বিদেশির সঙ্গে আলোচনা করতে পারলে কেন দেশবাসীর সঙ্গে নয় by বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

দেখতে দেখতে ৩৫ দিন চলে গেল মালুমই হলো না। আজ ক'দিন থেকে ভাবছি, দু'চার-দশটা বছর আগে থেকে যদি রাস্তায় কাটাতাম তাহলে কী আর এমন হতো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কথা শোনেন না, দেশ জ্বলেপুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে বিরোধী দলের নেত্রীর সাড়া নেই। দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ ছাত্র-যুবক পরীক্ষা দিতে পারছে না। কেউ দেখার নেই, শোনার নেই। দু'চার-পাঁচ-দশটা বছর শুধু রাস্তায় বসে থাকলে মানুষের সঙ্গে যে সম্পর্ক হতো- কথা না শুনে কারও কোনো উপায় থাকত? ৪০-৫০ বছর আগেও রাজনীতিতে মানুষের যে সম্পৃক্ততা ছিল আজ সেটা নেই। সবাই জানে রাজনীতি ছাড়া দেশ চলে না, কিন্তু কেন যেন রাজনীতির প্রতি সবার অনীহা। ৩৫ দিনেও দুই নেত্রীর ঘুম ভাঙেনি। জেগে ঘুমালে সে ঘুম ভাঙতে একটু সময় লাগে। '৭৫-এ বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিরোধ সংগ্রামে গারো পাহাড়ের পাদদেশে কয়েকজন ঘুমকাতুর কর্মীর জন্য একবার ঘুমের প্রতিযোগিতা দিয়েছিলাম। খাওয়া-দাওয়া, পেশাব-পায়খানা ছাড়া লম্বা ঘুম ভীষণ কঠিন। মনে হয় কলমাকান্দা মহাদেওয়ের সোহরাব অথবা ছোবহান। তাকে নিয়ে মারাত্মক বিড়ম্বনায় পড়েছিলাম। প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল ১৫-২০ জন। ১০-১৫ ঘণ্টা পর আউট হতে শুরু করে। কেউ ক্ষুধায়, কেউ পেশাব-পায়খানা, কেউ-বা শুয়ে থাকতে থাকতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠে পড়ে। ৩০-৩২ ঘণ্টায় সব খালি হয়ে যায়। তখন প্রতিদ্বন্দ্বী মাত্র একজন। রাবনের ভাই কুম্ভকর্ণ হিসেবে সে যে প্রথম হয়েছে এটা চিৎকার-চেঁচামেচি করে বলার পরও তার ঘুম ভাঙছিল না। চান্দভূই টিলার উপরে কেন্দ্রীয় অফিসে মাটিতে বিছানা করে প্রতিযোগিতার সূচনা করা হয়েছিল। তিন দিন অফিসের কাজকর্ম বন্ধ। সবাই উঠে গেছে কিন্তু বিজয়ীর ঘুম ভাঙছে না। ধাক্কাধাক্কি করে এদিক-ওদিক নিয়েও ঘুম ভাঙা যাচ্ছিল না। ওদিকে কলকাতার অতিথি হোমিওপ্যাথিক ডা. মালেক, অধ্যাপক সাঈদ, খুব সম্ভবত আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, যশোরের জেলা গভর্নর রওশন আলী কলকাতায় ফিরবেন। তাদের বিদায় সংবর্ধনা দিতে হবে। হেডকোয়ার্টারের প্রধান প্রধান কর্মকর্তা সবাই প্রতিযোগিতায় আটকে আছে। রহমান মাস্টার, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, সিলেটের শাহ আজিজ, বিয়ানীবাজারের জলিল, নারায়ণগঞ্জের নাসিম ওসমান, মঞ্জুরুল হক মঞ্জু, হাশমী, মাসুদ জামিল যুগল, সুজিত চক্রবর্তী, রাজা দীপঙ্কর তালুকদার, খোরশেদ আলম আর.ও., আরিফ আহমেদ দুলাল, আবদুল হালিম, সাভারের মাহাবুব, নড়াইলের জিন্নাহ, হালুয়াঘাটের কবির বেগ কেউ মুক্ত নয়। সবাই ঘুমের প্রতিযোগিতার দায়িত্বে। ৭০-৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে, খুবই বিব্রতকর অবস্থা। বিজয়ীর কানের কাছে ঢোল বাজানো হলো, তবুও ঘুম ভাঙল না। ওদিকে অতিথিদের বিদায় না দিলেও চলে না। গহিন জঙ্গলে আমরা থাকি। গাড়ি এসে দাঁড়িয়ে আছে। সে গাড়িও আর বেশি সময় রাখা যাবে না। শেষে এক বিচার সভা বসানো হলো। প্রতিযোগীর মাথার কাছে ১০-১২ জন কমান্ডার এক সভা করল। তাদের সিদ্ধান্ত প্রতিযোগীর ঘুম যদি সত্যি আর না ভাঙে তাহলে ডাক্তার দিয়ে নাড়ি পরীক্ষা করে গুলি করে