রাবির হলে হলে শিবিরের তাণ্ড ॥ ছাত্রলীগার কর্মী খুন হত্যা করে লাশ ম্যানহোলে ফেলে দেয়া হয় ॥ চারজনের হাত পায়ের রগ কর্তন ॥ পুলিশসহ আহত অর্ধশত ॥ ক্যাম্পাস রণৰেত্র ॥ ১৭ ক্যাডার গ্রেফতার

 জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের রাজশাহী সফরের একদিন পরই শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডাররা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ভয়াবহ তা-ব চালিয়ে এক ছাত্রলীগ কমর্ী গণিত শেষ বর্ষের ছাত্র ফারম্নক হোসেনকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন এবং অপর চার ছাত্রলীগ কর্মীর হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়েছে। সশস্ত্র শিবির কর্মীদের বর্বর হামলায় ছাত্রলীগ কর্মী ও পুলিশসহ অনত্মত ৫০ জন আহত হয়েছেন।
ফারম্নক হোসেনকে খুনের পর তার লাশ সৈয়দ আমীর আলী হলের বাথরম্নমের ম্যানহোলে ফেলে দেয় শিবির ক্যাডাররা। পরে সেখান থেকে ঐ লাশ উদ্ধার করা হয়। আহতদের রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ নগরীর বিভিন্ন কিনিক ও বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার গভীর রাতে শিবিরের একতরফা সশস্ত্র তা-বে আহত ছাত্রলীগ কর্মী এবং সাধারণ ছাত্ররা ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে বাঁচে। ওই সময় থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যনত্ম শিবির ক্যাডাররা পুলিশের সঙ্গে সশস্ত্র সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে গোটা ক্যাম্পাস রণেেত্র পরিণত এবং মুহুর্মুহু গুলি-বোমার শব্দে ক্যাম্পাস প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। এসব ঘটনার আগে ও পরে পুলিশ মোট ১৭ শিবির ক্যাডারকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। আহতদের মধ্যে হাত-পায়ের রগকাটা ব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ফিরোজ মাহমুদ ও বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সাইদুর রহমান বাদশাকে গুরম্নতর অবস্থায় বিকেলে রাজশাহী থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানানত্মর করা হয়েছে। প্রাণ রসায়ন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র জনিকে পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে এবং অন্যান্য আহতকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বিভিন্ন কিনিক ও বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার সকালে পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব লতিফ হলের সামনে থেকে একটি এলজি মেশিনগান ও তিনটি অবিস্ফোরিত শক্তিশালী বোমা উদ্ধার করেছে। সোমবার দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে একটি তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে সশস্ত্র শিবির ক্যাডাররা রাতভর ক্যাম্পাসে তা-ব চালায় বলে জানা যায়। মঙ্গলবার বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যনত্ম থানায় কোন মামলা হয়নি। ক্যাম্পাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশের পাশাপাশি র্যাব সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। রাতের তা-বের ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপ সকালেই এক জরম্নরী সভার মাধ্যমে মঙ্গলবারের সকল কাস ও পরীা স্থগিত ঘোষণা করে। বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যনত্ম সিন্ডিকেটের জরম্নরী সভা চলছিল।
