অমিত শাহ: মোদির তুরুপের তাস

অমিত শাহ
তাঁকে উত্তর প্রদেশে পাঠানো হয়েছিল একটি ‘মিশন’ নিয়ে: ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) হয়ে রাজ্যটি জয় করতে হবে৷ শেষ পর্যন্ত তিনি সুচারুভাবে তা পালনও করেছেন যা ভূমিকা রেখেছে বিজেপির বিশাল জয়ে৷ অচেনা-অজানা ওই বিশাল রাজ্যে এত বড় কাজ কীভাবে করলেন অমিত শাহ, তা নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই৷ ৪৯ বছর বয়সী বিজেপি নেতা অমিত শাহ নির্বাচনী প্রচারণায় দলটির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদির ডান হাত হিসেবে কাজ করেছেন৷
মোদি তাঁর নিজ হাতে গড়া অমিত শাহকে সমর্থনের দীর্ঘ খরায় আক্রান্ত উত্তর প্রদেশে পাঠানোর পর তিনি বিস্তর বিতর্কের সূত্রপাত করেন৷ নির্বাচনী প্রচারণার সময় নানা বেফাঁস মন্তব্য করে শিরোনাম হন অমিত৷ জাতপাত নিয়ে রাজনৈতিক দিক দিয়ে চরমভাবে বিভক্ত উত্তর প্রদেশে সব শ্রেণির মানুষের কাছে আবেদন আছে, এমন কোনো নেতাই বিজেপির ছিল না৷ অমিত শাহ নিজেও ছিলেন সেখানে একেবারে অপরিচিত মুখ৷ তার ওপর রাজ্যের ৪২ শতাংশ ভোটই যাদব-মুসলিম-জাঠ সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত৷ অমিতের ভাষায়, সেখানে হাত দেওয়ার উপায় ছিল না৷ তিনি বলেন, ‘অতীতের নির্বাচনগুলোর সময় সমাজবাদী পার্টি (এসপি) সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পূর্ণ সমর্থন অর্জন করতে পেরেছিল৷ আমরা বিগত চারটি নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বদলীয় কৌশলগত জোট দেখেছি৷’ এই পরিস্থিতিতেও উত্তর প্রদেশে বিজেপির ভোট প্রায় তিন গুণ বাড়াতে সক্ষম হয়েছেন অমিত শাহ৷
২০১২ সালের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে দলটি যেখানে ১৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিল, সেখানে এবার লোকসভা নির্বাচনে পেয়েছে ৪০ শতাংশের কাছাকাছি৷ মোট ৮০টি আসনের মধ্যে ৬০টিরও বেশি এখন বিজেপির ঝুলিতে৷ উত্তর প্রদেশে বিজেপির এই অসাধারণ ফলের পেছনে কাজ করেছে অমিত শাহর দক্ষ হাতে দলীয় নির্বাচন কার্যক্রম তদারক করা৷ তিনি রাজ্য নেতাদের কায়েমি স্বার্থ উপেক্ষা করে মেধা, জাতপাতের সমন্বয় ও প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা ইত্যাদি বিষয় বিচেনায় নিয়ে দলীয় টিকিট বিতরণ করতে সক্ষম হন৷ রাজনৈতিক দূরদির্শতা ও সাংগঠনিক দক্ষতার জন্য অমিত শাহ নরেন্দ্র মোদির পাশাপাশি দলীয় সভাপতি রাজনাথ সিং ও জ্যেষ্ঠ নেতা অরুণ জেটলিরও অত্যন্ত আস্থাভাজন৷ রাজনাথ মোদির মন্ত্রিসভায় যোগ দিলে বিজেপিতে গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক দায়িত্বে অমিত শাহকে দেখা যাওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে৷ হিন্দুস্তান টাইমস৷

No comments

Powered by Blogger.