হংকংয়ে থাকা এডওয়ার্ড স্নোডেনের হদিস নেই

যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণ মানুষের ওপর সরকারের নজরদারির তথ্য ফাঁস করা সাবেক সেনাসদস্য এডওয়ার্ড স্নোডেনের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। হংকংয়ের একটি হোটেল থেকে গত সোমবার দুপুরে তিনি অন্য কোথাও চলে গেছেন। এদিকে বিপুলসংখ্যক মার্কিন গোপন তথ্য ফাঁস করে সাড়া জাগানো ওয়েবসাইট উইকিলিকসের প্রধান জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের সঙ্গে স্নোডেনের ‘পরোক্ষ যোগাযোগ ছিল’ বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) সাবেক কর্মী স্নোডেন তাঁর দেশের সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্য ফাঁস করার কথা স্বীকার করেছেন। স্নোডেনের দাবি, বিশ্বজুড়ে জনগণের ‘মৌলিক স্বাধীনতা রক্ষার স্বার্থে’ তিনি এ কাজ করেছেন। গত ২০ মে থেকে স্নোডেন চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংয়ের এক হোটেলে অবস্থান করছিলেন বলে ধারণা করা হয়। স্থানীয় চীনপন্থী এক নেতা মন্তব্য করেছিলেন, সেখান থেকে তাঁর চলে যাওয়া উচিত। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী তাঁকে পলাতক আসামি হিসেবে প্রত্যর্পণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। স্নোডেনের ব্যাপারটি নাগরিক স্বাধীনতা প্রসঙ্গে হংকংয়ের কর্তৃপক্ষের জন্য এক বড় পরীক্ষা বলে বিবেচিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে চীন গতকাল পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনমুক্ত হওয়ার পর থেকে আবার চীনের আওতাধীন এ গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র। হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী নেতাদের অভিযোগ, তাঁদের ওপর চীন বেশি মাত্রার আধিপত্য ফলায়। লন্ডনে অবস্থানরত জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ অস্ট্রেলিয়ার একটি টেলিভিশনের সঙ্গে আলাপকালে তাঁর সঙ্গে স্নোডেনের পরোক্ষ যোগাযোগ থাকার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসএ এবং তার সহযোগীরা সাধারণ মানুষের ওপর গোপন নজরদারি করে। তিনি বছরের পর বছর ধরে এ ব্যাপারে বলে আসছেন। স্নোডেন এবার একই কাজ করেছেন। তবে এ ব্যাপারে আর বিস্তারিত কিছু না বলে অ্যাসাঞ্জ বলেন, উইকিলিকস ও স্নোডেনের উদ্দেশ্য অভিন্ন। যৌন হয়রানির মামলায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ এড়াতে অ্যাসাঞ্জ বর্তমানে লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নিয়ে আছেন। স্নোডেনের ফাঁস করা বিভিন্ন তথ্য সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান ও যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এতে জানা যায়, এনএসএ ও অন্যান্য মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সাধারণ মানুষের লাখ লাখ ফোনালাপের রেকর্ড সংগ্রহ করে এবং ইন্টারনেটে জনগণের ব্যক্তিগত তথ্যের ওপর নিয়মিত নজরদারি করে। এদিকে, স্নোডেনকে অবিলম্বে ক্ষমা করে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটে অন্তত ৩০ হাজার স্বাক্ষরসংবলিত একটি দরখাস্ত পোস্ট করা হয়েছে। তবেওয়াশিংটন পোস্ট-এর এক জনমত জরিপের তথ্য অনুযায়ী, সন্ত্রাসী তৎপরতা দমনের উদ্দেশ্যে জনগণের ওপর নজরদারির ব্যাপারটি যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ মানুষ সমর্থন করে। রয়টার্স, বিবিসি ও দ্য হিন্দু।

No comments

Powered by Blogger.