কবর দিয়ে দেওয়া হোক। আলোচনা বেশ জোরে জোরেই হয়েছিল, যাতে জেগে ঘুমানোর কানে যায়। এক সময় ঘটনাস্থলে আমি গিয়ে ঘোষণা করলাম, ডাক্তার চেষ্টা চরিত্র করে ১৫ মিনিটের মধ্যে যদি ঘুম ভাঙাতে না পারে তাহলে তিন গুলিতে তাকে পরপারে পাঠিয়ে যথাযথ মর্যাদায় দাফন কাফন করা হোক। মনে হলো ঘোষণার পরপরই ঘুমের ভাব কিছুটা কেটে গেল। অন্যদিকে তাকে জোরে জোরে সময় গননা শুনানো হলো। ৫-৬ মিনিটের বেশি হবে না, হঠাৎ মোচড়ামুচড়ি আহ, ওহ করে উঠে বসল। আমরাও জ্বালা থেকে বাঁচলাম। এ তো ছিল ৪০ বছর আগের কথা। ৭৩-৭৪ ঘণ্টা পর আমরা বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিরোধ সংগ্রামীরা ঘুমের বিপদ থেকে বেঁচেছিলাম। ৪০ বছর পর দুই নেত্রীর জেদের হাত থেকে কীভাবে বাঁচব সে পথ খুঁজে পাচ্ছি না।
রাস্তার মানুষ তাই আমাদের দাবিও সামান্য। প্রধান বিরোধী দলের কাছে প্রত্যাশা তারা হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহার অথবা স্থগিত করুন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ দেশের শান্তি ও কল্যাণের স্বার্থে যার সঙ্গে প্রয়োজন তার সঙ্গেই আলোচনা করুন। চুপ করে থাকলেও বুঝতাম হয়তো আশা আছে। কিন্তু তিনি নিজে এবং তার আশপাশের ডালপালা যেভাবে বলে চলেছে, কিয়ামত পর্যন্ত আলোচনা করবেন না। ২০১৯ সালের আগে কোনো নির্বাচন, কোনো আলোচনা নয়। তার মানে তারা ২০১৯ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন। ২০১৯ সাল কেন, মানুষ চাইলে তারা ৩০০০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকুক। আমাদের আপত্তি কী? কিন্তু মানুষ না চাইলে এই ২০১৫ সাল পর্যন্তও তাদের ক্ষমতায় থাকার সম্ভাবনা নেই। এটা বাংলাদেশ, এখানে ভারত কিংবা আমেরিকা অথবা অন্য কারও জোরে কী করে ক্ষমতায় থাকবেন? ভারতের সাবেক বিদেশ সচিব সুজাতা সিং নামে এক মহিলা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে হাসপাতালে ঢুকিয়ে জোর করে নির্বাচনী নকশা করে যাদের ক্ষমতায় বসিয়েছেন তাদের তিনি উপকার নয়, অপকারই করেছেন। জনগণ থেকে তাদের পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করেছেন। গতকাল এসেছিলেন ভারতের নতুন পররাষ্ট্র সচিব শ্রী জয় শঙ্কর। তিনিও যে তেমনটাই করবেন তা তো হলফ করে বলা যায় না। নেতানেত্রীরা জেদ করে আছেন আলোচনা করবেন না। গতকাল ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে আলোচনা করেননি? ভারতের সচিবের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন, দেশের মানুষের জান কয়লা হয়ে যাচ্ছে তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন না? গত ২১ ফেব্রুয়ারি আমাদের রক্ত বিলানোর ভাষার দিনে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কি নাচানাচিই না হয়েছে। তিস্তার এক ছটাক পানি দেওয়ার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এখন কোনো ক্ষমতা বা সুযোগ নেই। আমাদের এখানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি যেমন, ভারতে তৃণমূল কংগ্রেস আর বিজেপির সম্পর্ক তো তার চেয়ে মারাত্মক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলবেন বিজেপি তো তার উল্টো করার কথা। কেন যেন আমরা সময়ের কাজ সময়ে করি না পরে আফসোস করি।
