ভালো থাকুন-পেশাদার রক্ত বিক্রেতার রক্ত নিরাপদ নয়

দশ বছর আগেও পেশাদার রক্ত বিক্রেতারাই ছিল দেশের মোট রক্ত চাহিদার ৮০ শতাংশের জোগানদাতা। বিভিন্ন সংগঠনের সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড, সরকারি উদ্যোগ, রক্ত পরিসঞ্চালনের আগে নির্দিষ্ট পরীক্ষা করার ব্যাপারে কড়াকড়ি ইত্যাদির ফলে পেশাদার রক্ত বিক্রেতাদের দাপট কমেছে।
স্বেচ্ছায় রক্তদানের হার বেড়েছে। তবে এখনো তা বার্ষিক রক্ত চাহিদা পূরণের লক্ষ্য থেকে অনেক দূরে। তাই অনেককেই রক্ত বিক্রেতাদের রক্তই ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে।
আমাদের দেশে পেশাদার রক্তদাতাদের বেশির ভাগই মাদকাসক্ত। মূলত নেশার টাকা জোগাড়ের জন্যই এরা রক্ত বিক্রি করে। এরা ভোগে রক্তবাহিত নানা রোগে। এই রক্ত গ্রহণ করায় রোগী সাময়িকভাবে সুস্থ হলেও দীর্ঘ মেয়াদে রক্তবাহিত জটিল কোনো রোগ, যেমন- এইডস, হেপাটাইটিস-বি ও সি, সিফিলিস, ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর, ফাইলেরিয়া ইত্যাদিতে আক্রান্ত হতে পারে। এক জরিপে দেখা গেছে, পেশাদার রক্তদাতাদের মধ্যে ২৯ শতাংশ হেপাটাইটিস-বি ও ২২ শতাংশ সিফিলিসে ভোগে। আরেকটি ব্যাপার, পেশাদার রক্তদাতাদের বেশির ভাগই পুষ্টিহীনতায় ভোগে এবং চার মাসের বিরতির ব্যাপারটি না মেনেই রক্ত বিক্রি করে বলে রক্তের অন্যতম উপাদান হিমোগ্লোবিন এদের দেহে কম থাকে। ফলে এক ব্যাগ রক্তে যতটুকু হিমোগ্লোবিন রোগীর পাওয়ার কথা, তা সে পায় না। আর পেশাদারদের রক্ত বিক্রির মাধ্যম হিসেবে অলিগলিতে গড়ে ওঠা ব্লাড ব্যাংকগুলোও যথাযথ পরীক্ষা ছাড়াই রোগীদের সরবরাহ করছে এসব রক্ত। এ অবস্থা পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন স্বেচ্ছায় রক্তদানের ব্যাপারে জনসচেতনতা আরো বাড়ানো।
ডা. মুনতাসীর মারুফ

No comments

Powered by Blogger.