মোদির সরকারে আদভানি ও সুষমার স্থান কোথায় হবে?

বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদি গতকাল
নয়াদিল্লিতে দলের প্রধান কার্যালয়ে যাওয়ার পর শত
শত সমর্থক পতাকা নেড়ে তাঁকে স্বাগত জানান৷ এ
সময় তিনি বিজয়সূচক ‘ভি’ চিহ্ন দেখান। এএফপি
ভারতীয় জনতা পার্টিতে (বিজেপি) নরেন্দ্র মোদি যুগের সূচনা হয় গত সেপ্টেম্বরে, দলের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণার মধ্য দিয়ে৷ লোকসভা নির্বাচনে বিশাল বিজয়ে দলে ‘নমো’ (মোদির নামের দুই অংশের আদ্যক্ষর) মন্ত্রের কর্তৃত্ব সুপ্রিতষ্ঠিত হলো৷ বিজেপি সব সময় গর্ব করে এ জন্য যে দলটি সম্মিলিত নেতৃত্বে বিশ্বাসী৷ দল পরিচালিত হয় ধাপে ধাপে নেতৃত্বের মাধ্যমে, যে ধাপের সব থেকে ওপরে আছে সংসদীয় বোর্ড৷ কিন্তু দলের সেই আদর্শকে পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা করছেন বা ইতিমধ্যে দিয়েছেন একজন মানুষ, নরেন্দ্র মোদি৷ লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে দলের চেয়ে বড় হয়ে উঠেছেন ব্যক্তি মোদি৷ দল থেকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থিতার দাবি নিয়ে মোদি যখন দ্রুত গতিতে দিল্লির দিকে এগিয়ে আসছেন, তখন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন কয়েকজন নেতা৷ তাঁদের মধ্যে অরুণ জেটলিসহ অনেকে পরে বিরোধিতা থেকে সরে দাঁড়ান৷ কিন্তু বিদ্রোহের ঝান্ডা নিয়ে কয়েকজন ঠিকই অচল থাকেন৷ এই ভিন্নমতাবলম্বীদের প্রতীক হয়ে ওঠেন লালকৃষ্ণ আদভানি, দলের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা, বাজপেয়ির আমলের উপ-প্রধানমন্ত্রী৷ আছেন সুষমা স্বরাজ, লোকসভার বিদায়ী বিরোধীদলীয় নেতা৷
কিন্তু তাঁদের উপেক্ষা করে দেশজুড়ে শুরু হয়ে যায় মোদি ঝড়৷ এখন মোদি সরকার গড়ছেন৷ সেই সরকারে তাঁর বিরোধীদের অবস্থান কোথায় হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে৷ শোনা যাচ্ছে, সুষমাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেওয়া হতে পারে, কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করবেন কি না তা নিয়ে সংশয় আছে৷ মন্ত্রিপরিষদে কারা থাকবেন সেই সিদ্ধান্ত যেন দলের সংসদীয় বোর্ডই নেয়, এই দাবি নাকি তিনি জানিয়েছেন৷ সুষমাকে হয়তো কোনো যোগ্য স্থানে বসানো যেতে পারে৷ কিন্তু আদভানির অবস্থান কী হবে—সরকার গঠনের সুযোগ পাওয়ায় এখন এটাই বিজেপির জন্য বড় চিন্তার বিষয়৷ দলের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ নেতা তিনি৷ একসময় উপপ্রধানমন্ত্রী ছিলেন যাঁর অধীনে, সেই বাজপেয়ির চেয়েও তাঁর অবদানই যে দলে বেশি, এ নিয়ে দলের কেউ দ্বিমত করতে পারবেন না৷ আদভানি বর্তমানে বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএর চেয়ারম্যান৷ এই দায়িত্বে তিনি থাকবেন, কিন্তু দায়িত্বের পুরস্কার? এ ক্ষেত্রে শোনা যাচ্ছে, তাঁকে আরও বৃহত্তর পরিসরে পরামর্শক ধরনের কোনো দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে, যেমনটা বর্তমানে ন্যাশনাল অ্যাডভাইজারি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবে পালন করছেন সোনিয়া গান্ধী৷ কংগ্রেসের বিজয়ের পর প্রধানমন্ত্রী না হলেও দেশের সব ক্ষমতাই ছিল সোনিয়ার হাতে! কিন্তু আদভানিকে এমন দায়িত্বে রাখতে আপত্তি আছে আরএসএসের৷ তাদের ধারণা, এতে ক্ষমতার দুটি কেন্দ্র সৃষ্টি হতে পারে৷ আবার এ কথা শোনা যাচ্ছে যে আদভানিকে লোকসভার স্পিকার করা হতে পারে৷ তবে তিনি সে দায়িত্ব নেবেন তা নিশ্চিত নয়৷ বিজেপির বিশাল বিজয়ে মোদির অবদান কতটুকু, এ নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন তুলেছেন আদভানি৷গত শুক্রবার আদভানি বলেন, ‘আমি মনে করি, বিষয়টি বিস্তারিত পর্যালোচনা করা দরকার৷ দলের এ বিজয়ে েমাদির নেতৃত্ব, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ এবং বিজেপির অবদান কোথায় কতটুকু তা পর্যালোচনা করতে হবে৷’ এনডিটিভি৷

No comments

Powered by Blogger.