ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়- ভরসা এবার ঘ ইউনিট by হাসান ইমাম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা দুয়ারে। হাতে সময় আর মাত্র দুদিন। এবারের লড়াইটা একটু ভিন্ন রকমের—এটা ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা নিশ্চয় জানেন। ‘ঘ’ ইউনিটের পরীক্ষা আসলে বিভাগ পরিবর্তনের পরীক্ষা।


কারণ, এই ইউনিটে পরীক্ষা দেবে বিজ্ঞান, কলা বা মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাই অনেকে এই বিভাগের পরীক্ষাকে মনে করেন সবচেয়ে কঠিন। সেই কঠিন পরীক্ষাকে কীভাবে সহজ করা যায়, তারই পথ বাতলে দিচ্ছেন গত বছর ‘ঘ’ ইউনিটের তিন বিভাগের প্রথম স্থান অধিকারী তিন মেধাবী।
সাদিয়া ইসলাম ‘ঘ’ ইউনিটে বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম হয়েছিলেন গত বছর। তাই বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য তাঁর পরামর্শ এ রকম—‘তোমরা যারা বিজ্ঞান থেকে এসেছ, তাদের জন্য এই পরীক্ষাটা একটু আলাদা। কারণ, এখানে তোমাদের বাংলা ও ইংরেজির সঙ্গে বেশি পড়তে হয়েছে সাধারণ জ্ঞান। মনে রেখো, সাধারণ জ্ঞানে যেহেতু বেশি নম্বর, তাই ‘ঘ’ ইউনিটে চান্স পেতে এটা দারুণভাবে কাজে লাগাতে হবে। টেনশনকে বলে দাও গুডবাই। আত্মবিশ্বাস নিয়ে পরীক্ষা দাও। আর হলে সময়ের প্রতি খেয়াল রেখো। তোমার যে বিষয়টা বেশি পছন্দের, সেই বিষয়ের উত্তর আগে দিয়ো। আর উত্তরপত্রের বৃত্ত ভরাট করতে গিয়ে প্রশ্নের সিরিয়ালে যেন ওলট-পালট না হয়। কারণ, ভালো পরীক্ষা দিয়েও অনেকে বৃত্ত ভরাটে ভুল করায় বাদ পড়ে যায়। এটা খেয়াল রেখো।’
এ তো গেল বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের পরামর্শ।
মানবিক বা কলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য কেমন হবে সেই প্রস্তুতি? গত বছরের ভর্তি পরীক্ষায় কলা থেকে প্রথম হওয়া শেখ আনিসুর রহমান মনে করেন, এই দুদিনে নতুন করে পড়ার কিছু নেই। বরং মনটাকে ফুরফুরে রাখলে তাতেই বেশি লাভ। আনিস আরও জানান, কত পড়া বাদ আছে, সেদিকে না তাকিয়ে যা পড়েছ, তা-ই মনে রাখার চেষ্টা করো। বাসায় বসে নিজের প্রশ্নে দুটি মডেল টেস্ট দিতে পারো। পরীক্ষাটা যেহেতু এক ঘণ্টার, তাই নিজের মতো করে সময়টা ভাগ করে নিলে ভালো হয়। ভুল উত্তর দিয়ে বোকামি করার দরকার নেই। এই দুদিনে পুরোনো প্রশ্নপত্রে একবার করে চোখ বোলাতে পারো। পরীক্ষার দিনের সরঞ্জাম আগেই গুছিয়ে রাখো। হলে ঢুকে মনটাকে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারলে সেটাও হবে তোমার জন্য প্লাস পয়েন্ট।
বাণিজ্যের শিক্ষার্থীদের জন্য হাসিবুর রহমান জানান, ‘ঘ’ ইউনিটে যেহেতু আসন কম, তাই এখানে বাড়তি সতর্কতা দরকার। অনেকেই ইংরেজি নিয়ে বেশি ভয় পায়। তবে একটু খেয়াল রাখলেই দেখবে ইংরেজির প্রশ্নগুলো সহজই হয়। শুধু বুঝে নিয়ে উত্তর করবে। এখন চাপমুক্ত থাকো। পরীক্ষার দিন একটু আগেভাগে বেরিয়ে পড়ো। শেষ মুহূর্তে এসে কোনো দ্বিধা রাখবে না। মনে করবে, তুমি যা পড়েছ, সেটাই সঠিক। উত্তরপত্র মনোযোগ দিয়ে পূরণ করবে। হলের ভেতরে আশপাশে তাকানোর দরকার নেই। মনে রেখো, পরীক্ষার দিনের ওই একটি ঘণ্টাই তোমার জীবনকে বদলে দিতে যথেষ্ট।

No comments

Powered by Blogger.