প্রত্যদশর্ীরা, পুলিশ ও হলের আবাসিক ছাত্ররা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী হিসাববিজ্ঞান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আসাদুজ্জামান আসাদ সোমবার রাত আটটার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে যান। তিনি হলে যাওয়ার সময় হল গেটের সামনেই শিবির নেতাকর্মীরা তাঁকে ঘিরে ধরে তাঁকে শিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান নোমানীর হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত হিসেবে অভিযুক্ত করে। পাশাপাশি শিবির নেতাকর্মীরা তাঁকে ওই হলের অনাবাসিক ছাত্র হিসেবে অভিযুক্ত করে তাকে হলে প্রবেশে বাধা দেয়। এ নিয়ে বাকবিত-ার এক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক খালিদ হোসাইনের নেতৃত্বে ১০/১৫ জনের একদল সশস্ত্র শিবির ক্যাডার ধারালো চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, লোহার রড ও হাতুড়ি নিয়ে তার ওপর হামলা চালিয়ে গুরম্নতর জখম করে। এ সময় ওই হলের ছাত্রলীগ কর্মী মার্কেটিং চতুর্থ বর্ষের ছাত্র কাওসার আলম এগিয়ে এলে শিবির ক্যাডাররা তাকে কুপিয়ে গুরম্নতর জখম করে। পরে হলের কর্মচারী ও সাধারণ শিার্থীরা তাঁদের উভয়কে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১টি ছাত্র হলে শিবির ও ছাত্রলীগ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। খবর পেয়ে প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টরদের নেতৃত্বে পুলিশ বঙ্গবন্ধু হল ঘিরে রাখে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, নবাব আব্দুল লতিফ ও শহীদ হবিবুর রহমান হলে তলস্নাশি চালায়। এ সময় পুলিশ ১৩ শিবির ক্যাডার যথাক্রমে আবদুলস্নাহ আল মামুন, শামীম, কাউসার, খোরশেদ, সেলিম, মোমিন, মাহফুজ, তুহিন, আব্দুর রাজ্জাক, পারভেজ, লিটন, হাশেম আলীকে আটক করে নিয়ে যায়। তলস্নাশিতে সংশিস্নষ্ট পুলিশের কর্মকর্তা ও সদস্যরা রাত পৌনে ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ত্যাগ করে চলে যায়। অতিরিক্ত পুলিশের সদস্যদের চলে যাবার পরই আবাসিক হলগুলোতে নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরাও রহস্যজনক কারণে হলের নির্ধারিত ক েতালা মেরে হলগেট ছেড়ে চলে যায়। আবাসিক হলগুলোর গেট থেকে পুলিশের সদস্যদের রজস্যজনক চলে যাবার ১৫ মিনিটের মধ্যে বহিরাগতসহ শিবিরের দুই শতাধিক সশস্ত্র ক্যাডার জঙ্গী মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। শিবির ক্যাডারদের মিছিলের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয়া হলেও সশস্ত্র শিবির ক্যাডাররা সৈয়দ আমীর আলী, শাহ মখদুম, মাদার বখ্শ, হবিবুর রহমান, শামসুজ্জোহা, সোহরাওয়াদর্ী হলসহ বিভিন্ন হলের প্রধান ফটক ভেঙ্গে হলের ভেতরে প্রবেশ করে। তারা হলের ভেতরে অবস্থানরত ছাত্রলীগ কর্মীদের চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, ধারালো ছুরি, লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরম্নতর জখম করে। শিবিরের এলোপাতাড়ি সশস্ত্র হামলায় বিভিন্ন হলের ছাত্রলীগ কর্মী ব্যবস্থাপনা চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ফিরোজ মাহমুদ, গণিত তৃতীয় বর্ষের ছাত্র শফিউলস্নাহ, বাংলা দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তৌফিক, ইতিহাস মাস্টার্সের ছাত্র রম্নহুল আমিন, বাংলা চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সাইদুর রহমান বাদশা, প্রাণ রসায়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র জনি, মার্কেটিং চতুর্থ বর্ষের মুন্না, সমাজকর্ম চতুর্থ বর্ষের ছাত্র রাহি, মনোবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র লুৎফর রহমান, শাহ মখদুম হলের আবাসিক ছাত্র গোলাম রব্বানী, খোকন, নিজাম, ওয়াসিম, নাদিম, সাঈদ, শামীম, শের-ই-বাংলা হলের রাশেদুল ইসলাম, মোহন ও অপর এক খোকনসহ প্রায় অর্ধশত ছাত্রলীগ নেতাকর্মী আহত হন। এ সময় শিবির ক্যাডাররা বাদশার দুই হাত ও ডান পায়ের, রম্নহুল আমীনের দুই হাত ও ডান পায়ের, ফিরোজ মাহমুদের দুই পা ও বাম হাতের এবং জনির দুই পায়ের রগ কেটে দেয়। তারা ওইসব হলের দুই শতাধিক ক েব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করে ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন ক েঅগি্ন সংযোগ করে। আহতাবস্থায় ছাত্রলীগ কর্মী ও সাধারণ ছাত্ররা ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে বাঁচে। মঙ্গলবার সকালে বিভিন্ন হলের গেটের সামনে ও ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন হলের করে সামনে আহত ছাত্রলীগ কর্মীদের ছোপ ছোপ রক্ত পড়ে থাকতে দেখা যায়।