নাগরিক ঐক্যের প্রধান মাহমুদুর রহমান মান্নাকে কত নকশা করে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরাধীন ব্রিটিশ ভারতেও সূর্যোদয়ের আগে কারও ঘর থেকে কাউকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করা যেত না। কাউকে গ্রেফতার করতে বাড়ি ঢোকার আগে প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিতে হতো এবং যে প্রতিবেশী ও কর্মকর্তারা কারও বাড়িতে ঢুকতেন তাদের দেহ তল্লাশি করা হতো, যাতে নিজেরা অবৈধ কোনো কিছু রেখে তাদের হ্যারাজ করতে না পারে। কিন্তু মাহমুদুর রহমান মান্নাকে কোথাকার কারা গভীর রাতে তুলে নিয়ে গেছে। পুরো একদিন এক রাত নকশা করে পরদিন তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। জনাব সাদেক হোসেন খোকা এখন আমেরিকায়। তার সঙ্গে কথা বললেই কী, আর না বললেই কী? আন্দোলনের মালিক বেগম খালেদা জিয়া, মনে হয় তার চেয়ে বেশি লন্ডনের তারেক রহমান। টেলিফোন আলাপে যা শুনলাম তাতে আপত্তিকর দু'এক কথা থাকলেও অমন কথা তো ঘরে ঘরে আলোচনা হচ্ছে। কারণ দেশ জ্বলছে পুড়ছে ছারখার হয়ে যাচ্ছে। সেদিন আকিজ কোম্পানির কে এক সেলসম্যান এসেছিল। তাদের কি এক প্রোডাক্ট মাসে বিক্রি ২৬-২৮ কোটি। এ মাসে বিক্রি হয়েছে ৩০ লাখ। অর্থনীতির গতি কেমন এ থেকেই বোঝা যায়। জনাব মাহমুদুর রহমান মান্না নাকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশ চেয়েছেন। শ্রী অভিজিৎ রায় বইমেলা থেকে ফেরার পথে লাশ হওয়া কী মাহমুদুর রহমান মান্নার কথাকে সত্য প্রমাণের চেষ্টা? আমি কিন্তু এখন চার দেয়ালের ভিতরে ঘরে থাকি না, থাকি ফুটপাতে। মানুষ বলাবলি করছে, ওরকম কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে একই ঘরানার লোক ছাড়া বাইরের লোকের যাওয়া সহজ নয়। তবে কি কাজটি নিজেরাই করেছেন? কেন যেন সব হত্যাকে রাজনৈতিক রূপ দিয়ে অনেক সময় হত্যাকারীকে বাঁচিয়ে দেওয়ার পথ করে দেওয়া হচ্ছে। শুনছি ৩-৪শ গজ দূরে পেট্রলবোমা নিক্ষেপকারীদের পুলিশ পাখির মতো গুলি করে উড়িয়ে দিতে পারে, আর ৫-১০ হাত দূরে একজন লোককে হত্যা আরেকজনকে আহত করা হলো পুলিশসহ সবাই তামাশা দেখল- প্রশ্নগুলো কি মানুষের মনে আসতে পারে না? সরকারি প্রশাসন বাহাদুরী করে বলে চলেছে, সব ঠিক আছে। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক। এটা কি স্বাভাবিকতার লক্ষণ?
২৮ জানুয়ারি অবস্থানে বসেছিলাম। ২৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার হঠাৎই খবর পেলাম বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী মারাত্মক হৃদরোগে আক্রান্ত। বায়তুল মোকাররমে শুধু জুমার নামাজ ছাড়া কোথাও যাইনি। ৩২ দিন পর গাড়িতে বসেছিলাম নতুন নতুন ঠেকছিল। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে বড় ভাইকে চেতন দেখিনি, চোখ এক-দু'বার খুলেছিলেন। আমাকে দেখেছেন কিনা বলতে পারব না। প্রায় ছয় মাস পর হাসপাতালে নিথর ভাইকে দেখে মনে প্রশ্ন জেগেছে, এই মানুষ যার একটু এদিক-ওদিক হলে চোখ খোলার শক্তি থাকে না, সেই মানুষ কী করে মানুষের ওপর অত্যাচার করে, মানুষকে কষ্ট দেয়। হাসপাতালে ঘণ্টা দেড়েক ছিলাম। সাদামাটা স্ত্রী নাসরীনকে আসতে বলেছিলাম। কলাবাগান এলিফ্যান্ট রোড হয়ে আসতে ওর বেশ সময় লেগেছে। মেয়েটা খুব একটা ভীতু নয়, কিন্তু আপনজনের কিছু হলে কেমন যেন দিশাহারা হয়ে যায়। হাসপাতালে এসে ওর হাত-পা কাঁপছিল। শক্ত করে ধরেছিলাম। ভিসি প্রাণ গোপাল, অধ্যাপক এ বি এম আব্দুল্লাহ, নাজির আহমেদ রঞ্জু, শ্রী সজল ব্যানার্জি এদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে আমি যেমন কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছিলাম, আমার স্ত্রীও অনেকটা বল ফিরে পেয়েছিল। হার্ট অ্যাটাকের কঠিন সময় কেটে গেছে। আল্লাহ তাকে ভালো করুন এবং আল্লাহর প্রতি তার অকুণ্ঠ নিষ্ঠা আসুক- এ সময় এটাই কামনা করি।
