আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো

বলতে বলতে ফেব্রুয়ারির দশ দিন চলে যাচ্ছে আজ। এগিয়ে আসছে মহান একুশে। আমাদের মাতৃভাষা দিবস আর বিশ্ব প্রেৰাপটে আনত্মর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। কিন্তু '৫২-এর আগে প্রতিবছর ১১ মার্চকে রাষ্ট্রভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হতো।
১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করা হবে এই মর্মে তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীনের সঙ্গে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের একটি লিখিত চুক্তি স্বাৰরিত হয়। তখন সরলমনা বাঙালীরা কল্পনাই করতে পারেনি এই নাজিমুদ্দীনই ৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি পূর্বের চুক্তি লঙ্ঘন করে বক্তব্য দেবেন। সেদিন ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে এক জনসভায় তিনি ঘোষণা দেন উর্দুই হবে পাকিসত্মানের রাষ্ট্রভাষা। এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বিৰোভে ফেটে পড়ে পূর্ব পাকিসত্মানের আমজনতা। এর প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সকল শিৰা প্রতিষ্ঠানে পালিত হয় ধর্মঘট। ৩১ জানুয়ারি ঢাকা বার লাইব্রেরিতে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে সর্বদলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে গঠিত হয় ৪০ সদস্যের একটি সর্বদলীয় কর্মপরিষদ। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন পরিচালনার দায়িত্ব পড়ে এই কমিটির ওপর। কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন মওলানা ভাসানী, সদস্য ছিলেন আবুল হাশিম, আব্দুল গফুর, সামসুল হক, আবুল কাশেম, আতাউর রহমান খান, খয়রাত হোসেন, অলি আহাদ, আনোয়ারা খাতুন, আব্দুল আওয়াল, শামসুল হক চৌধুরী, সৈয়দ আব্দুর রহিমসহ আরও অনেকে। এই কর্মপরিষদের দিকনির্দেশনা ও পরিকল্পনায় রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন হয় বেগবান, আর বাঙালীর মায়ের ভাষা পায় রাষ্ট্রভাষার অধিকার ও মর্যাদা। অনেক সংগ্রাম আর আনন্দ-বেদনার ফেব্রম্নয়ারির আজ দশম দিন। অন্যান্য দিনের মতো আজও ঢাকাতে চলে আলোচনাসভা ও প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নতুন প্রজন্মকে এই গৌরবের কথা জানানোর জন্যই দেশের বিভিন্ন স্থানে চলছে নানা সাংস্কৃতিক কর্মকা-। তারই ধারাবাহিকতায় আজ বিকেল চারটায় বাংলা একাডেমীর মূল মঞ্চে আলোচনা হবে ভাষা শহীদ আব্দুস সালামকে নিয়ে। এতে সভাপতিত্ব করবেন কবি বেলাল চৌধুরী, প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন য. শাহীদা আখতার। আরও বক্তৃতা করবেন কবি কাজী রোজী ও ভাস্কর রাসা।

No comments

Powered by Blogger.