অবৈধ ভিওআইপি-দায়ীদের উপযুক্ত বিচার হোক

অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের ঠেকাতে বিটিআরসি ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়মিত অভিযান চালিয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিলেও অনেকে এসব অভিযানের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।


কেননা, অবৈধ ভিওআইপির মাধ্যমে রাজস্ব আত্মসাতের অধিকাংশ অভিযোগ সরকারি মালিকানাধীন বিটিসিএল ও টেলিটকের বিরুদ্ধেই। আর দুটি প্রতিষ্ঠানই বিটিআরসির তত্ত্বাবধানে পরিচালিত। বিটিআরসির দায়িত্ব যেখানে অবৈধ ভিওআইপি নিয়ন্ত্রণ করা; সেখানে তাদেরই নিয়ন্ত্রণাধীন দুটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা চালিয়ে যাবেন_ তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। অবৈধ ভিওআইপি ঠেকানোর দায়িত্ব যাদের, সেই রক্ষকরা যদি ভক্ষক হয়, তাহলে তা বন্ধ হবে না। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে। কিন্তু ঘরের অপরাধীদের ধরার জন্য বিটিআরসির কোনো উদ্যোগ এ যাবৎ দেখা যায়নি । বিটিসিএল বা টেলিটক কর্তৃপক্ষের টনকও নড়েনি। আশার কথা, শেষ পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশন বিটিসিএলের ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করল। মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলেই শুধু তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব। আর এ ক্ষেত্রে দুদকের হাতে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ আছে বলে আশা করা যায়। দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানের ১৪ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করে কমিশন একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। আরও ভালো হতো, যদি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর বিটিআরসি, বিটিসিএল ও টেলিটক তদন্ত ও শাস্তির উদ্যোগ নিত। এই ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ_ তারা বিদেশি ফোনকল বাংলাদেশে ঢোকার পথে অবৈধ ক্যারিয়ারের মাধ্যমে ডাইভার্ট করেছেন। এতে প্রতিদিন বিপুল অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। অপরাধ শুধু এই নয়; অবৈধ কলগুলোর রেকর্ডও দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা রাখেননি। প্রকারান্তরে অবৈধ ভিওআইপির সব পথ উন্মুক্ত রেখে বিটিসিএলের কতিপয় কর্মী কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের সুযোগ করে দিয়েছেন। অবৈধ অর্থ থেকে দিনের পর দিন নিজেরাও লাভবান হয়েছেন। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলেও কোনো প্রতিকার হয়নি। আমরা আশা করব, দুদকের মামলার পর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো উদ্যোগী হবে। পাশাপাশি, তদন্ত ও প্রমাণ সাপেক্ষে অভিযুক্তদেরও বিচার নিশ্চিত হবে।

No comments

Powered by Blogger.