উপজেলা নির্বাচনের পর আন্দোলন by কাফি কামাল

উপজেলা নির্বাচনের পর সরকার পতনের আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বলেছেন, বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে যাওয়াই সরকারের গায়ে জ্বালা ধরেছে। তারা উল্টা-পাল্টা বকছেন। আমাদের দল গোছানো শুরু হয়েছে।
দল গুছিয়ে উপজেলা নির্বাচনের পর আমাদের আন্দোলন শুরু হবে। বাংলাদেশে কোন জঙ্গি বা আল কায়েদার ঠাঁই হবে না জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, বাংলাদেশে কোন জঙ্গির জায়গা হবে না। বাংলাদেশের মাটি থেকে অন্য কোন দেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতে দেয়া হবে না। গতকাল রাজবাড়ীর শহীদ খুশী রেলওয়ে মাঠে লাখো মানুষের সমাবেশে দেয়া বক্তব্যে খালেদা জিয়া বলেন, সম্প্রতি প্রিজন ভ্যান থেকে জঙ্গিরা পালিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকায় এর দায়ভার বর্তমান সরকার ও স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রীকেই নিতে হবে। তিনি বলেন, আমরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ায় সরকারের গায়ে জ্বালা ধরেছে। আমরা বলেছি, এ সরকারের অধীনে কোন জাতীয় নির্বাচনে যাবো না। অন্য কোন নির্বাচনের কথা বলিনি। কারণ স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতার পরিবর্তন হয় না। তিনি বলেন, রাজবাড়ীতে গত পরশু যে উপজেলা নির্বাচন হলে সেখানে কিভাবে আওয়ামী লীগ ভোটডাকাতি করেছে তা আপনারা দেখেছেন। সুষ্ঠু ভোট হলে আওয়ামী লীগ কয়েকটির বেশি জিততো না। খোদ গোপালগঞ্জেও দু’টি উপজেলায় বিএনপি প্রার্থী জিতেছে। আওয়ামী লীগের বোঝা উচিত, তাদের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। এখন তাদের উচিত ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়া। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়া। তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানদের ক্ষমতা দিন। অর্থ বরাদ্দ দিয়ে কাজ করার সুযোগ দিন। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর গতকালই প্রথম ঢাকার বাইরের কোন সমাবেশে অংশ নেন বিএনপি চেয়ারপারসন। ৪৫ মিনিটব্যাপী বক্তব্যে ১৯ দলীয় জোট নেতা বলেন, ৫ই জানুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনের পর দেশে এখন অবৈধ সরকার। তারা জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। অথচ ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন ছিল জবরদস্তির। সে নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে যায়নি। খবরের কাগজে দেখা গেছে, মানুষ ভোট দিতে যায়নি। কেন্দ্রের বাইরে কুকুর বসে আছে। কেন্দ্রের ভেতরে সরকারি দলের লোকজন সিল মারছে। আর প্রিসাইডিং অফিসার ঘুমোচ্ছে। তিনি বলেন, ৫ই জানুয়ারির জবরদস্তির নির্বাচনে ১৫৩টি আসনে কোন ভোটই হয়নি। ১৪৭টি আসনে ভোট হলেও মানুষ ভোট দিতে যায়নি। সে নির্বাচনে ১০ ভাগের বেশি ভোট পড়েনি।  তাহলে এটা কি কোন নির্বাচন হলো? তিনি জনতার উদ্দেশে প্রশ্ন রাখেন- আপনারা কি সেদিন ভোট দিতে গিয়েছিলেন? তখন সমস্বরে জবাব আসে- না, না। এ সময় খালেদা জিয়া বলেন, তাহলে এ সরকার অবৈধ ও জবর দখলকারি সরকার। অন্যায়ভাবে তারা ক্ষমতায় বসে আছে। তাদের অধীনে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।
তিনি বলেন, জাতীয় সংসদে জনগণের টাকা নষ্ট করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিরোধী দলকে গালাগালি করা হয়। আজকে কি সংসদে কোন বিরোধী দল আছে? তথাকথিত সংসদে বর্তমানে কোন বিরোধী দল নেই। আজকের তথাকথিত বিরোধীদল সরকারেও থাকতে চায়। যারা বিরোধী দল হয় তারা মন্ত্রিত্ব কিভাবে নেয়? এটা কি কোন বিরোধী দল হলো? এ অনির্বাচিত সরকার ও বিরোধী দলও অবৈধ। তাদের জনগণের টাকা নষ্ট করার অধিকার নেই। ঢাকা সিটি করপোরেশনের কথা উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, অনির্বাচিত বলে ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সরিয়ে দু’ভাগে ভাগ করে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছিল। কিন্তু আজ দুই বছরের বেশি সময় অনির্বাচিত লোকজন সিটি করপোরেশন চালাচ্ছে। ভোট ডাকাতি ছাড়া জিততে পারবে না দেখে সেখানে নির্বাচন দিচ্ছে না সরকার।
দেশবাসীকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়ে ১৯ দলীয় জোট নেতা খালেদা জিয়া বলেন, আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। বিশেষ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে শেষ তিন মাসে সারা দেশ থেকে রাজধানীকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিলেন। সে আন্দোলন বিএনপিকে ক্ষমতায় নেয়ার আন্দোলন ছিল না। সেটা ছিল অধিকার প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন। আমরা এখনও সে আন্দোলনে আছি। দেশকে স্বাধীন সার্বভৌম রাখতে হলে আওয়ামী লীগকে সরাতে হবে। আওয়ামী লীগ যতদিন জোর করে ক্ষমতায় বসে থাকবে ততদিন জুলুম অত্যাচার বাড়বে। এ সরকারকে হটাতে হবে। আর হটাতে গেলে  কঠোর আন্দোলন দরকার। আন্দোলনের মাধ্যমেই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় করতে হবে। ছাত্র যুবকদের বলবো, তোমাদের জাগতে হবে। স্বাধীনতার জন্য আমরা রক্ত দিয়েছি। তাহলে স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য আমরা কেন রক্ত দেবো না? নইলে তো স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে। এ দেশ বাঁচাতে হবে। এ জন্য আমাদের দায়িত্ব আছে। আপনারা কি রাজি আছেন? খালেদা জিয়া সমবেত জনতার উদ্দেশে বলেন, আন্দোলনের জন্য ডাক দিলে আপনারা কি আসবেন? আমরা এখন দল গোছাচ্ছি। দল গোছানোর পর আন্দোলনের ডাক দেবো। আপনারা আন্দোলনে সাড়া দেবেন। এবারের আন্দোলন সফল হবে।
সরকারের উদ্দেশ্য খালেদা জিয়া বলেন, জনগণ না চাইলে কোনভাবেই ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। মানুষ হত্যা করে ক্ষমতায় থাকবেন? কয়জনকে হত্যা করবেন? ২৫শে অক্টোবর থেকে ২৫শে জানুয়ারি ৩ মাসে ৩০৪ জনকে হত্যা করেছে সরকার। গুম করছে ৬৫ জনেরও বেশি। দেশবাসী জানে, আওয়াামী লীগ মানুষ হত্যা করতে পারে। স্বাধীনতার পর রক্ষীবাহিনী গঠন করে তারা ৪০ হাজার মানুষ হত্যা করেছিল। আওয়ামী লীগ ভয়ঙ্কর জন্তুর চেয়েও খারাপ। আওয়ামী লীগ সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্ম জানতো না। কিন্তু বর্তমান খুনি সরকারের আমলে বনে-জঙ্গলে লাশ পাওয়া যাচ্ছে। ঘরে বাইরে মানুষ কোথাও নিরাপদ নয়। দেশের মা বোনরাও এ সরকার আমলে নিরাপদ থাকতে পারছেন না। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কিভাবে অস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগ মারামারি করছে তা সবাই দেখছেন। কিন্তু সরকার উল্টো বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। বর্তমান সরকার সারা দেশকে একটি কারাগারে পরিণত করে ফেলেছে। এ  সরকার ৩২ হাজার মামলা দিয়েছে। প্রতিদিনই সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। যে কাউকে ধরে টাকা না দিলে মামলা দেয়া হচ্ছে। বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গুম করা হচ্ছে। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, নির্বাচনের আগে যৌথ অভিযানের নামে সরকার কিভাবে বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার করেছে তা সবাই দেখেছে। আমরা এ নিয়ে গণতদন্ত কমিটি করেছি। আমাদের কাছে সমস্ত তথ্য আছে। তিনি বলেন, যারা অন্যায়ভাবে নিজ দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার চালায় তাদের দেশপ্রেমিক সরকার বা দল বলা যায় না।
