যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পারমাণবিক হামলার অনুমোদন উ. কোরিয়ার

যুক্তরাষ্ট্রকে লক্ষ্য করে পারমাণবিক হামলা চালাতে সশস্ত্র বাহিনীকে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। বৃহস্পতিবার পিয়ংইয়ংয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “সামরিক বাহিনীকে পারমাণবিক হামলা চালানোর চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।”
মার্কিন সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক বোমা হামলার হুমকির প্রেক্ষিতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সামরিক ঘাঁটিগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বাড়ানো হচ্ছে।

এর অংশ হিসেবে কোরীয় উপদ্বীপ থেকে দক্ষিণ দক্ষিণে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের ‘গুয়াম’ সামরিক ঘাঁটিতে ইন্টারসেপ্টর বিমান (শত্রুদের হামলাকারী বিমান আটকে দেওয়ার ক্ষমতা সম্পন্ন বিমান) পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে পেন্টাগন।

এ দিকে পেন্টাগন সূত্রের উদ্বৃতি দিয়ে সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, সামরিক ঘাঁটি গুয়ামকে রক্ষায় সেখানে উঁচু থেকে উঁচুতে নিক্ষেপযোগ্য শত্রুদের ক্ষেপণাস্ত্র-ধ্বংসকারী অস্ত্র ‘থাড’ পাঠানো হচ্ছে।

ইতোমধ্যে দু’টি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসকারী এ ধরনের অস্ত্র গুয়াম সামরিক ঘাঁটির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

এর আগে, বুধবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী চাক হেগেল এক বিবৃতিতে বলেন, “পিয়ংইয়ংয়ের বিতর্কিত হুমকি ও এর সামরিক দক্ষতা যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপানসহ এ অঞ্চলের মার্কিন মিত্রদের জন্য ‘প্রধান ও স্পষ্ট বিপজ্জনক’ হয়ে উঠেছে।”

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, “তাদের (উত্তর কোরিয়া) এখন পারমাণবিক সক্ষমতা রয়েছে, রয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের সক্ষমতাও। আমরা এসব হুমকি গুরুত্বসহকারে নিয়েছি, তারা আমাদের যে ধরনের হুমকি দিচ্ছে সেসব হুমকি অবশ্যই গুরুত্বসহকারে নেওয়া উচিত।”

অন্য দিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার একজন শীর্ষ কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “উত্তর কোরিয়া কখন তাদের চূড়ান্ত হামলা শুরু করে অথবা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তাদের শক্তি প্রদর্শন করে তা আমরা খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।”

তবে আক্রান্ত হলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়ারও হুমকি দেয় সিউল।

বুধবার উত্তর কোরিয়ার ১০ কিলোমিটার ভিতরে অবস্থিত যৌথভাবে নির্মিত ‘কেইসং শিল্প এলাকা’য় দক্ষিণ কোরীয় শ্রমিকদের প্রবেশাধিকার স্থগিত করে দেয় উত্তর কোরিয়া।

এ সিদ্ধান্তের ফলে পিয়ংইয়ং ও সিউলের মধ্যকার চলমান উত্তেজনা আরও ঘণীভূত হয়।

উত্তর কোরিয়ার নিষেধাজ্ঞা অনুসারে সিউল সমন্বয় মন্ত্রণালয় থেকে বুধবার বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়ার শ্রমিকরা পার্কটি ত্যাগ করতে পারবেন, কিন্তু কেউ আর অনুপ্রবেশ করতে পারবেন না।

তবে সিদ্ধান্তটি কতদিন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে এ ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি।

সমন্বয় মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “এখন আমাদের প্রধান গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো পার্কটিতে থাকা আমাদের ৮৬১ জন শ্রমিককে নিরাপদে ফিরিয়ে আনা।”

সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক মহড়া এবং উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক পরীক্ষা ইস্যুতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কোরীয় উপদ্বীপ। সে সূত্র ধরে উত্তর কোরিয়া নিজেদের ‘যুদ্ধ রাষ্ট্র’ হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার পর ওয়াশিংটন-সিউলের সঙ্গে পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যকার সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে।

No comments

Powered by Blogger.