রাজশাহী মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন গুরম্নতর আহত ছাত্রলীগ কর্মী তৌফিক জানান, হলে হলে শিবির ক্যাডারদের তা-বের এক পর্যায়ে তিনিসহ প্রায় ১০/১২ ছাত্রলীগ কমর্ী এসএম হলের টিভি রম্নমে আশ্রয় নেন। রাত একটার পর এসএম হলের শিবিরের সভাপতি আনিসুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আহাদের নেতৃত্বে শিবিরের প্রায় ২৫/৩০ সশস্ত্র ক্যাডার টিভি রম্নমের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে তাঁদের ওপর চাপাতি, লোহার রড, হাতুড়ি, লোহার রড ও চাইনিজ কুড়াল নিয়ে হামলা চালায়। শিবিরের হামলা থেকে তিনিসহ (তৌফিক) অন্যরা আহতবস্থায় দেঁৗড়ে পালাতে সম হলেও ফারম্নক হোসেন টিভি রম্নমে আটকা পড়ে যান। এ সময় সশস্ত্র শিবির ক্যাডাররা টিভি রম্নমের এক কোণ থেকে ছাত্রলীগ কর্মী ফারম্নক হোসেনকে টেনে হিঁচড়ে বের করে পিঠের নিচের ডানদিকে, সোল্ডারে, কাঁধে ও ডান পাঁজরে চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল দিয়ে এবং বাম পায়ের হাঁটুর নিচে লোহার রড দিয়ে আঘাত করে। এতে টিভি রম্নমেই ফারম্নক হোসেনের মৃতু্য হয়। সেখানে ছোপ ছোপ রক্ত পড়ে রয়েছে। পরে শিবির ক্যাডাররা ফারম্নকের লাশ গায়েব করার উদ্দেশ্যে টেনেহিঁচড়ে প্রায় আড়াই শ' গজ দূরে এসএম হলের পূর্ব ও সৈয়দ আমীর আলী হলের দণি পাশের বাথরম্নমের ম্যানহোলে ফেলে দেয়। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত ফারম্নকের পিঠের নিচে ডান দিকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কিডনি ও লিভার ইনজিউড (কাটা-জখম), লোহার রডের আঘাতে বাম পায়ের হাটুর নিচের দু'টি হাড় ভেঙ্গে গেছে। এছাড়া সোল্ডারে, কাঁধে, ডান পাঁজরেও ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মূলত কিডনি ও লিভার তিগ্রসত্ম ও অতিরিক্ত রক্তরণে ফারম্নকের মৃতু্য হয়েছে বলে সংশিস্নষ্ট এক চিকিৎসক জানান।
পুলিশ জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে শিবিরের তা-বের খবর পেয়ে রাত দেড়টার দিকে প্রক্টরিয়াল বডির নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। এ সময় পুলিশ সশস্ত্র শিবির ক্যাডারদের ধাওয়া করলে শিবির ক্যাডাররা পুলিশের ওপর গুলি ও বোমা নিপে করে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। জবাবে পুলিশও পাল্টা গুলি ও টিয়ারগ্যাস সেল নিপে করে। রাত দেড়টা থেকে তিনটা পর্যনত্ম থেমে থেমে পুলিশ ও শিবির ক্যাডারদের বন্দুক, বোমা ও টিয়ারগ্যাস শেল যুদ্ধ চলতে থাকে। বোমা ও গুলির শব্দে গোটা ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রক্টরের নেতৃত্বে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য এবং মহানগর পুলিশের উপকমিশনার সরদার নুরম্নল আমিনের নেতৃত্বে মহানগর পুলিশের তিনজন সহকারী কমিশনার ও মতিহার, বোয়ালিয়া ও রাজপাড়া এই তিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সমন্বয়ে কয়েক শ' পুলিশের দুঃসাহসিক প্রচেষ্টার এক পর্যায়ে র্যাব-৫ রাজশাহী সদর দফতর থেকে একদল র্যাব সদস্যও তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। রাত ৩টার পর পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সশস্ত্র শিবির ক্যাডাররা সোহরাওয়ার্দী হল এবং সৈয়দ আমীর আলী হলের পাশ দিয়ে মেহেরচ-ী ও বুধপাড়া হয়ে পালিয়ে যায়। রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি) সরদার