বিএনপি প্রধান বলেন, আওয়ামী লীগের চরিত্র বড়ই খারাপ। তারা একটার পর একটা অপরাধ করে। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর কোন দেশ যখন সমর্থন দেয়নি তখন তারা সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার শুরু করলো। তাদের বাড়িঘর, মন্দির ভেঙে দিয়েছে। ঝিনাইদহের কৃষ্ণ গোপালের সব কিছু লুট করে নিয়ে গেছে। এ সরকারের আমলে না মুসলমান, না হিন্দু কেউ নিরাপদ নয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর বৌদ্ধদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। খ্রিষ্টানদের বাড়িঘর ও চার্চে হামলা চালিয়েছিল। খালেদা জিয়া বলেন, সংখ্যালঘু নির্যাতনের পর এখন তারা জঙ্গি ইস্যুর সৃষ্টি করেছে। তাদের উদ্দেশ্যে হচ্ছে অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। তবে পরিষ্কার বলতে চাই, বাংলাদেশে আমরা মুসলমান হতে পারি- কিন্তু এ দেশ সবার। বাংলাদেশে কোন জঙ্গি বা আল কায়েদার জায়গা হবে না। স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে কিভাবে জঙ্গিরা পালিয়ে গেল তার দায়দায়িত্ব তাকেই নিতে হবে। তারা কারাগারে কিভাবে পরিকল্পনা করলো, মোবাইল ফোনে কথা বললো- তখন সরকার কি করেছে? সরকারকে এর জবাব দিতে হবে। আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশে বসে অন্য কোন দেশে জঙ্গি তৎপরতা চালানোর কোন সুযোগ দেয়া হবে না। এ সময় তিনি শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের সমালোচনা করেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন চলছে দলীয়করণ ও আত্মীয়করণ। পাবলিক সার্ভিস থেকে, পুলিশ সর্বত্রই দলীয় লোকদের চাকরি দেয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগ মেধা দেখে না, যোগ্যতা দেখে না। তাই মেধাবীরা চাকরি পাচ্ছে না। তিনি বলেন, অবশ্যই কোটা প্রথা কমাতে হবে। মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি দিতে হবে। হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলমান সবার লেখাপড়া ও চাকরির সমান অধিকার আছে। তিনি বলেন, আপনারা বিদ্যুৎ প্রকল্পের কথা জানেন। আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়-স্বজনদের সব দেয়া হয়েছে। তাদের বড় অংকের ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার। এ জন্য জনগণকে প্রতিবাদ করতে হবে। আওয়ামী লীগ লুটপাট সমিতিতে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা ব্যাংক বীমার টাকার লুট করছে। হল-মার্ক, ডেসটিনিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত। এদের হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে হবে, মানুষের প্রতি আমাদের দায়িত্ব নিতে হবে।
সদ্য অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন ও আন্দোলন সংগ্রামে রাজবাড়ীবাসীর সক্রিয় ভূমিকার জন্য অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। একই সঙ্গে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, উপজেলা নির্বাচনের পরই আন্দোলন শুরু হবে। আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব। আগামীতে আমরা ক্ষমতায় গেলে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া পয়েন্টে পদ্মা সেতু নির্মাণ ও রাজবাড়ীতে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করবো। তবে বিএনপির নেতৃত্বে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হলে বিশেষ কোন অঞ্চল নয়, সারাদেশেই সুষম উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার অঙ্গীকার করেন তিনি। বলেন, আমরা সারা বাংলাদেশে সুষম উন্নয়ন করবো। কোন জেলা আমার কোন জেলা অন্যের সেটা দেখবো না। সারা দেশের জনগণ আমাদের মা-বাবা, ভাই বোন। তাই সমান দৃষ্টিতে সবখানে উন্নয়ন করব। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৯ দলীয় জোট ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবো। যুব-সমাজকে কাজে লাগাতে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবো। যাতে তারা কাজ করে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। আমরা বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও আইটি সেক্টরের প্রতি বেশি জোর দেব। রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করব, যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করব।
রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সভাপতি আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়মের সভাপতিত্বে জনসভায় ১৯ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মজিবুর রহমান রহমান, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, সেলিমা রহমান, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ, সহসভাপতি এডভোকেট আসলাম মিয়া প্রমুখ বক্তব্য দেন। জনসভায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে বিএনপিতে যোগ দেন জাতীয় পার্টির নেতা ও সুলতানপুর ইউপি চেয়ারম্যান জালালউদ্দিন। খালেদা জিয়া তার বক্তব্যের শুরুতেই রাজবাড়ীবাসীর প্রতি দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, আগে তিনবার সময় দিয়েও অনিবার্য কারণে আমি রাজবাড়ী আসতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করছি। তিনি বলেন, গাড়ি আসতে দেয়নি, ভ্যান আসতে দেয়নি। তারা প্রচার চালাতে চায় রাজবাড়ীর জনসভায় মানুষ আসেনি। কিন্তু অনেক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে মানুষ এসেছে। আমরা রাজবাড়ীবাসীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। উল্লেখ্য, এর আগে গত ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এখানে এক জনসভায় বক্তব্য রেখেছিলেন।
এর আগে সকাল ১১টায় খালেদা জিয়া তার গুলশানের বাসভবন থেকে রাজবাড়ীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। রাজধানীর গাবতলী, সাভার, মানিকগঞ্জ, পাটুরিয়া ফেরীঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে দলের নেতাকর্মীরা রাস্তার দুইপার্শ্বে দাঁড়িয়ে দলের নেত্রীকে অভিনন্দন জানান। দুপুরে রাজবাড়ী যাওয়ার পথে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় দলের প্রয়াত মহাসচিব অ্যাডভোকেট খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এ সময় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, সেলিমা রহমান, মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে খালেদা জিয়া রাজবাড়ী পৌঁছান। সেখানে সার্কিট হাউসে বিশ্রাম শেষে তিনি সরাসরি সভামঞ্চে চলে যান। ওদিকে সমাবেশ শেষে সার্কিট হাউজে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে মধ্যরাতে ঢাকায় ফেরেন  বিরোধী জোট নেতা খালেদা জিয়া।
জনসমুদ্র রেলওয়ে ময়দান
দীর্ঘ ৫ বছর পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সফরকে ঘিরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছিল স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে।  সকাল থেকেই দলীয় নেতাকর্মীরা ছাড়াও সাধারণ মানুষ আশপাশের এলাকাগুলো থেকে বাস, ট্রাক, নসিমন-করিমন ও হেঁটে জনসভাস্থলে আসতে থাকেন। রাজবাড়ীর সদর, পাংশা, গোয়ালন্দ, কালোখালি ও বালিয়াকান্দি থেকেও নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ঐতিহাসিক শহীদ আব্দুল আজিজ খুশি রেলওয়ে ময়দানের জনসভায় যোগ দেন। এছাড়া মানিকগঞ্জ, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর থেকেও নেতাকর্মীরা যোগদেন এসময় মুহুর্মুহু স্লোগান ও ঢোল-বাদ্য বাজিয়ে নেচে-গেয়ে আনন্দ উল্লাস করেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সংবলিত ঢাউস আকৃতির ফেস্টুন বহন করেন। দুপুর গড়াতেই জনসভাস্থল কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। বিকাল সোয়া ৪টায় খালেদা জিয়া যখন জনসভা মঞ্চে উপস্থিত হন তখন জনসমুদ্র রেলওয়ে ময়দান ছাড়িয়ে আশপাশের সড়কেও গিয়ে ঠেকে।

No comments

Powered by Blogger.