প্রধান বিচারপতির বক্তব্য

আইনের শাসন ছাড়া দেশ চলতে পারে না_ কথাটি বলেছেন নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি মোঃ ফজলুল করিম। বঙ্গভবনে দেশের ১৮তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ গ্রহণের পর সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, আইনের শাসন ছাড়া দেশে গণতন্ত্র চলতে পারে না।
স্বাধীনতার পর দেশ যে পথে চলার সে পথে দীর্ঘকাল চলতে পারেনি। সে পথটি গণতন্ত্রের পথ। স্বাধীনতা অর্জনের লৰ্যে যে সংগ্রাম, যে যুদ্ধ, সেটা হয়েছে সেই লৰ্যগুলো বাসত্মবায়নের স্বপ্ন নিয়ে, স্বাধীনতার কিছু দিন পরই দেশকে সে পথ থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। দেশকে নিয়ে যাওয়া হয় কাজটি করাই হয় সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক পথে এবং বেআইনীভাবে। এটা করা হয় দেশে মানুষের ইচ্ছা এবং আকাঙ্ৰার সম্পূর্ণ বিপরীতে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর স্বাধীন দেশে যে চারটি মূল লৰ স্থির করা হয় তার একটি গণতন্ত্র। সেই গণতন্ত্র দীর্ঘদিন অববরম্নদ্ধ করে রাখা হয়েছিল অগণতান্ত্রিকভাবে। গণতন্ত্রের জন্য আবার দীর্ঘদিন সংগ্রাম করতে হয়েছে দেশবাসীকে। অগণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা দেশে বেআইনী পন্থায় চালু করে দেয়ার কারণে দেশে গণতন্ত্রবিরোধী একটি চক্র গড়ে ওঠে এবং দীর্ঘদিন তারা তাদের দেশে খেয়ালখুশি চরিতার্থ করার সুযোগ পেয়ে যায়। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও ধ্বংস করা হয় বা দুর্বল কিংবা অকেজো করে দেয়া হয়। যার জন্য দীর্ঘকাল এসব প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী হতে পারেনি। আইনের শাসনও প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি। ফলে এই ব্যবস্থা জোরদারও হতে পারেনি। তাই আইনের শাসন না থাকা আর অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু থাকা সমার্থক। আইনের শাসন না থাকলে গণতন্ত্র থাকে না এই কাথটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে জনগণের ইচ্ছা-আকাঙ্ৰার প্রতি অবমাননা এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতির মধ্য দিয়ে দেশ ও জনগণের জন্য যেসব কুফল আসে সেগুলো থেকে সবাইকে বঞ্চিত করা। এ দেশে দীর্ঘ দিন তাই হয়েছে। পরে নানা চড়াই-উৎরাইয়ের পর দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে গণতন্ত্রের শাসন। বিশেষ করে বিগত নির্বাচনের পর দেশে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রার ব্যাপারে নতুন আশা সৃষ্টি হয়েছে। এবারের নির্বাচনে জনগণের রায়ে যে কয়টি আকাঙ্ৰা মূর্ত হয়েছে সেগুলোর একটি গণতন্ত্র তথা আইনের শাসন। কাউকে খুন করে ৰমতা থেকে সরিয়ে ৰমতা দখল করার যে অগণতান্ত্রিক রীতি মানুষ একাধিকবার দেখেছে সেটাকে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। এই হত্যার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে তাঁর সরকারকে সরিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা ৰমতা দখল করে নেয় এবং আইনের শাসনকে সম্পূর্ণ উপেৰা করে ঐ হত্যার বিচার যাতে না হয় সে জন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে। এবারের নতুন সরকারের আমলে সেই হত্যার বিচার হওয়ার পর দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে মানুষের মনে বিপুল আস্থা ফিরে আসে। এই সরকার জেলহত্যার বিচারসহ অন্যান্য অপরাধ ও খুনের পর্যায়ক্রমিক বিচারের যে কথা বলেছে সেটাও আইনের শাসনের প্রতি মানুষকে বিশেষভাবে উজ্জীবিত করেছে। মানুষ প্রত্যাশা করে, এবারের সব হত্যা, খুন অপরাধের বিচার হবে, মানুষ ন্যায়বিচার পাবে।
প্রধান বিচারপতির আরেকটি কথা বিশেষভাবে উলেস্নখ করার মতো। তিনি বলেছেন, তিনি মুক্তিযোদ্ধা। সকলের দায়িত্ব হবে ভূখ-কে রৰা করা।
একজন মুক্তিযোদ্ধার প্রধান বিচারপতি পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার এই খবরটি দেশবাসী সবাইকে বিশেষভাবে আনন্দিত করবে। কী অবস্থার মধ্য দিয়ে, কেমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিযে কত ত্যাগের পর আমাদের স্বাধীনতা এসেছে সে কথা মুক্তিযোদ্ধাদের চাইতে ভাল আর কে হৃদয়ঙ্গম করবে? দেশের মানুষ সবসময় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চায়, আইনের শাসন চায়, ন্যায়বিচার চায়। এই সত্যের আলোকে আমাদের বিচার বিভাগকে এমনভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে যেখানে দেশের মানুষ ন্যায়বিচার পাবে, কোথাও কখনও 'বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কেঁদে' মরবে না_এমন অবস্থা আমাদের দেশে সুপ্রতিষ্ঠিত থাকবে। এ ৰেত্রে নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি তাঁর যথাযথ অবদান রাখবেন এবং একটি গতিশীল, সুস্থ বিচার বিভাগ দেশে প্রতিষ্ঠিত হবে_এটাই সবার প্রত্যাশা।
ক্যান্সারে পরাসত্ম রম্নবেন

জনপ্রিয় রাগবি খেলোয়ার রম্নবেন ক্রজার যিনি কিনা ১৯৯৫ সালে রাগবি ওয়াল্ড কাপ এর বিজয়ী দলের সদস্য ছিলেন। দৰিণ আফ্রিকার ফরোওয়ার্ড পেস্নয়ার হয়ে খেলেছেন দীর্ঘদিন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস মাত্র ৩৯ বছর বয়সে ক্যান্সারে আক্রানত্ম হয়ে সম্প্রতি তিনি মৃতু্য বরন করেন। রম্নবেন হাটুর ইনজুরিতে ভুগছিলেন দীর্ঘদিন। সেখান থেকেই ক্যান্সারের সূত্রপাত।
_আইএইচটি, জানুয়ারি ২০১০

No comments

Powered by Blogger.