৪ সুন্দরী রিপোর্টার

মাঠের রাজাদের রমণীদের নিয়েই যে কেবল হৈচৈ ও মাতামাতি তা কিন্তু নয়, গ্ল্যামারের দৌড়ে এগিয়ে আছেন ওরা চারজন। চারজনই নিজ নিজ ক্ষেত্রে স্বনামধন্য। তারা নারী ক্রীড়া সাংবাদিক। সাংবাদিক হয়েও হার্টথ্রব। ব্রাজিলের ফুটবল আসরে এই চারজন সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছেন। তবে কথা হলো এই চারের মধ্যেও হটেস্ট মুকুটে শোভিত যিনি- তিনি সারা কারাবোনেরো। ২০১০ সালের বিশ্বকাপে পরাজয়ের জন্য স্পেন রীতিমতো সরকারিভাবে তার দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছিল। গতকাল পর্যন্ত লন্ডনের ডেইলি মেইলের জনমত জরিপে ৩৯ ভাগ ভোট পেয়ে সেরা সুন্দরীর দৌড়ে এগিয়ে আছেন সারা। আবার এন্টারটেইনমেন্ট যে ৪ শীর্ষ সুন্দরী সাংবাদিকের নাম প্রকাশ করেছে তার মধ্যেও সারা শীর্ষে। ২০০৯ সালের জুলাই মাসে আমেরিকার এফএইচএম তাকে ‘সেক্সিয়েস্ট রিপোর্টার অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ ঘোষণা করেছিল। ২০১৩ সালের ৬ই জুলাই ঘোষণা আসে যে, ক্যাসিয়াস ও সারা বাবা-মা হতে চলেছেন। গত ৩রা জানুয়ারি সারা একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন। সারা স্পেনিশ টিভি উপস্থাপক এবং একজন নামী ক্রীড়া সাংবাদিক। স্পেনের গোলরক্ষক ইকার ক্যাসিয়াস বিদায় নিলেও এখনও মাঠের উঠোন আলোকিত করে আছেন ক্যাসিয়াস বান্ধবী সারা। ২০১০ সালের বিশ্বকাপের অনেক পরে জানা গিয়েছিল, ক্যাসিয়াস যে খারাপ খেলেছিলেন তার মূলে ছিলেন সারা। সারার কারণে ক্যাসিয়াস খেলায় মনোযোগ দিতে পারেননি। এ নিয়ে তুমুল ঝড় উঠেছিল। ইংলিশ ও স্পেনিশ প্রেস বহুদিন এ নিয়ে তেতেছিল। সেবার স্পেন অপ্রত্যাশিতভাবে হেরে গিয়েছিল সুইজারল্যান্ডের কাছে। আরও বড় প্রশ্ন উঠেছিল সারার সাংবাদিকতার নৈতিকতা নিয়ে। কারণ খেলার পরপরই ক্যাসিয়াসের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন সারা। ২০১০ সালে স্পেনের মিডিয়া তার এত বেশি আলোকচিত্র ছেপেছিল যে, সারা ফুটবল তারকাদের ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। ক্যাসিয়াস ও সারা তাদের ছেলে মার্টিনকে রেখেই এবারে ব্রাজিলে এসেছেন। ক্যাসিয়াস নিজেই স্বীকার করছেন, তিনি এবারে ভাল খেলেননি। ‘এবারের খেলা আমার ক্যারিয়ারের মধ্যে নিকৃষ্টতম।’