নূরম্নল আমিন সাংবাদিকদের জানান, ছাত্রলীগসহ পুলিশের ওপর হামলা চালাতে শিবির ধারালো অস্ত্র, লোহার রড, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, বোমা, আগ্নেয়াস্ত্রসহ সব ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাল্টা রবার বুলেট, টিয়ার শেল ও ফাঁকা গুলি করে। তিনি জানান, শিবিরের সশস্ত্র হামলায় ছাত্রলীগের পাশাপাশি ৭/৮ পুলিশ সদস্যও গুরম্নতর আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যদের নগরের বিভিন্ন হাসপাতাল ও কিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। তবে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে শিবির ক্যাডারদের কয়জন আহত হয়েছে তা নির্ভরযোগ্য কোন সূত্র থেকে জানা যায়নি। বর্তমানে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ক্যাম্পাসে বিপুলসংখ্যক পুলিশ, র্যাব সদস্য, দাঙ্গা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
এসএম হলের প্রাধ্য অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র রায় জানান, সোমবার রাতে হলের প্রহরায় ছিলেন নাইট গার্ড আব্দুল হামিদ ও গিয়াস। এ সময় আরও সাত পুলিশ সদস্য ওই হলে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বললে পুরো ঘটনা জানা সম্ভব বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আওয়াল কবির ও সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম বলেন, শিবির পূর্বপরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটিয়েছে। ছাত্রলীগের ওপর সশস্ত্র হামলার পর পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির ক্যাডারদের সঙ্গে গত ৭ ফেব্রম্নয়ারি রাজশাহীতে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর জনসভা উপল েউত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত শিবিরের ক্যাডাররা অংশ নিয়েছে বলে সাধারণ ছাত্ররা তাদের জানিয়েছে। তারা হামলা ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িত শিবির নেতাকর্মী ও ক্যাডারদের চিহ্নিত করে দৃষ্টানত্মমূলক শাসত্মির দাবি জানান। তবে শিবিরের সভাপতি শামসুল আলম গোলাপ সাংবাদিকদের বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু হলে অবৈধভাবে সিট দখলের চেষ্টা করছিল। শিবিরের নেতাকর্মীরা এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

পরিকল্পিত হামলা ও ফের রগকাটার সংস্কৃতি
আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দসহ প্রগতিশীল বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, সোমবার রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১টি আবাসিক হলে ছাত্রলীগ কর্মীদের ওপর শিবিরের তা-বের ঘটনা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। এই পরিকল্পনার সঙ্গে রাজশাহী মহানগরে কর্মরত জামায়াত শিবির সমর্থক পুলিশের সদস্যরাও জড়িত। কারণ হিসেবে ক্যাম্পাস সূত্রগুলো বলছে, দীর্ঘদিন পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকৃত ছাত্রদের নিয়ে আংশিক কমিটি ঘোষিত হয়েছে। পুরো কমিটি ঘোষিত হওয়ার আগেই শিবির ছাত্রলীগকে ছত্রভঙ্গ করতে আংশিক কমিটি গঠনের পর থেকেই ছাত্রলীগের ওপর হামলার পরিকল্পনা ছক কষে আসছিল। বিষয়টি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগও জানত। কিন্তু তার পরও পুলিশ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়নি। উপরন্তু সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল, '৭২ এর সংবিধান পুনপর্্রবর্তন, ধর্মীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গ তো রয়েছেই। সবমিলিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির অংশ হিসেবে জামায়াত শিবির চক্র পরিকল্পিতভাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তা-ব, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হতাহত