মরমন রমনির সামনে ইতিহাস গড়ার সুযোগ

নির্বাচনে বিজয়ী হলে মিট রমনি একটা ইতিহাস গড়বেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তিনিই হবেন প্রথম মরমন সম্প্রদায়ভুক্ত (খ্রিষ্টানদের শাখা সম্প্রদায়) প্রেসিডেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের খ্রিষ্টানধর্মাবলম্বীদের একটা বড় অংশ মরমনদের খ্রিষ্টান বলে মানতে রাজি নয়।


তাদের ব্যাপারে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভুল ধারণা। আশঙ্কা করা হয়েছিল, এবারের নির্বাচনী প্রচারণায় রমনির ধর্মীয় বিশ্বাস গুরুত্ব পাবে। কিন্তু সেই আশঙ্কা উবে গেছে, ভুল প্রমাণিত হয়েছে সংশয়বাদীদের ধারণা। রমনি কিংবা বারাক ওবামা কেউই নির্বাচনী প্রচারণায় তাঁদের ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে টানাহেঁচড়া করেননি।
১৮৩০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘দ্য চার্চ অব জিসাস ক্রাইস্ট অব লেটার-ডে সেইন্টস’ নামক একটি ধর্মীয় সংগঠন। এটি প্রতিষ্ঠা করেন জোসেফ স্মিথ নামের একজন ধর্মতাত্ত্বিক। অনুসারীরা তাঁকে ‘ঈশ্বরপ্রেরিত দূত’ মনে করেন। রমনি এই সংগঠনেরই গোঁড়া সদস্য। যুক্তরাষ্ট্রের ২ শতাংশ অর্থাৎ ৬০ লাখ মানুষ মরমন ধর্মবিশ্বাসী।
আর বারাক ওবামা প্রোটেস্ট্যান্ট। দুই দশক ধরে তিনি শিকাগোর ট্রিনিটি ইউনাইটেড চার্চ অব ক্রাইস্টের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। কিন্তু ২০০৮ সালে নির্বাচনী প্রচারণাকালে গির্জাটির সাবেক যাজক জেরেমিয়াহ রাইটের বিতর্কিত মন্তব্যের পর তিনি ট্রিনিটি ইউনাইটেড চার্চ অব ক্রাইস্টের ধর্মসভায় যোগ দেওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখেন।
এ বছরের শুরুতে ওবামা ক্ষমতাসীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে সমকামী বিয়েসহ সব ধরনের বৈবাহিক সাম্যের পক্ষে কথা বলেন। এতে রক্ষণশীল খ্রিষ্টান ও রোমান ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের কাছে তিনি সমালোচিত হন।
ওয়াশিংটনের জর্জ ম্যাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মবিষয়ক সহকারী অধ্যাপক জন টার্নার বলেন, ‘ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে এত কম আলোচনা হয়েছে—এমন নির্বাচনী প্রচারণা আমার জীবদ্দশায় দেখেছি বলে মনে পড়ে না। অথচ গত নির্বাচনেও ওবামা তাঁর ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে অনেক কথা খরচা করেছেন। কিন্তু এবার তিনি প্রায় নীরব। আর রমনি তো কিছু আবছা মন্তব্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকেছেন।’
এবারের নির্বাচন আরও একটি দিক দিয়ে ঐতিহাসিক। এই প্রথম দুই প্রার্থীর কেউই একই সঙ্গে শ্বেতাঙ্গ ও প্রোটেস্ট্যান্ট নন।
গত আগস্টে পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক জনমত জরিপে দেখা গেছে, প্রতি পাঁচজন মার্কিন নাগরিকের একজন মরমনবাদে অস্বস্তি বোধ করে। আর তিনজন করে ভিন্নমত পোষণ। এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.