 ডেইলি মেইল লিখেছে, এবারের বিশ্বকাপে সারাকে প্রথম ক্যামেরার পিছনে সক্রিয় থাকতে দেখা যায় গত শুক্রবার। মিডিয়া সেন্টারে তার ঝলমলে উপস্থিতি খেলার ইভেন্টকে ছাপিয়ে যায়। টেলিসিনকো টিভির হয়ে তিনি কাজ করছেন। ইনিস সেইঞ্জ গালো দে প্রেজ একজন মেক্সিকান ক্রীড়া সাংবাদিক। তিনি কাজ করছেন সিএনএন-এর পক্ষে। বিশ্বকাপ ফুটবলে স্পেনিশভাষী সাক্ষাৎকারগুলো তিনিই নিয়ে থাকেন। বক্সিং ম্যাচের হোস্টেস হিসেবেও তাকে দেখা যায়। এএফএইচএম ম্যাগাজিন ২০০৯ সালে তাকে  বিশ্বের ‘পঞ্চম সেক্সিয়েস্ট রিপোর্টার’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিল। সেইঞ্জ অবশ্য জানিয়েছিলেন যে, একজন নারী সাংবাদিক হিসেবে তাকে মাঝেমধ্যে বিড়ম্বনা সইতে হয়। ২০১০ সালে আজটেকা টিভির একজন রিপোর্টার হিসেবে ফুটবলার মার্ক সেঞ্জের সাক্ষাৎকার নিতে তিনি মাঠে গিয়েছিলেন। এসময় মহড়া চলছিল। তিনি লক্ষ্য করেন যে, তার গায়ে লাগে এমন করে তার দিকে বল ছোড়া হয়েছিল। ফুটবল ক্লাব এনওয়াইজেটের লকার রুমে তাকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয়। আর এ সময় ক্লাবের কর্মকর্তারা তাকে লক্ষ্য করে অযাচিত মন্তব্য করেছিলেন। তিনি সেখানে থেকেই টুইট করেন, ‘আমি লকার রুমে সাক্ষাৎকারের জন্য অপেক্ষা করছি। আমার অস্বস্তি লাগছে। আমি কান চেপে রাখতে সচেষ্ট।’ অবশ্য পরে ক্লাবের মালিক উডি জনসন ক্ষমা প্রার্থনা করলে তা তিনি গ্রহণ করেন। তবে মিডিয়া বলছে, এই মুহূর্তে মেক্সিকো ও লাতিন আমেরিকার মধ্যে তাকেই সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে মনে করা হয়।
কে মারি আরেক অনিন্দ্য সুন্দরী টিভি সাংবাদিক। তিনি ব্রাজিলের বিশ্বকাপ কভার করছেন বেইনস্পোর্টস-এর জন্য। এটি উত্তর আমেরিকার একটি বিখ্যাত ক্রীড়া চ্যানেল নেটওয়ার্ক। এর মালিক আল জাজিরা। দোহায় সদর দপ্তর। আটটি দেশ এই চ্যানেলের নেটওয়ার্কে যুক্ত। মারি লন্ডনের মিডলসবরোর মেয়ে। বোরো টিভি দিয়ে তিনি যাত্রা শুরু করেছিলেন। ২০১২ সালের মার্চে বিবিসি বলেছে, মারিকে সান্তিয়াগোর স্টেডিয়ামে একটি অন্যতম বৃহত্তম ফুটবল টুর্নামেন্ট কভার করতে দেখা গেছে।
গত ২০শে জুন ফ্যাবওয়াগস নামের একটি ওয়েবসাইটে সেক্সিয়েস্ট নারী রিপোর্টারদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে তারা ৫ ফেভারিটের নাম দিয়েছে। এর শীর্ষে হলেন ভানিসা হাপেনকোথেন। ২৯ বছর বয়সী এই মেক্সিকান টিভি রিপোর্টারকে অনেকের মতে ‘হটেস্ট অব দ্য হটস’ বলেও আখ্যা দিয়ে থাকেন। ফেসবুক ও টুইটারের সর্বত্র তারই জয়জয়কার। ওয়াগ না হয়েও তাকে নিয়ে উন্মাতাল গ্লামারস ওয়ার্ল্ড। তিনি সারা কারবারনোর মতো কোন হট ফুটবলারের  ওয়াগ নন। কিন্তু তারপরেও তার ভক্তদের কমতি নেই। ব্রাজিলে একটি পাতানো প্রীতি ফুটবল ম্যাচে তিনি স্বল্পবসনা হয়ে মাঠে তুফান তুলেছিলেন। সমুদ্রের বিচে তিনি ব্রাজিলের পতাকা হাতে ছোটাছুটি করেছেন। তিনি ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে কতটা খ্যাতিমান সেই হিসাব নিকাশ টেবিলে উঠতেই পারছে না, তার অন্যান্য অসামান্য কাণ্ডকীর্তির কারণে। দুই চিলতে পোশাকে তাকে সমুদ্রের তীরে ফুটবলে লাথি মারতেও দেখা গেছে।

No comments

Powered by Blogger.