করা হয়েছে বলে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলহাজ রফিক উদ্দিন আহমেদ অভিযোগ করেন। এর আগে রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বলেন, রাজশাহীতে জামায়াতের জনসভার কোন বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে। তারা না জানি কোন্্ পরিকল্পনা করে জনসভার জন্য রাজশাহীকেই বেছে নিয়েছে। গত ৭ ফেব্রম্নয়ারি রাজশাহীতে জামায়াতের জনসভায় আগত কেন্দ্র্রীয় নেতাদের গ্রীনসিগন্যাল পেয়েই শিবির ক্যাডাররা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের পরিকল্পনা বাসত্মবায়নে মাঠে নামে বলে আওয়ামী লীগ নেতা জরফিক উদ্দিন অভিযোগে জানান। তিনি বলেন, শিবিরে হাত-পায়ের রগকাটার সংস্কৃতি নতুন নয়। আশির দশকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিা প্রতিষ্ঠানে শিবির অসংখ্য ছাত্রের হাত-পায়ের রগ কেটে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। রাজশাহী সদরের সংসদ সদস্যসহ বিভিন্ন প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা শিবিরের ওই অপকর্মের রাজসাী হয়ে আছেন। সেই ধারা থেকে শিবির এখনও বের হতে পারেনি। নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য শিবির রগ কাটার সংস্কৃতি চালু করেছে বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।

পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা
সোমবার রাতে বঙ্গবন্ধু হলের তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই ছাত্রলীগ কর্মীর ওপর শিবিরের সশস্ত্র হামলার পর পুলিশের কয়েকটি হল তলস্নাশির পর অতিরিক্ত পুলিশের সঙ্গে আবাসিক হলগুলোর পুলিশ সদস্যদের হল ছেড়ে চলে যাওয়ার ঘটনা গভীর রহস্যের সৃষ্টি করেছে। প্রশ্ন উঠেছে_ হলগেটের দায়িত্বরত পুলিশের সঙ্গে শিবিরের পূর্ব পরিকল্পনা ছিল কিনা? প্রত্যদর্শী বিভিন্ন আবাসিক হলের ছাত্ররা জানান, হল তলস্নশির পর শিবির ক্যাডাররা একযোগে সব আবাসিক হল ত্যাগ করে চলে যায়। সঙ্গে সঙ্গে চলে যায় হলগেটে দায়িত্বরত পুলিশের দারোগা ও কনস্টেবলরাও। কিন্তু কিছুণের মধ্যেই শিবির ক্যাডাররা সশস্ত্র অবস্থায় জঙ্গী মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। তখন কোন আবাসিক হলের গেটেই পুলিশ সদস্যরা ছিল না। রাতের অাঁধারে রহস্যজনকভাবে হলগেট ছেড়ে চলে যাওয়া পুলিশ সদস্যদের ইতোপূর্বে জামায়াতের মুখপত্র বলে পরিচিত বিশেষ পত্রিকা পড়তে দেখেছে ছাত্ররা। এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের সশস্ত্র তা-ব এবং পুলিশের ভূমিকা সরেজমিনে তদনত্ম করতে আইজিপি নূর মোহাম্মদ মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। রাতেই তাঁর ঘটনাস্থল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পরিদর্শনের কথা রয়েছে।
ফারুকের পরিচয় ও নামাজে জানাজা ॥ শিবিরের ক্যাডারদের হাতে নৃশংসভাবে খুন ছাত্রলীগ কমর্ী মোঃ ফারম্নক হোসেনের বাড়ি জয়পুরহাট জেলার সদর উপজেলার খোর্দ্দসগুনার মাঝিপাড়া গ্রামে। তাঁর পিতার নাম ফজলুর রহমান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। ফারম্নক হোসেন এসএম হলের ১০৯ নম্বর ক েথাকতেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টায় আমীর আলী হলের দণি পাশের ম্যানহোলের ভেতর থেকে পুলিশ ফারম্নকের লাশ উদ্ধার করে। নিহত ফারম্নক হোসেনের প্রথম নামাজে জানাজা বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য, সহ-উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শীর্ষকর্তা ব্যক্তি, শিক-শিার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রম্নজ্জামান লিটনসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজন অংশগ্রহণ করেন। বিকেলে রাজশাহী মহনগরীর সাহেব বাজারে ফারম্নকের দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে তাঁর লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। এর আগে ফারম্নকের লাশ নিয়ে ছাত্রলীগ ক্যাম্পাস ও শহরে বিােভ মিছিল করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কতর্ৃপরে বক্তব্য এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক মোহাম্মদ ফায়েকউজ্জামান স্বারিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার রাত প্রায় ৮টায় ইসলামী ছাত্র শিবিরের সন্ত্রাসীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে আকস্মিকভাবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকমর্ীদের ওপর বেধড়ক হামলা চালায়, ফলে বেশ কয়েকজন ছাত্র আহত হয়। ঘটনার সংবাদ পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল কর্তৃপ আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও আইনশৃঙ্খলা রাকারী কর্তৃপরে প থেকে জানানো হয় যে, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আয়ত্তে আছে ও তা বজায় রাখার সকল প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু রাত প্রায় ১টা নাগাদ ইসলামী ছাত্র শিবিরের সন্ত্রাসীরা আবারও একযোগে সকল ছাত্র হলে বেপরোয়া হামলা চালিয়ে নিরীহ ছাত্রদের মারপিট করে। ফলে শতাধিক ছাত্র আহত হয়। রাত প্রায় ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর সহায়তায় আহতদের উদ্ধার ও চিকিৎসার চেষ্টা চালায়। ভোরে শাহ্ মখ্দুম হলের নিহত আবাসিক ছাত্র মোঃ ফারম্নক হোসেনের (গণিত, মাস্টার্স) লাশ ঐ হলসংলগ্ন সেপটিক ট্যাঙ্কের মধ্য থেকে উদ্ধার করা হয়। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদনত্মের পর বেলা ১টায় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তাঁর জানাজা শেষে লাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিসহ তাঁর নিজ বাড়ি জয়পুরহাটে পাঠানো হয়। জানাজায় মাননীয় উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্য ও রেজিস্ট্রারসহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাগণ শরিক হন। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রম্নজ্জামান লিটনও জানাজায় উপস্থিত ছিলেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় আজ মঙ্গলবারের নির্ধারিত সকল পরীা স্থগিত করা হয়। ক্যাম্পাসে বর্তমানে শানত্ম অবস্থা বিরাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপ এই হত্যাকা-সহ সন্ত্রাসী ঘটনার তীব্র নিন্দা করছে। মোঃ ফারম্নক হোসেনের প্রাণহানিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের প থেকে মাননীয় উপাচার্য গভীর শোক প্রকাশ করে তাঁর রম্নহের মাগফিরাত কামনা ও শোকসনত্মপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন ও আহতদের আশু আরোগ্য কামনা করেন। মাননীয় উপাচার্য আজ দুপুরে আহত ছাত্রদের দেখতে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। তিনি আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সম্ভব সকল পদপে গ্রহণের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপরে প্রতি অনুরোধ জানান। এই সময় মাননীয় উপ-উপাচার্য, কোষাধ্য, প্রক্টর, ছাত্র-উপদেষ্টা ও অন্যান্য কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র শিক তাঁর সঙ্গে ছিলেন। উলেস্নখ্য, এর আগে ভোর ৫টায় রেজিস্ট্রারসহ হল প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তা ও সিনিয়র শিকগণ আহতদের সুচিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যান ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন। দু'জন গুরম্নতর আহত ছাত্রকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য কর্তৃপ আজ মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় সিন্ডিকেটের জরম্নরীসভা আহ্বান করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে কর্তৃপ সংশিস্নষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেছে।
