ব্যাংককের বিক্ষোভে আবারও হামলা

থাইল্যান্ডের সরকারবিরোধী আন্দোলনের প্রধান নেতা
সুথেপ থাগসুবান গতকালও ব্যাংককের বিক্ষোভে নেতৃত্ব
দেন। এ সময় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার খরচ জোগাতে
সমর্থকেরা তাঁর হাতে অর্থ তুলে দেন ছবি: রয়টার্স
থাইল্যান্ডের ব্যাংককে সরকারবিরোধীদের বিক্ষোভের স্থানে গতকাল রোববার আবার বিস্ফোরণ এবং গুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২৮ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে চলতি সংকট থেকে নিজেদের দূরে রাখার ব্যাপারে আবারও ইঙ্গিত দিয়েছে সামরিক বাহিনী। থাই সরকার উৎখাতে ‘ব্যাংকক অচল’ কর্মসূচির দ্বিতীয় সপ্তাহ শুরুর প্রাক্কালে বিরোধীদের ওপর হামলায় নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। মধ্য ব্যাংককের ভিকট্রি মনুমেন্টে বিক্ষোভকারীদের সমাবেশস্থলের কাছে গতকাল পরপর দুটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপর সেখানে গুলিবর্ষণ করে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা। চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পরিণত হয়েছে ভিকট্রি মনুমেন্ট। বিক্ষোভকারীরা গত সোমবার থেকে ওই স্মৃতিসৌধটি নিজেদের দখলে রেখেছেন।
মেডিকেল সার্ভিসেস বিভাগের প্রধান সুফান শ্রিথাম্মা বলেন, ‘আহতদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা গুরুতর... বোমার টুকরার আঘাতে তাঁরা আহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।’ কয়েক মিনিটের ব্যবধানে দুটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। ৫২ বছর বয়সী থিরাইউথ উতকাইনতানোন্দ বলেন, ‘মঞ্চে ভাষণ চলার সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর সবাই মাটিতে শুয়ে পড়েন। প্রায় দুই মিনিট পরে আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটে। তখন সবাই আতঙ্কে দৌড়ে পালাতে থাকেন।’ এর আগে গত শুক্রবার বিক্ষোভের নেতা সুথেপ থাগসুবানের নেতৃত্বে একটি মিছিলে বিস্ফোরণের ঘটনায় একজন বিক্ষোভকারী নিহত এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছিলেন। ২০০৬ সালে থাই প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করার কিছুটা আগ থেকেই অস্থিরতা চলছে থাইল্যান্ডে। দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে থাকসিন স্বেচ্ছানির্বাসনে রয়েছেন। তাঁর ছোট বোন ইংলাক সিনাওয়াত্রা এখন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে বিক্ষোভের কারণে ইংলাকের সরকার চাপের মধ্যে রয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, ইংলাককে পদত্যাগ করে একটি অনির্বাচিত ‘গণপরিষদে’র কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। বিক্ষোভকারীদের আহ্বান সত্ত্বেও সেনাবাহিনী চলতি সংকটে প্রত্যক্ষ কোনো ভূমিকা রাখবে না বলেই এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে। শনিবারও সশস্ত্র বাহিনীর সুপ্রিম কমান্ডার থানাসাক পাতিমাপাকর্ন এ কথাই বলেছেন। সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে কুচকাওয়াজের সময় স্থানীয় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘দেশের দেখভালের জন্য আমাদের প্রত্যেককে প্রত্যেকের সাহায্য করা দরকার।’ সেনাবাহিনী ও সরকারের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা করা দরকার। আমি নিজে আইন এবং সব পক্ষকেই শ্রদ্ধা করি। একটি সমাধান খুঁজে বের করতে আলোচনায় বসতে সব পক্ষকেই অনুরোধ করছি।’ পৃথক একটি সাক্ষাৎকারে সশস্ত্র বাহিনী প্রধান ব্যাংকক পোস্ট পত্রিকাকে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগ্রহ তাঁর নেই। এমনকি চলতি সংকটে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকাও রাখতে চান না তিনি। এএফপি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.