নিরন্তর অবস্থানে বসে প্রথমেই মারাত্মক হোঁচট খেয়েছিলাম এফবিসিসিআইর সভাপতি ধনবান আকরামের কাছে কয়েকটা শীতবস্ত্র আর দুই বেলা খাবার চেয়ে। তার নাকি খুবই কষ্ট, আমাদের খেতে দিতে পারবেন না। কিন্তু একবারও ভাবেননি, আমরা বাংলাদেশ স্বাধীন না করলে তিনি কি করে খেতেন- তা হলফ করে বলা যায় না। কিন্তু মানুষের কত দয়া। আমার মন যখন বেদনায় ভারাক্রান্ত, তখন এক ঝাড়ু ব্যবসায়ী নারায়ণগঞ্জের আবুল কাশেম আমাদের দানবাক্সে যখন পাঁচটি টাকা দিলেন তখন আমার বুক গর্বে ভরে গিয়েছিল। একটু পরেই রাজমনি ঈশাখাঁ হোটেলের সামনে ম্যাগাজিন বিক্রি করে দুই মহিলা পাগল আমাকে পেলেই চেপে ধরে- টাকা দেন, কাপড় দেন, কম্বল দেন। ওদের কিছু দিতে আমারও বেশ ভালো লাগে। হঠাৎ দেখি মোনায়েম সরকারের লেখা দুই খণ্ডের 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবন ও রাজনীতি' নিয়ে এসেছে। দুটি বইয়ের হাজার টাকা দাম। সারা দিনে ওরা কত রোজগার করে তা আল্লাহই জানেন। অন্তরাত্মা চিৎকার করে উঠেছিল, দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটকারীরা আমায় একবেলা খাবার দিতে পারে না, আর পথের হকার যেতে আসতে দেখা হয়, হয় সালাম বিনিময়- সে কিনা হাজার টাকার বই উপহার দেওয়ার বুকের পাটা রাখে। এখানে কে কত বড়, কার দান কত গভীর? পরদিন সকালে সুনামগঞ্জের খুব সুন্দর সুদর্শন ইন্টারমিডিয়েট পড়া মহিউদ্দিন মানিক ও শাকিল আহমেদ এসেছিল। আমার দরকার নেই তবু ২০০ টাকার চমৎকার একটি ডাইরি, তারচেয়ে সুন্দর একটি কলম ও গামছা নিয়ে এসেছিল। যে গামছা আমি আজ ৪ দিন যাবৎ ব্যবহার করছি। মানিককে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তোমার বাবা কী করে? সঙ্গে সঙ্গে বলেছে, কৃষিকাজ। বড় ভালো লেগেছিল। কারণ জজ-ব্যারিস্টারদের ছেলে ছাড়া বাবার তেমন একটা পেশার কথা অনেকেই বলতে চায় না। গতকাল এসেছিল এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কুমিল্লার নজরুল ইসলাম।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম
কী করেন জিজ্ঞাসা করতেই বলেছিল, কেমিক্যালের ব্যবসা। কিন্তু আট মাস যাবৎ কোনো ব্যবসা নেই। আমার কাছে জানতে চাচ্ছিল, সে আমাদের সংগ্রামে শরিক হতে কিছু সাহায্য করতে চায়। দুই হাজার টাকা দেবে, কোথায় দেবে। বলেছিলাম, দানবাক্সে রেখে দেন। সারা রাত নজরুলের কথা ভেবেছি, আট মাস কোনো রুটিরুজি নেই তারপরও যে আমাদের সংগ্রামে সাহায্য করতে পারে সে কত বড় মনের অধিকারী। কেন আমরা চিকেনহার্ট ধনবানদের কাছে প্রত্যাশা করি। আল্লাহ দয়া করলে দেশের মানুষ হাত ঝেড়ে দিলেই তো আমরা আমাদের এ সংগ্রামে অবশ্যই জয়ী হব। তাই দেশবাসীর কাছে প্রত্যাশা করি আমাদের জন্য দোয়া এবং সাধ্যমতো সহযোগিতা। আজ ৩৫ দিন পার হচ্ছে। আগামীকাল বুধবার ৩৬ দিন। তাই নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না গ্রেফতার, অভিজিৎ রায়ের হত্যাসহ এ ক'দিনের অভিজ্ঞতা জাতির সামনে তুলে ধরতে আগামীকাল বুধবার বেলা ১২টায় এক সংবাদ সম্মেলনের আহ্বান জানিয়েছি। সাংবাদিক বন্ধুরাও আগে পরে যাই হোক এবার যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। সাধ্যমতো মানুষের কাছে আমাদের খবর পৌঁছে দিয়েছেন, আশা করি আগামীকালও দেবেন।
লেখক : রাজনীতিক।

No comments

Powered by Blogger.