প্রগতিশীল শিক সমাজের বক্তব্য ॥ অন্যদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক সমাজের আহ্বায়ক এক বিবৃতিতে বলেন, 'গত ৮ ফেব্রম্নয়ারি সোমবার দিবাগত রাতে স্বাধীনতাবিরোধী মৌলবাদী ইসলামী ছাত্রশিবিরের হনত্মারক বাহিনী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলের সাধারণ ছাত্রসহ ছাত্রলীগ নেতাকমর্ীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ আক্রমণে তারা গণিত বিভাগের মেধাবী ছাত্র এবং ছাত্রলীগ নেতা মোঃ ফারম্নক হোসেনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ছাত্রশিবিরের এ হামলায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকমর্ীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ছাত্র মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। মধ্যযুগীয় বর্বরোচিত কায়দায় তাদের অধিকাংশেরই হাত-পায়ের রগ কাটা হয়েছে এবং মাথা ও শিরদাঁড়াসহ শরীরের বিভিন্ন গুরম্নত্বপূর্ণ স্থানে গুরম্নতরভাবে আঘাত করা হয়েছে। তাদের অধিকাংশই চিরদিনের জন্য পঙ্গুত্ববরণ করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক সমাজ এ বর্বরোচিত আক্রমণ এবং পৈশাচিক হত্যাকা-ের তীব্র প্রতিবাদ, ােভ ও নিন্দা জানাই। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন যাবত স্বাধীনতাবিরোধী মৌলবাদী জামায়াত-শিবিরচক্র তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকারের সহযোগিতায় আধিপত্য বিসত্মারের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। সেই ধারাবাহিকতায় তারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ছাত্রছাত্রীসহ স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পরে শক্তির ওপর নানাভাবে অত্যাচার ও দমন-নিপীড়ন করে আসছে। এবং আজও তা অব্যাহত রয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘি্নত হচ্ছে। আমরা এই স্বাধীনতাবিরোধী মৌলবাদী শক্তিকে প্রতিরোধ ও উৎখাত করার জন্য সংশিস্নষ্ট সকলকে আহ্বান জানাই। সেই সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মৌলবাদী শক্তি তথা জামায়াত-শিবিরের হাতে আর যেন কোন ছাত্রের তাজা প্রাণ ঝরে না যায় সে জন্য সরকারের কাছে মোঃ ফারম্নক হোসেনের হত্যাকারীদের যথাযথ বিচার ও শাসত্মি দাবি করছি। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা বিধানসহ ফারম্নক হোসেনের পরিবারকে প্রয়োজনীয় তিপূরণ প্রদান এবং ছাত্রশিবিরের বর্বরোচিত হামলায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকমর্ীর্সহ যেসব ছাত্র আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতকরণ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের দাবি জানাচ্ছি। আমরা নিহত ফারম্নক হোসেনের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাঁর শোকসনত্মপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি।'

মেয়র লিটনের বিবৃতি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নারকীয় হামলায় গণিত বিভাগের শেষ বর্ষের মেধাবী ছাত্র ফারম্নক হোসেনের মৃতু্যতে গভীর শোক প্রকাশ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের আহ্বান জানিয়েছেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রম্নজ্জামান লিটন। দুপুরে মেয়র আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান। তাদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন এবং সোমবার থেকে আহতেদের চিকিৎসায় নিয়োজিত রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক-চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন।

No comments

Powered by Blogger.