ে আমরা আসামি তারেক সাঈদের পক্ষে জামিনের আবেদন করব। এ ছাড়া আমরা আদালতে নকল তোলার জন্য আবেদন করেছি।” এদিকে নিয়মিত হাজিরার সময় তারেক সাঈদ আদালতকে বলেন, নারায়ণগঞ্জ বারের সভাপতি বাদীপক্ষের আইনজীবী। তার কারণে আইনি লড়াইয়ের জন্য তিনি কোনো আইনজীবী নিয়োগ করতে পারছেন না। এ ব্যাপারে মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ওই আইনজীবীরা আদালতে আবেদন দিলেও কোনো ওকালতনামা দাখিল করেননি। আর নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির বিরুদ্ধে তারা যে অভিযোগ করছেন, সেটিও সত্য নয়। তারা যে কাউকে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দিতে পারেন। কিন্তু আইনজীবী নিয়োগ না দিয়ে বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দেয়ার কোনো কারণ নেই। সাখাওয়াত হোসেন অভিযোগ করেন, আসামিপক্ষ মামলাটি নারায়ণগঞ্জ আদালত থেকে অন্যত্র বদলি করার জন্য এবং বিশেষ সুবিধা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন তৎপরতা শুরু করেছেন। মামলার পলাতক ১৩ আসামির মালামাল ক্রোকের জন্য আদালত পুলিশকে নির্দেশ দিলেও আটজনের মালামাল ক্রোক করা হয়েছে। গত তিন মাসেও বাকি আসামিদের মালামাল ক্রোক না করায় তিনি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ঠিকানা শনাক্ত না হওয়ায় বাকি পাঁচজনের মালামাল ক্রোক করা সম্ভব হয়নি বলে পুলিশ রোববার জানালে আদালত দ্রুত শনাক্ত করে তাদের মালামালও ক্রোক করার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে হাজিরা দেয়া আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। গত ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের ফতুল্লার শিবু মার্কেট এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। এর তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ পাওয়া যায়। এই ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বাদী হয়ে একটি ও আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় আরেকটি মামলা করেন। গত ৯ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ মণ্ডল আদালতে নূর হোসেন, র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা লে. কর্নেল (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) এম এম রানাসহ ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার ৩৫ আসামির মধ্যে ২২ জন কারাগারে রয়েছেন। বাকি ১৩ জন পলাতক।

No comments

Powered by Blogger.